আজ: সোমবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৪ইং, ১৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৯শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

০২ ডিসেম্বর ২০২৪, সোমবার |

kidarkar

ব্যাংক খাতের মন্দ ঋণ দিয়ে ২৪টি পদ্মা সেতু ও ১৪টি মেট্রোরেল করা যেত

শেয়ারবাজার ডেস্ক : ব্যাংক খাতে যে পরিমাণ মন্দ ঋণ তৈরি হয়েছে, তা দিয়ে ১৪টি মেট্রোরেল ও ২৪টি পদ্মা সেতু নির্মাণ সম্ভব ছিল। কারণ বিগত সরকারের আমলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দেশের ব্যাংক খাত। নামে-বেনামে ঋণ বের করা, বিদেশে অর্থপাচারসহ কপালে পিস্তল ঠেকিয়ে ব্যাংকের মালিকানা পরিবর্তনের মতো ঘটনাও ঘটেছে। ফলে ব্যাংক খাতের প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসন নেমে গেছে শূন্যের কোঠায়, এখন যার চড়া মূল্য দিচ্ছে ব্যাংকসহ পুরো দেশ।

গতকাল প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে তার তেজগাঁও কার্যালয়ে এই প্রতিবেদন হস্তান্তর করেন কমিটির প্রধান ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। এতে এই তথ্য উঠে এসেছে।

কমিটি বলেছে, দেশের ব্যাংক খাত ‘ব্ল্যাকহোলের’ মধ্যে ঢুকে গেছে। গত ১৫ বছরে অর্থনীতির বিভিন্ন খাতের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ব্যাংক খাত। মন্দ ও খেলাপি ঋণের পরিমাণ আকাশ ছুঁয়েছে।

প্রতিবেদনে ব্যাংক খাতে দুর্নীতি ও অনিয়মের জন্য ঋণ কেলেঙ্কারি, প্রতারণা, ভুয়া ঋণ ও ঋণের অপব্যবহারের বিভিন্ন ঘটনা চিহ্নিত করা হয়েছে। এ ছাড়া রাষ্ট্রীয় মদদে ব্যাংক দখলে সহায়তা করা হয়েছে। ব্যাংক খাত থেকে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে যে অর্থ লুট করা হয়েছে, তার বড় অংশই পাচার হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

ব্যাংক খাতে গত জুন শেষে খেলাপি ঋণ ছিল ২ লাখ ১১ হাজার ৩৯১ কোটি টাকা। একই সময়ে পুনঃ তফসিল ও পুনর্গঠন করা ঋণ ছিল ২ লাখ ৭২ হাজার ৮৫৬ কোটি টাকা। অবলোপন করা ঋণের স্থিতি ছিল ৭৫ হাজার ৩৮৯ কোটি টাকা, স্পেশাল মেনশন হিসেবে ছিল ৩৯ হাজার ২০৯ কোটি টাকা, আদালতের স্থগিতাদেশে খেলাপিমুক্ত ছিল ৭৬ হাজার ১৮৫ কোটি টাকার ঋণ। ফলে জুন শেষে মোট মন্দ ঋণ ছিল ৬ লাখ ৭৫ হাজার ৩০ কোটি টাকা। এই অর্থ দিয়ে ১৪টি মেট্রোরেল ও ২৪টি পদ্মা সেতু করা যেত।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘আমরা দেশের আর্থিক খাতের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করছি। সামনে খেলাপি ঋণ ২৫ থেকে ৩০ শতাংশে পৌঁছে যাবে, এখন যা সাড়ে ১২ শতাংশ। আগামী মাসে তা ১৫ শতাংশ, এরপর ১৭ শতাংশ হয়ে ধীরে ধীরে ৩০ শতাংশে পৌঁছে যেতে পারে। এই খেলাপি আগেই হয়ে আছে। এখন হিসাবে তা আসবে। এটা কমিয়ে আনতে আমরা কাজ শুরু করেছি।’

তিনি বলেন, সামনে খেলাপি ঋণ যেটা দাঁড়াবে তার অর্ধেক বা আড়াই লাখ কোটি টাকা হবে এস আলম, সাইফুজ্জামানসহ (সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী) বড় কয়েকটি গ্রুপ ও ব্যবসায়ীর। ২০১৭ সালের পরে এসব ঋণ নেওয়া হয়। ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে তা পাচার করা হয়।

শ্বেতপত্র হস্তান্তরকালে আরও উপস্থিত ছিলেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ, মুখ্য সচিব সিরাজ উদ্দিন সাথী, সিনিয়র সচিব লামিয়া মোর্শেদ প্রমুখ।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.