আজ: রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪ইং, ৭ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৮ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

২১ ডিসেম্বর ২০২৪, শনিবার |

kidarkar

সিসিবিএলের কার্যক্রমে ডিএসইর আপত্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক : শেয়ারবাজারের লেনদেন নিষ্পত্তির প্রক্রিয়া ঝুঁকিমুক্ত ও দ্রুত সম্পন্ন করার লক্ষ্যে ২০১৯ সালে গঠিত হয় নতুন কোম্পানি সেন্ট্রাল কাউন্টারপার্টি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিসিবিএল)।

সিসিবিএলের অন্যতম শেয়ারধারী হলো ডিএসই। প্রতিষ্ঠানটির ৪৫ শতাংশ শেয়ারের মালিকানা ডিএসইর।
কোম্পানিটির পর্ষদেও রয়েছে ডিএসইর দুজন পরিচালক।

সিসিবিএলের শুরুটা ২০১৯ সালে হলেও এখনো কার্যক্রমে আসতে পারিনি। তাতে ক্ষোভ জানিয়েছে ডিএসই। সংস্থাটি এ বিষয়ে তাদের এক চিঠিতে বলেছে, দীর্ঘ কয়েক বছরেও কার্যক্রম শুরু করতে না পারায় প্রতিষ্ঠানটিবছরর সক্ষমতা ও স্বচ্ছতা নিয়ে বাজারে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

ডিএসইর এই অভিযোগের বিষয়ে সিবিবিএল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির পক্ষ থেকে সিসিবিএলে স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগেই ৫৩৫ দিন সময় লেগেছে। পর্ষদ গঠন চূড়ান্ত না হওয়ায় কোম্পানির সার্বিক কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া কোম্পানিটির শেয়ারধারী হিসেবে ডিএসই, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) ও সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিডিবিএল) থেকে পরিচালক নিয়োগ না দেওয়ায় ১১৮ দিন কোম্পানিটি কোনো পর্ষদ সভা করতে পারেনি। এটিও কোম্পানির কার্যক্রম শুরু করার ক্ষেত্রে মাত্রাতিরিক্ত বিলম্বের অন্যতম কারণ।

সম্প্রতি সিসিবিএল লেনদেন নিষ্পত্তির জন্য সেন্ট্রাল কাউন্টারপার্টি বা সিসিপি প্রযুক্তি স্থাপনে ভারতের টাটা কনসালট্যান্সির সঙ্গে চুক্তির উদ্যোগ নেয়। সেটি জেনেই ডিএসই এ–সংক্রান্ত কেনাকাটার চুক্তি বন্ধের অনুরোধ জানিয়েছে।এ কারণে সিসিবিএলের কার্যক্রম নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

এ বিষয়ে ডিএসইর চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, শেয়ারবাজারে বর্তমানে ডিএসইও লেনদেন নিষ্পত্তিতে কাজ করছে। লেনদেন নিষ্পত্তির আধুনিক নানা যন্ত্রপাতিও রয়েছে আমাদের। এ অবস্থায় নতুন করে বিপুল অর্থ খরচ করে নতুন প্রযুক্তি না কিনে দুই সংস্থা মিলে যৌথভাবে এ ক্ষেত্রে কাজ করতে পারে কি না, এ বিষয়ে আমরা সিসিবিএলকে অনুরোধ জানিয়েছি। তাই পুরো ক্রয়প্রক্রিয়াটি রিভিউ করার কথা বলেছি।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, সিসিপি প্রযুক্তি কেনা থেমে গেলে সিসিবিএলের পুরো কর্মকাণ্ডই বাধাগ্রস্ত হবে। কারণ, এ ধরনের প্রযুক্তি ছাড়া কোম্পানিটি কার্যক্রমে যেতে পারবে না। ডিএসইর আপত্তিতে এখন কোম্পানিটির ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

জানা যায়, গত বুধবার সিসিবিএলের পরিচালনা পর্ষদের সভায় ডিএসইর পক্ষ থেকে প্রতিষ্ঠানটি সম্পর্কে তোলা বিভিন্ন অভিযোগের বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। সেখানে ডিএসইর প্রতিটি আপত্তি ও অভিযোগের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট জবাবও অনুমোদিত হয়। এরপর সিসিবিএলের পক্ষ থেকে ডিএসইকে লিখিত জবাব দেওয়া হয়েছে।

সিসিবিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ফরহাদ আহমেদ সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ডিএসই কর্তৃপক্ষ সিসিবিএলের কিছু বিষয়ে তাদের আপত্তি ও অভিযোগ তুলেছে। যদিও আমাদের পর্ষদে ডিএসইর দুজন প্রতিনিধি রয়েছেন। যেহেতু শেয়ারধারী হিসেবে ডিএসই কিছু বিষয়ে তাদের আপত্তি জানিয়েছে, সেহেতু আমরা সেগুলোর জবাব দিয়েছি। আশা করছি, আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টির অবসান হবে।

পুঁজিবাজার বিশ্লেষকেরা বলছেন, সিসিবিএলের কর্মকাণ্ড নিয়ে ডিএসইর পক্ষ থেকে যেসব আপত্তি তোলা হয়েছে, সেগুলো আলোচনার মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা দরকার। এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনে নিয়ন্ত্রক সংস্থার মধ্যস্থতায়ও এ বিষয়টির সুরাহা হতে পারে। তবে কোনোভাবেই যাতে সিসিবিএলের কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত না হয়, সেটি নিশ্চিত করতে হবে। কারণ, সিসিবিএল চালু হলে তাতে শেয়ারবাজারে লেনদেন নিষ্পত্তির ঝুঁকি যেমন দূর হবে, তেমনি অদূর ভবিষ্যতে লেনদেন নিষ্পত্তির সময়ও কমবে।

সিসিবিএলের মালিকানায় রয়েছে ডিএসই, সিএসই, সিডিবিএল ও ১২টি ব্যাংক। এর মধ্যে প্রতিষ্ঠানটির ৪৫ শতাংশ শেয়ারের মালিকানা ডিএসইর। ২০ শতাংশ করে ৪০ শতাংশ মালিকানা সিএসই ও সিডিবিএলের হাতে। বাকি ১৫ শতাংশ মালিকানা ১২টি ব্যাংকের।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.