পাকিস্তানি জাহাজ, নিয়ে এলো চিনি-গ্লাস তৈরির কাঁচামাল
শেয়ারবাজার ডেস্ক : চট্টগ্রাম বন্দর বার্থে ভিড়েছে পাকিস্তানের করাচি থেকে পণ্যবাহী কনটেইনার নিয়ে আসা জাহাজ ‘এমভি ইউয়ান জিয়াং ফা ঝং’। রোববার (২২ ডিসেম্বর) বিকেল তিনটার দিকে জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কন্টেইনার টার্মিনালের (এনসিটি) দুই নম্বর বার্থে ভিড়ে। বন্দরের সচিব মো. ওমর ফারুক বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন।
চট্টগ্রাম বন্দর সূত্রে জানা গেছে, জাহাজটিতে সম্ভাব্য ৮২৫ টিইইউএস (২০ ফুট একক) কনটেইনার রয়েছে। দেশের ইতিহাসে দ্বিতীয়বারের মতো দুবাই থেকে পাকিস্তান হয়ে সরাসরি চট্টগ্রাম বন্দরে এলো পণ্যবাহী কোনো জাহাজ।
এর আগে ‘এমভি ইউয়ান জিয়ান ফা ঝং’ নামের জাহাজটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের জেবেল আলী বন্দর থেকে করাচি হয়ে গত ১১ নভেম্বর চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছে। এর মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার পর প্রথমবার করাচি বন্দর থেকে চট্টগ্রামে সরাসরি বাণিজ্যিক জাহাজ আসে। সেই জাহাজে আলু, পেঁয়াজ ও শিল্পের কাঁচামাল ছিল বলে জানানো হয়। বিগত সময়ে পাকিস্তানের কনটেইনার পণ্য তৃতীয় দেশ হয়ে চট্টগ্রামে আনা হতো।
এবার পাকিস্তান থেকে আসা জাহাজটিতে চিনি, আখের গুড়, ডলোমাইট, সোডা অ্যাশ, থ্রি-পিস, খেজুর ছাড়াও নানা ধরনের পণ্য এসেছে। এসব পণ্যের ৮৬ শতাংশই পাকিস্তান থেকে এসেছে বলে জানিয়েছেন জাহাজ পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি রয়েছে পরিশোধিত চিনি ও খনিজ পদার্থ ডলোমাইট।
প্রথমবার দুবাইভিত্তিক কন্টেইনার ভ্যাসেল অপারেটর ‘ফিডার লাইন ডিএমসিসি’ দুবাই-করাচি-চট্টগ্রাম রুটের নতুন এ সার্ভিস চালু করেছে। অপারেটরের পক্ষে লোকাল এজেন্ট হিসেবে কাজ করছে কর্ণফুলী লিমিটেডের সহযোগী প্রতিষ্ঠান রিজেন্সা লাইন্স লিমিটেড।
রিজেন্সা লাইন্স লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক আনিস উদ দৌলা বলেন, জেবেল আলী বন্দর থেকে ১২৬ টিইইউএস এবং করাচি থেকে ৬৯৯ টিইইউএস কনটেইনার পণ্য নিয়ে জাহাজটি সরাসরি চট্টগ্রাম বন্দরে আসে। এতে পণ্য আমদানিতে সময় সাশ্রয় হয়েছে। আমদানিকারকরা লাভবান হচ্ছেন বলে মনে করেন তিনি।
এর আগে এই জাহাজটিই দুবাই থেকে পাকিস্তান হয়ে ৩৭০ টিইইউএস কনটেইনার নিয়ে গত ১১ নভেম্বর প্রথমবারের মতো চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছে। সে সময় জাহাজটির বিভিন্ন কনটেইনারে সোডা অ্যাশ, ডলোমাইট চুনাপাথর, ম্যাগনেশিয়াম ভাঙা কাচ, কাঁচামাল কাপড়, রং, গাড়ির যন্ত্রাংশ, পেঁয়াজ, আলু, খেজুর, জিপসাম, পুরোনো লোহার টুকরা, মার্বেল ব্লক, কপার ওয়্যার, রেজিন, হুইস্কি, ভদকা ও ওয়াইন ছিল। এবার একই জাহাজ করাচি থেকে চট্টগ্রামে এসেছে দ্বিগুণেরও বেশি পণ্য নিয়ে।
পাকিস্তান থেকে এবার ২৮৫ কনটেইনারে প্রায় সাড়ে সাত হাজার টন চিনি আমদানি হয়েছে। এসব চিনি এনেছে দেশের খাদ্যসামগ্রী উৎপাদনকারী বৃহৎ শিল্পগ্রুপ প্রাণ-আরএফএল, শেহজাদ ফুড প্রোডাক্টস, সেভয় আইসক্রিম এবং ব্রডওয়ে ইন্টারন্যাশনাল।
কাঁচশিল্পে ব্যবহারের জন্য চিনির পর পাকিস্তান থেকে সবচেয়ে বেশি আনা হয়েছে ডলোমাইট। এবার ১৭১ কনটেইনারে ডলোমাইট আমদানি হয়েছে। এই কাঁচামাল এনেছে নাসির ফ্লোট গ্লাস ও আকিজ গ্লাস ইন্ডাস্ট্রিজ। পাকিস্তান থেকে আমদানি হওয়া আরেকটি পণ্য হলো সোডা অ্যাশ। এই পণ্য আমদানি হয়েছে ১৩৮ কনটেইনারে। শিল্পে ব্যবহারের এই কাঁচামাল এনেছে নাসির ফ্লোট গ্লাসসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। শতভাগ রপ্তানিমুখী পোশাক কারখানাগুলো ৪৬টি কনটেইনারে কাপড়ের রোল আমদানি করেছে।