আজ: বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪ইং, ১০ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২২শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, মঙ্গলবার |

kidarkar

সংবাদমাধ্যমে ‘অজ্ঞাত সিআইসি কর্মকর্তাদের’ উদ্ধৃতি দিয়ে প্রকাশিত কর ফাঁকির অভিযোগটি ভিত্তিহীন ও দায়িত্বহীন – সামিট গ্রুপ

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের সেন্ট্রাল ইনেলিজেন্স সেল (“সিআইসি”) এর অজ্ঞাত কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত কিছু সংবাদ প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে যে, সামিট গ্রুপের বিরুদ্ধে কর ফাঁকির অভিযোগে তদন্ত চলছে। এই ভিত্তিহীন অভিযোগের বিষয়ে সামিট গ্রুপ প্রতিবাদ জানাচ্ছে।

সামিট বলছে, “গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে যেসব অভিযোগ করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও দায়িত্বহীন। সামিট গ্রুপ সবসময় দেশের আইনের প্রতি সম্মান রেখে এবং সম্পূর্ণ স্বচ্ছতার সাথে ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করে চলেছে। সামিট গ্রুপকে কর ফাঁকির অভিযোগের বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) অথবা সিআইসির পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত অফিশিয়ালি কোনো কিছু জানানো না হলেও অজ্ঞাত কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে সামিটের বিরুদ্ধে অভিযোগমূলক খবর প্রকাশ করা হচ্ছে।

বাংলাদেশের গণমাধ্যমে অজ্ঞাত একজন কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, সামিট গ্রুপ বাংলাদেশে কর ফাঁকির সাথে জড়িত এবং সিআইসি ‘খুঁজে পেয়েছে’ যে, সামিটকে কর  অব্যাহতির যেসব সুবিধা প্রদান করা হয়েছে তা বৈষম্যমূলক কারণ, অন্যান্য বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলো এ ধরণের সুবিধা পায়নি।

বাংলাদেশভিত্তিক সামিট কর্পোরেশন লিমিটেড থেকে তার নিয়ন্ত্রণকারী কোম্পানি, সামিট পাওয়ার ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড যা সিঙ্গাপুরে নিবন্ধিত,  লভ্যাংশ পাঠানোর সময় সামিট করপোরেশন উৎসে কর কর্তনে ব্যর্থ হয়েছে বলে গণমাধ্যমে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। উল্লেখ্য, সামিটের সব বিদ্যুৎকেন্দ্র ও অন্যান্য অবকাঠামো বাংলাদেশে অবস্থিত এবং এর মালিকানা ও পরিচালনা করে সামিট কর্পোরেশন লিমিটেড।

“সামিট কর্পোরেশন এবং সামিট পাওয়ার ইন্টারন্যাশনালের হিসাবগুলো স্বনামধন্য আন্তর্জাতিক অডিটর দ্বারা নিরীক্ষিত। এ ছাড়া সামিট খ্যাতনামা বাংলাদেশী আইনি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান যেমন মওদুদ আহমেদ অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস ও ব্যারিস্টার রোকনুদ্দিন অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস এর কাছ থেকে কর সংক্রান্ত পরামর্শ নিয়ে কর প্রদান করছে। সামিট গ্রুপের বিরুদ্ধে কর ফাঁকি দেওয়ার কোনো প্রশ্ন তোলা অবান্তর।” সামিট আরও বলছে, ‘বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন, ২০১০’ এর অধীনে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি শিল্পখাতকে কর অব্যাহতি সুবিধা দেওয়া হয়। এই আইনের অধীনে এখন পর্যন্ত ১০৪টি প্রকল্প অন্তর্ভুক্ত আছে, এর মধ্যে সামিটের মালিকানাধীন প্রকল্প মাত্র তিনটি।  

“একটি দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠান হিসেবে সামিট গ্রুপ বাংলাদেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সরবরাহের ক্ষেত্রে একটি সফল ট্র্যাক রেকর্ড রেখেছে। সামিট গ্রুপ বাংলাদেশে (সামিট করপোরেশন) ও সিঙ্গাপুরে (সামিট পাওয়ার ইন্টারন্যাশনাল), সর্বদা উভয় দেশের আইনকে সম্মান এবং অনুসরণ করে পরিচালিত হচ্ছে।” সামিট জানিয়েছে, “আমরা বাংলাদেশের উন্নয়ন এবং সমৃদ্ধিতে প্রয়োজনীয় অবদান রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বাংলাদেশে আমাদের কার্যক্রম সবসময় দেশের আইন অনুসরণ করেছে। সততা এবং করপোরেট সুশাসনের সর্বোচ্চ মান বজায় রাখতে পেরে আমরা গর্বিত।”

“সামিট গ্রুপ বাংলাদেশে বিপুল পরিমাণ বিদেশী সরাসরি বিনিয়োগ এনেছে এবং দেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি অবকাঠামো উন্নয়নখাতে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে। আমরা গণমাধ্যম ও সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ করছি যে তাঁরা গুরুত্বপূর্ণ মতামত প্রদানের ক্ষেত্রে আরও দায়িত্বশীল হোন যেন আইন তাঁর নিজস্ব গতি অনুসরণ করতে পারে। আমাদের দায়িত্বশীলতা দীর্ঘমেয়াদে বাংলাদেশের উন্নয়নে প্রয়োজনীয় আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের আস্থা অক্ষুন্ন রাখতে সাহায্য করবে।”

সামিট পাওয়ার ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড সম্পর্কেঃ সামিট পাওয়ার ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড (এসপিআইএল) বাংলাদেশের বৃহত্তম স্বতন্ত্র বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী (আইপিপি), যা দেশের বেসরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদন খাতের মোট ইনস্টলড ক্যাপাসিটির ১৭% ও দেশের মোট ইনস্টলড ক্যাপাসিটির ৭% সরবরাহ করে। সামিট মোট ১৮টি বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং বাংলাদেশের দ্বিতীয় ফ্লোটিং স্টোরেজ অ্যান্ড রিগ্যাসিফিকেশন ইউনিট (এফএসআরইউ)-এর মালিকানা ও পরিচালনার দায়িত্বে আছে, যা দৈনিক ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি পুনরায় তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসে রূপান্তরিত করতে সক্ষম।

এসপিআইএল একটি সিঙ্গাপুর নিবন্ধিত বেসরকারি কোম্পানি, যেখানে মুহাম্মদ আজিজ খানের পরিবারের ৭৮% মালিকানা আছে। ২০১৬ সালে এসপিআইএল বাংলাদেশে নিবন্ধিত সামিট করপোরেশন লিমিটেড (এসসিএল) অধিগ্রহণ করে, যা বিশ্বব্যাংকের বেসরকারি খাত বিষয়ক শাখা ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশন (আইএফসি) দ্বারা আর্থিকভাবে সমর্থিত ছিল। সামিট করপোরেশন বাংলাদেশে বিভিন্ন অবকাঠামো সম্পদের মালিকানা আছে। ২০১৯ সালে জাপানের বৃহত্তম পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি জেরা, এসপিআইএল-এর ২২% অংশীদারিত্ব গ্রহণ করে এবং বর্তমানে এটি এসপিএল-এর দ্বিতীয় বৃহত্তম অংশীদার।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.