আজ: সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫ইং, ২৯শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ই রজব, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

১৩ জানুয়ারী ২০২৫, সোমবার |

kidarkar

লস অ্যাঞ্জেলেসে দাবানলে নিহত বেড়ে ২৪, তীব্র বাতাসের আশঙ্কা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের লস অ্যাঞ্জেলেসে ভয়াবহ দাবানলে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৪ জনে দাঁড়িয়েছে। এখনও আগুনে পুড়ছে নতুন নতুন এলাকা। আগুন নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খাচ্ছেন দমকল কর্মীরা। এরই মধ্যে তীব্র বাতাসের আশঙ্কার কথা জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

আজ সোমবার (১৩ জানুয়ারি) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ক্যালিফোর্নিয়ার আবহাওয়া পূর্বাভাসকারীরা সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন যে, লস অ্যাঞ্জেলেসের আশেপাশে আগুনের সূত্রপাতকারী প্রচণ্ড বাতাস এই সপ্তাহে আবার তীব্র হতে পারে। বর্তমানে দমকল কর্মীরা তিনটি দাবানল নিয়ন্ত্রণে দৌড়ঝাঁপের মধ্যে রয়েছে।

কর্মকর্তারা সতর্ক করে বলেছেন, সপ্তাহের শেষ পর্যন্ত অপেক্ষাকৃত কম বাতাস থাকলেও শুষ্ক সান্তা আনা বাতাস রোববার রাত থেকে বুধবার পর্যন্ত আবার তীব্র হবে। যার গতিবেগ ঘণ্টায় ৬০ মাইল (৯৬ কি.মি.) পর্যন্ত পৌঁছাবে।

বাতাসের তীব্রতা বৃদ্ধির আগে প্যালিসেডস এবং ইটনের আগুনের ছড়িয়ে পড়া রোধে কিছু অগ্রগতি হয়েছে। স্থানীয় অগ্নিনির্বাপক কর্মীদের সঙ্গে আটটি রাজ্যের পাশাপাশি কানাডা এবং মেক্সিকোর কর্মীরা সহায়তা করছেন।

গতকাল রোববার (১২ জানুয়ারি) লস অ্যাঞ্জেলেসের কাউন্টির মেডিকেল পরীক্ষক মৃতের সংখ্যা ২৪ জনের কথা জানালেও কর্মকর্তারা আগে বলেছিলেন কমপক্ষে আরও ১৬ জন নিখোঁজ রয়েছেন।

ইটনের অগ্নিকাণ্ডে ১৬ জন নিহতের সন্ধান পাওয়া গেছে, আর প্যালিসেডস এলাকায় আটজন নিহত হয়েছেন।

এখন লস অ্যাঞ্জেলেসের চারপাশে তিনটি দাবানল জ্বলছে। সবচেয়ে বড় আগুন হলো প্যালিসেডসের, যা এখন পর্যন্ত ২৩ হাজার একরেরও বেশি জায়গা জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে এবং ১১ শতাংশ নিয়ন্ত্রণে এসেছে।

ইটনের আগুন দ্বিতীয় বৃহত্তম এবং এটি ১৪ হাজার একরেরও বেশি জায়গা পুড়িয়ে ফেলেছে। এটি ২৭ শতাংশ নিয়ন্ত্রণে এসেছে।

হার্স্টের আগুন ৭৯৯ একর জায়গায় ছড়িয়েছে এবং প্রায় সম্পূর্ণরূপে নিয়ন্ত্রণে এসেছে।

যদিও কর্মীরা সবচেয়ে বড় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছে, কর্তৃপক্ষ সতর্ক করেছে আসন্ন বাতাসের ঘটনা “সম্ভাব্য বিপর্যয়কর বাতাসের পরিস্থিতি” তৈরি করতে পারে। যার ফলে পুরো লস অ্যাঞ্জেলেস কাউন্টি আগুনের ঝুঁকিতে রয়েছে।

পাসাডেনার ফায়ার চিফ চ্যাড অগাস্টিন বিবিসিকে বলেছেন, “দুর্ভাগ্যবশত, আমরা আবারও লাল সতর্ক অবস্থার দিকে ফিরে যাচ্ছি, যেখানে এখন থেকে বুধবার পর্যন্ত সম্ভাব্য ভয়াবহ বাতাসের পরিস্থিতি থাকবে, আর সর্বোচ্চ বাতাসের গতি মঙ্গলবারে হতে পারে।”

চ্যাড অগাস্টিন আরও বলেন, “যদিও আমরা কিছু অগ্রগতি অর্জন করেছি, তবুও এখনও শেষের কাছাকাছি আসিনি।”

লস অ্যাঞ্জেলেস শহরের ফায়ার চিফ ক্রিস্টিন ক্রাউলি অনুরোধ করেছেন, যারা উচ্ছেদ অঞ্চলের কাছাকাছি রয়েছেন তারা যেন নির্দেশ পেলে দ্রুত এলাকা ছাড়ার প্রস্তুতি নেন এবং ক্রুদের কাজে বিঘ্ন না ঘটাতে রাস্তায় চলাচল যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলেন।

এদিকে, গতকাল রোববার (১২ জানুয়ারি) নতুন নতুন আগুন ছড়িয়ে পড়তে থাকে, যা সান ফার্নান্দো ভ্যালি এবং নাসার জেট প্রপালশন ল্যাবরেটরির (জেপিএল) আশেপাশের কমিউনিটিগুলোকে হুমকির মুখে ফেলে।

রোববার অ্যানজেলেস ন্যাশনাল ফরেস্টে নতুন আগুন দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন দমকল কর্মীরা।

বাধ্যতামূলক উচ্ছেদ অঞ্চলে লুটপাটের অভিযোগে কমপক্ষে ২৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। উচ্ছেদকারীদের বাড়িঘর থেকে চুরি করার জন্য অগ্নিনির্বাপক কর্মীর ছদ্মবেশে দুই ব্যক্তি ধরা পড়েছে।

লস অ্যাঞ্জেলেস কাউন্টি শেরিফ রবার্ট লুনা রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এলাকায় ইতোমধ্যেই দায়িত্বে থাকা ৪০০ জনকে আরও শক্তিশালী করার জন্য আরও ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনের অনুরোধ করেছেন তিনি। ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসম ঘোষণা করেছেন, ন্যাশনাল গার্ডের অতিরিক্ত এক হাজার সদস্য মোতায়েনের পরিকল্পনা করা হয়েছে।

শেরিফ লুনা বলেছেন, দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়া অঞ্চলে এখন ১৪ হাজার অগ্নিনির্বাপক কর্মী রয়েছেন, যাদের সহায়তায় ৮৪টি বিমান এবং এক হাজার ৩৫৪টি অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র কাজ করছে।

স্থানান্তরের সংখ্যা কমে গেছে। প্রায় এক লাখ ৫ হাজার বাসিন্দা এখনও বাধ্যতামূলক স্থানান্তরের আদেশের অধীনে এবং ৮৭ হাজার জনকে স্থানান্তরের সতর্কতার অধীনে রাখা হয়েছে। দাবানলের কারণ এখনও জানা যায়নি।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.