আজ: শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫ইং, ১লা চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৪ই রমজান, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

১৪ মার্চ ২০২৫, শুক্রবার |

kidarkar

সংক্ষিপ্ত সংস্কার হলে নির্বাচন ডিসেম্বরে, বৃহত্তর হলে আগামী জুনে: প্রধান উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক: স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, রাজনৈতিক দলগুলো ‘সংক্ষিপ্ত সংস্কার প্যাকেজে’ সম্মত হলে নির্বাচন ডিসেম্বরে হতে পারে, তবে ‘বৃহত্তর সংস্কার প্যাকেজ’ গ্রহণ করলে আগামী বছরের জুনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

শুক্রবার (১৪ মার্চ) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে তার কার্যালয়ে ঢাকায় সফররত জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস সাক্ষাতে এলে আলোচনাকালে তিনি এ কথা বলেন।

এমন গুরুত্বপূর্ণ সময়ে বাংলাদেশ সফরের জন্য জাতিসংঘ মহাসচিবকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আপনার আসার সময়টি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আপনার এ সফর শুধু রোহিঙ্গাদের জন্যই নয়, বাংলাদেশের জন্যও যথাসময়ে হয়েছে।’

প্রধান উপদেষ্টা গুতেরেসকে সংস্কার প্রক্রিয়ার অগ্রগতি সম্পর্কে অবহিত করে বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের গঠিত ছয়টি সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনের বিষয়ে এরই মধ্যে ১০টি রাজনৈতিক দল তাদের প্রতিক্রিয়া জমা দিয়েছে।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, একবার রাজনৈতিক দলগুলো সংস্কার কমিশনের সুপারিশগুলোর বিষয়ে সম্মত হলে তারা জুলাই চার্টারে সই করবে, যা রাজনৈতিক, বিচারিক, নির্বাচন, প্রশাসনিক, দুর্নীতি দমন ও পুলিশ সংস্কারের জন্য একটি নীলনকশা হবে।

রোহিঙ্গাদের সম্মানজনক প্রত্যাবর্তন এবং তাদের জন্য যথেষ্ট খাদ্য ও মানবিক সহায়তা সংগ্রহে জাতিসংঘ মহাসচিবের সহায়তা কামনা করে তিনি বলেন, ‌‘আমরা রোহিঙ্গাদের দুর্দশার বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির চেষ্টা করছি। বিশ্বকে জানতে হবে তারা কতটা কষ্ট ভোগ করছে। এক ধরনের হতাশা সৃষ্টি হচ্ছে।

এসময় জাতিসংঘের মহাসচিব রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের জন্য তার সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা ও রোহিঙ্গাদের সহায়তায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আরও সক্রিয় করার চেষ্টা করবেন বলে আশ্বস্ত করেন।

গুতেরেস বাংলাদেশ শান্তিরক্ষী বাহিনীর অবদানকে স্বীকৃতি দিয়ে বলেন, তারা বিশ্বের বিভিন্ন সংকটপূর্ণ অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

অধ্যাপক ইউনূসও বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের প্রশংসা করে বলেন, ‘এ মিশনে অংশগ্রহণের মাধ্যমে আমাদের সামরিক বাহিনী বিশেষ অভিজ্ঞতা অর্জন করছে। এসব মিশন আমাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ।’

বৈঠকে ভূ-রাজনীতি, সার্কের বর্তমান অবস্থা এবং বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্কিত বিষয়গুলোও আলোচনা হয়। অধ্যাপক ইউনূস সার্ককে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য তার প্রচেষ্টার কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াতে বাংলাদেশ আসিয়ানের সদস্য হতে চায়।

জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনার ভলকার তুর্কের প্রশংসা করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, যিনি জাতিসংঘের তদন্ত প্রতিবেদনে শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য মানবতাবিরোধী অপরাধের প্রমাণ তুলে ধরেন। তিনি দুর্দান্ত কাজ করেছেন।

বৈঠকে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন, প্রধান উপদেষ্টার উচ্চ প্রতিনিধি ড. খলিলুর রহমান, সিনিয়র সচিব লামিয়া মোরশেদ, জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল রবাব ফাতেমা এবং জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক গুইন লুইস উপস্থিত ছিলেন।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.