বিএসইসিতে বড় রদবদলের ইঙ্গিত, বিদায় নিতে পারেন দুর্নীতিতে অভিযুক্তরা!

নিজস্ব প্রতিবেদক : শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)-তে বড় পরিবর্তনের আভাস মিলেছে। সংস্থাটির অভ্যন্তরীণ বিশৃঙ্খলা ও দুর্নীতির অভিযোগে জড়িয়ে পড়া কর্মকর্তাদের বিদায় নিতে হতে পারে। শেয়ারবাজারের শৃঙ্খলা ফেরাতে এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থার কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করতে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে ১৯ জন নতুন কর্মকর্তাকে নিয়োগ দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। বিএসইসি মনে করছে, শুধু নিজেদের কর্মকর্তাদের ওপর নিরঙ্কুশ নির্ভরশীলতা বজায় রাখলে দুর্নীতি ও অনিয়ম বন্ধ করা সম্ভব নয়। তাই কমিশনের স্বচ্ছতা ও গোপনীয়তা রক্ষার স্বার্থে বাইরের কর্মকর্তাদের নিয়োগের এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে উল্লেখ করেছেন, কমিশনের ভেতরকার অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার কারণে শেয়ারবাজার কারসাজির শিকার হয়েছে। তিনি আরও জানান, বিএসইসির কিছু কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শেয়ারবাজার লুটপাটে সহযোগিতা করার গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। এর মধ্যে সাবেক নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমানকে অনিয়মের কারণে অবসরে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া, সাবেক নির্বাহী পরিচালক মাহবুবুল আলম ও রেজাউল করিম, পরিচালক শেখ মাহবুব-উর-রহমান, অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ মাহমুদুল হক, এস কে মো. লুৎফুর কবির এবং যুগ্ম পরিচালক মো. রশিদুল আলমের বিরুদ্ধে শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, তারা অবৈধ সম্পদ গড়েছেন এবং বিভিন্নভাবে বাজার কারসাজির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, জুলাই অভ্যুত্থানের পর বিএসইসি একটি বিশেষজ্ঞ অনুসন্ধান ও তদন্ত কমিটি গঠন করে, যা শেয়ারবাজারে সংঘটিত অনিয়ম ও কারসাজির তথ্য উন্মোচন করে। তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, কিছু কর্মকর্তা ও কর্মচারী ইচ্ছাকৃতভাবে বাজারকে অস্থিতিশীল করেছেন এবং বিভিন্ন সিন্ডিকেটকে সহায়তা করেছেন। এমনকি, কিছু ক্ষেত্রে সাবেক চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের সংশ্লিষ্টতারও তথ্য উঠে এসেছে। এই তদন্তের পর অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করা হয়। তবে নোটিশ জারির পর থেকেই তারা কমিশনে অস্থিরতা তৈরির অপচেষ্টা চালাচ্ছেন।
কমিশন মনে করছে, শেয়ারবাজার থেকে দুর্নীতি ও সিন্ডিকেট নির্মূল করতে হলে প্রশাসনিক শুদ্ধি অভিযান চালানো ছাড়া আর কোনো পথ খোলা নেই। তাই বিএসইসি অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে তিনজন নির্বাহী পরিচালক, তিনজন পরিচালক, একজন কমিশন সচিব এবং ১২ জন যুগ্ম বা অতিরিক্ত পরিচালক পর্যায়ের কর্মকর্তাকে কমিশনে পদায়নের অনুরোধ করেছে। এতে বোঝা যাচ্ছে, বড় ধরনের রদবদলের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে বিএসইসি, যেখানে দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের বিদায় একপ্রকার নিশ্চিত।
শেয়ারবাজারে আস্থার সংকট কাটাতে বিএসইসির এই উদ্যোগ কতটা কার্যকর হবে, সেটি নিয়ে বাজার সংশ্লিষ্টরা অপেক্ষায় রয়েছেন। তবে প্রশাসনিক এ পরিবর্তন বাস্তবায়ন হলে শেয়ারবাজারে স্থিতিশীলতা ফিরে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।
আমা
শেয়ার বাজার থেকে দূর্নীতি অনিয়ম দূর করূন। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করূন এবং সৎ লোকদের নিয়োগ দিন।
শেয়ার বাজার থেকে দূর্নীতি অনিয়ম দূর করূন। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করূন এবং সৎ লোকদের নিয়োগ দিন।