শেয়ারবাজার জুনে চাঙ্গা হওয়ার সম্ভাবনা
নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশে চলমান অর্থনৈতিক সংকট ও ব্যাংকের উচ্চ সুদহারের কারণে শেয়ারবাজারে তালিকাভূক্ত কোম্পানির শেয়ারের দাম রেকর্ড পরিমাণে সস্তা হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছে দেশের শীর্ষ স্টক ব্রোকার আইডিএলসি সিকিউরিটিজ।
মূল্যস্ফীতি ও সুদহার কমলে শেয়ারবাজার আবার চাঙ্গা হতে পারে বলে মনে করে প্রতিষ্ঠানটি। প্রতিবেশী শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানের শেয়ারবাজারে এমন দৃশ্য দেখা গেছে। এই দুটি দেশের শেয়ারবাজার সম্প্রতি রেকর্ড পরিমাণ চাঙ্গা হয়েছে।
‘আর রিপলস অব রিফর্ম প্রাইস ইন?’ শিরোনামে আইডিএলসি সিকিউরিটিজের ২০২৫ সালের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরের দ্বিতীয়ার্ধে ঘুরে দাঁড়াতে পারে দেশের শেয়ারবাজার।
ব্রোকারেজ হাউজটির ভাষ্য, সদ্য বিদায়ী ২০২৪ সাল শেষে ডিএসইতে শেয়ারের মূল্য-আয় (পিই) অনুপাত দাঁড়িয়েছে ১০.৩০। এটি গত ১০ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন।
প্রতিষ্ঠানটির মতে, ১০.৩০ হারটি গড়ে সব সময় যে গড়ে থাকে তা হলো ১৪.৫০। এখন সেটি গড় পি/ই অনুপাতেরস অনেক নিচে।
দাম-আয় অনুপাত হলো একটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দামের সঙ্গে এর শেয়ার প্রতি আয়ের অনুপাত। উচ্চ অনুপাত একটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের অতিমূল্যায়ন তুলে ধরে। বিপরীতে একটি নিম্ন পি/ই অনুপাত শেয়ারের দামে তাদের আয়ের তুলনায় অবমূল্যায়িত হয়।
আইডিএলসি সিকিউরিটিজ পূর্বাভাস দিয়ে বলছে, আগামীতে সামষ্টিক অর্থনৈতির সূচক বাড়বে। বিদেশে মূল্যস্ফীতি ও সুদহার কমে যাওয়ায় রপ্তানি বাড়বে। ইউরোপিয়ান সেন্ট্রাল ব্যাংক (ইসিবি) সুদহার চার শতাংশ থেকে কমিয়ে তিন শতাংশ করেছে। যুক্তরাষ্ট্র স্বল্পমেয়াদি সুদের হার সাড়ে চার শতাংশ থেকে কমিয়ে সোয়া চার শতাংশ করেছে। এ ছাড়াও, রেমিট্যান্সে দুই অঙ্কের প্রবৃদ্ধি চলছে বলে জানিয়েছে ব্রোকারেজ প্রতিষ্ঠানটি। যা অর্থনীতিকে সৃদৃঢ় করার মজবুত ভিত্তি হয়ে দেখা দিবে।
আইডিএলসি সিকিউরিটিজ মনে করে, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের ফলে কালো টাকা ও সম্পদ পাচার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্স আসছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আমদানি কমানোর উদ্যোগ, ক্রমবর্ধমান রপ্তানি ও স্থিতিশীল রেমিট্যান্স প্রবাহের কারণে চলতি হিসাবের ঘাটতি কমেছে। পুরো অর্থবছর এটি কম থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে।
চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধে ঋণ পরিশোধ বাড়বে বলা হলেও ঋণ হিসেবে চার.৯০ বিলিয়ন ডলার পাওয়ার প্রতিশ্রুতি আছে। আগামী দেড় বছরের মধ্যে তা পাওয়া যাবে বলেও আশা করা হচ্ছে।
টাকার দাম ও চলতি হিসাবের ঘাটতি কমে যাওয়া ইঙ্গিত দেয় যে বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে টাকার দাম খুব কমে যাওয়ার আশঙ্কা নেই। ফসলের মৌসুমের ওপর নির্ভর করে চলতি বছরের দ্বিতীয়ার্ধে মূল্যস্ফীতি কমতে পারে বলেও প্রতিবেদনে আভাস দেওয়া হয়েছে।
আইডিএলসি সিকিউরিটিজ বলছে, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনা গেলে সুদের হারও কমবে। সম্প্রতি সুদের হার বেড়ে যাওয়ার পেছনে আছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিহার।
এদিকে গত শনিবার সংবাদ সম্মেলনে ডিএসইর চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম বলেছিলেন, ‘সংস্কারমূলক উদ্যোগের মাধ্যমে আগামী জুনের মধ্যে শেয়ারবাজারের উন্নতি হবে বলে আশা করছি।’
আইডিএলসি সিকিউরিটিজ বলেছে, সংস্কার হলে শেয়ারবাজারের সূচক বাড়বে। সম্প্রতি শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানেতাদেখাগেছে।