প্রবাসী আয়ের সোনালী সময়: এপ্রিল মাসে গড়লো দ্বিতীয় রেকর্ড

প্রবাসী আয়ের সোনালী সময়: এপ্রিল মাসে গড়লো দ্বিতীয় রেকর্ড

শেয়ারবাজার ডেস্ক : ঈদের আগে রেকর্ড ৩.২৯ বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স আসার পর, প্রবাসী আয় প্রবাহের ধারা থামেনি ঈদের পরেও। সদ্য বিদায়ী এপ্রিল মাসে দেশে এসেছে প্রায় ২৭৫ কোটি ২০ লাখ মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স। এটি দেশের ইতিহাসে এক মাসে পাওয়া দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স।

 

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, প্রতি ডলার ১২২ টাকা ধরে এপ্রিল মাসে প্রবাসী আয়ের অঙ্ক দাঁড়ায় প্রায় ৩৩ হাজার ৫৭৪ কোটি ৪০ লাখ টাকা। গড়ে প্রতিদিন দেশে এসেছে প্রায় ৯ কোটি ১৭ লাখ ডলার বা ১ হাজার ১১৯ কোটি টাকারও বেশি।

 

২০২৪ সালের এপ্রিল মাসের তুলনায় এবারের এপ্রিল মাসে রেমিট্যান্স বেড়েছে প্রায় ৭০ কোটি ডলার। গত বছরের একই সময়ে দেশে এসেছিল ২০৪ কোটি ৪০ লাখ ডলার, যা এবারের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে কম।

 

চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) দেশে মোট রেমিট্যান্স এসেছে ২ হাজার ৪৫৪ কোটি ডলার। গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের একই সময়ে এসেছিল ১ হাজার ৯৯২ কোটি ডলার। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে রেমিট্যান্স বেড়েছে প্রায় ৫৪২ কোটি ডলার বা সাড়ে ৫ বিলিয়নেরও বেশি।

 

এই সময়ে রেমিট্যান্স প্রবৃদ্ধির হার দাঁড়িয়েছে প্রায় ২৮ দশমিক ৩০ শতাংশ। এমন প্রবৃদ্ধি অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত ইতিবাচক একটি দিক বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

 

তারা বলছেন, হুন্ডির বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কঠোর মনোভাব, বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠাতে নানা ধরনের প্রণোদনা ও উৎসব ঘিরে প্রবাসীদের অতিরিক্ত অর্থ প্রেরণ—এই সবই রেমিট্যান্স বৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা রেখেছে।

 

বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপের দেশগুলো থেকে প্রবাসীদের পাঠানো অর্থের পরিমাণ গত কয়েক মাসে ধারাবাহিকভাবে বেড়েছে। ঈদকে কেন্দ্র করে স্বজনদের কাছে বাড়তি অর্থ পাঠানোর প্রবণতাও এবারের এপ্রিল মাসে রেকর্ড গড়ার পেছনে বড় একটি কারণ হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে।

 

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই গতি অব্যাহত রাখতে হলে ব্যাংকিং চ্যানেলকে আরও সহজলভ্য করা, প্রবাসীদের উদ্বুদ্ধ করতে বিভিন্ন প্রচারণা জোরদার করা এবং হুন্ডি চক্রকে সম্পূর্ণ নির্মূল করতে নিয়মিত নজরদারি বাড়ানো জরুরি।

 

অর্থনীতিবিদদের মতে, প্রবাসী আয়ের এই ধারা অব্যাহত থাকলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়বে, আমদানি ব্যয় মেটানো সহজ হবে এবং সামগ্রিকভাবে দেশের অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা ফিরে আসবে।