আজ: বুধবার, ০৮ জানুয়ারী ২০২৫ইং, ২৪শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৭ই রজব, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

১৭ অগাস্ট ২০২৩, বৃহস্পতিবার |

kidarkar

বিনিয়োগ বাড়ানোর আহ্বান বিএসইসির

শেয়ার বাজারে গতি আনতে আসছে নতুন বিনিয়োগ

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের পুঁজি বাজারে বিনিয়োগ বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

বৃহস্পতিবার (১৭ অগাস্ট) বর্তমান বাজার পরিস্থিতি বিবেচনায় অ্যাসেট ম্যানেজার ও ফান্ড ম্যানেজার প্রতিষ্ঠান, শীর্ষস্থানীয় ব্যাংক এবং মার্চেন্ট ব্যাংকের প্রতি শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

বিএসইসির কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত দুটি পৃথক বৈঠক থেকে এ আহ্বান জানানো হয়। বিএসইসির ইনভেস্টমেন্ট ম্যানেজমেন্ট ডিভিশনের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত বৈঠক দু’টির একটিতে অ্যাসেট ম্যানেজার এবং ফান্ড ম্যানেজারদের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। অপর বৈঠকে শীর্ষস্থানীয় ব্যাংক, মার্চেন্ট ব্যাংক এবং অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

সকাল ১০টায় অ্যাসেট ম্যানেজার এবং ফান্ড ম্যানেজারদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে বিএসইসির কমিশনার ড. মিজানুর রহমান সভাপতিত্ব করেন। মিজানুর রহমান উপস্থিত সব ফান্ড ম্যানেজার ও অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিগুলোকে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থরক্ষা করে এবং সুষ্ঠু প্রক্রিয়া অনুসরণ করে কার্যক্রম পরিচালনার নির্দেশনা দেন।

আলোচনায় অ্যাসেট ম্যানেজার এবং ফান্ড ম্যানেজারের কর্মকর্তারা পুঁজিবাজারে মিউচুয়াল ফান্ডকে আরও জনপ্রিয় করতে নানা পদক্ষেপ ও কার্যক্রমের অনুরোধ জানান। পুঁজিবাজার এবং মিউচুয়াল ফান্ডের উন্নয়নে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ বাড়ানোর ওপর জোর দেন তারা।

আগামীতে দেশের পুঁজিবাজারে মিউচুয়াল ফান্ডগুলোর প্রতি বিনিয়োগকারীদের আরও আগ্রহী করতে বিএসইসি ও অংশীজনের সঙ্গে মিলে সমন্বিতভাবে কাজ করার ওপর গুরুত্বারোপ করে অ্যাসেট ম্যানেজার এবং ফান্ড ম্যানেজার কোম্পানির প্রতিনধিরা মিউচুয়াল ফান্ড খাতকে আরও ভালো অবস্থানে নিয়ে যেতে নিজেদের সর্বাত্মক চেষ্টা ও সহযোগিতা থাকবে বলে আশ্বস্ত করেন।

বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ রেজাউল করিম ফান্ড ম্যানেজার ও অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিগুলোকে নতুন ফান্ড গঠন, ফান্ডের আকার বাড়ানো, আন্ডারলাইং অ্যাসেট বাড়ানো, সচেতনতা বাড়ানোর মাধ্যমে এ খাতের উন্নয়ন ঘটাতে সবাইকে সচেষ্ট হতে বলেন।

বিনিয়োগকারীদের মাঝে মিউচুয়াল ফান্ড সম্পর্কে সচেতনতা ও আগ্রহ তৈরি করায় বিএসইসির উদ্যোগে নানা কার্যক্রম রয়েছে এবং আগামীতেও এধরনের কার্যক্রমের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ জ্ঞান বাড়ানোর পাশাপাশি এ খাতে তাদের আস্থা ও বিশ্বাস বাড়াতে বিএসইসি কাজ করবে বলে জানান তিনি।

সকাল ১১টায় অনুষ্ঠিত হওয়া অপর বৈঠকে সভাপতিত্বকরেন বিএসইসির কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ। দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যাংক, মার্চেন্ট ব্যাংক এবং অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির প্রতিনিধিরা এ সভায় অংশ নেন।

এ সভায় ব্র্যাক ব্যাংকের সিইও ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম আর এফ হোসেন, শান্তা অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের ভাইস চেয়ারম্যান আরিফ খান, ইবিএল সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছায়েদুর রহমান, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহিত রহমান, সিটি ব্যাংকের এএমডি ও সিএফও মো. মাহবুবুর রহমান উপস্থিতি ছিলেন।

এ সভার শুরুতে পুঁজিবাজারের বর্তমান অবস্থার বিবেচনায় সবাইকে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে বিএসইসির কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ দেশ গড়ার লক্ষ্যে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় দেশের প্রাইভেট সেক্টর হতে প্রতিবছর ২৭ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ দরকার।

তিনি আরও বলেন, বিশ্বজুড়ে বন্ড মার্কেট দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের যোগানে গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসেবে প্রতিষ্ঠিত এবং বাংলাদেশের বাজারেও এর জন্য রয়েছে অনেক সুযোগ ও সম্ভাবনা। দেশের পুঁজিবাজারের উন্নয়নে বন্ড বাজারকে আরও টেকসই রূপ দেওয়া এবং বন্ডের মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে হবে।

সভায় বন্ড ইস্যুর প্রক্রিয়ায় বিদ্যমান নানা সমস্যা সম্পর্কে আলোচনা হয় এবং এ প্রক্রিয়ার সহজ করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা হয়। এছাড়া বন্ড মার্কেট জনপ্রিয় না হওয়ার পেছনের কারণ এবং বিদ্যামান সমস্যাগুলো সমাধানের বিষয়ে সভায় সবাই মতামত দেন। দেশের পুঁজিবাজারে শক্তিশালী বন্ডের বাজার প্রতিষ্ঠার জন্য সম্ভাব্য বিনিয়োগকারীদের চিহ্নিত করে তাদের বন্ডে বিনিয়োগে আগ্রহী করতে হবে বলেও বৈঠক অভিমত আসে।

আগামীতে দেশের পুঁজিবাজার ও বন্ড মার্কেটের উন্নয়ন দেশের আর্থিক খাতের সঙ্গে যুক্ত সবার অংশীদারত্বে ফলপ্রসূ কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে বলে বিএসইসির পক্ষ হতে অঙ্গীকার করা হয়।

সভায় বিএসইসির পক্ষ থেকে জানানো হয়, সাম্প্রতিক সময়ে দেশে পরিবেশবান্ধব ও টেকসই বন্ড নিয়ে আসার জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো ও পলিসিগত উন্নয়নের জন্য কাজ করেছে বিএসইসি। এছাড়া দেশের বন্ড বাজারের উন্নয়নে সরকার সহায়ক ভূমিকায় রয়েছে এবং অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক, এনবিআরসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে সঙ্গে নিয়ে আইএমএফ, বিশ্বব্যাংক ও আন্তজার্তিক সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমন্বিত উদ্যোগে কার্যক্রম চলমান আছে।

টেকসই পুঁজিবাজার ও অর্থনীতি প্রতিষ্ঠায় বন্ড বাজারের উন্নয়ন প্রয়োজন বলে আলোচনায় উপস্থিত সবাই একমত প্রকাশ করেন। সেইসঙ্গে সভায় উপস্থিত ব্যাংক, মার্চেন্ট ব্যাংক এবং অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির শীর্ষ কর্মকর্তারা পুঁজিবাজারে তাদের বিনিয়োগ বৃদ্ধির বিষয়ে একমত পোষণ করেন।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.