বিনিয়োগকারীদের পুঁজি নেই ৪৮ হাজার কোটি টাকা
নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের পুঁজিবাজারে চলছে টানা দরপতন। ফলে দিন যতই যাচ্ছে পুঁজিবাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা সংকট ততই বেড়েছে। ফলে পুঁজি হারিয়ে বাজার ছাড়ছেন বিনিয়োগকারীরা। গত সপ্তাহে লেনদেন হওয়া চার কার্যদিবসের প্রতি কার্যদিবসেই বড় দরপতন হয়েছে । এতে সপ্তাহজুড়ে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) দাম কমার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। ফলে এক সপ্তাহে বিনিয়োগকারাদের পুঁজি বা বাজার মূলধন কমেছে ৪৮ হাজার কোটি টাকার ওপরে ।
গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার পাশপাশি সবকটি মূল্য সূচকও কমেছে। সেই সঙ্গে কমেছে লেনদেনের গতি। গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া মাত্র ২৮টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৩৩৮টির। আর ২০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের দাম কমায় সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৫৩ হাজার ৬৬ কোটি টাকা। যা গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৭ লাখ ১ হাজার ৮২৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর বাজার মূলধন কমেছে ৪৮ হাজার ৭৫৮ কোটি টাকা বা ৬ দশমিক ৯৫ শতাংশ।
এদিকে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ২০৫ দশমিক শূন্য ২ পয়েন্ট বা ৩ দশমিক ৭২ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ১৪৩ দশমিক ৬৩ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৫৪ শতাংশ। প্রধান মূল্য সূচকের পাশাপাশি কমেছে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক। গত সপ্তাহজুড়ে এই সূচকটি কমেছে ৬৬ দশমিক ২৯ পয়েন্ট বা ৩ দশমিক ৩৬ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ৪১ দশমিক ২৫ পয়েন্ট বা ২ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ।
আর ইসলামী শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ্ সূচকেরও গত সপ্তাহে বড় পতন হয়েছে। গত সপ্তাহে এই সূচকটি কমেছে ৫২ দশমিক ৬২ পয়েন্ট বা ৪ দশমিক ৩৪ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ৩০ দশমিক ৪১ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৪৫ শতাংশ।
সবকটি মূল্য সূচক কমার পাশাপাশি লেনদেনের গতিও কমেছে। সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৫১৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৭৬৪ কোটি ২৮ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন কমেছে ১৪৬ কোটি ৭৮ লাখ টাকা বা ৩২ দশমিক ২৯ শতাংশ।
আর সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ৭০ কোটি ২ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে মোট লেনদেন হয় ৩ হাজার ৮২১ কোটি ৪১ লাখ টাকা। সে হিসেবে মোট লেনদেন কমেছে ১ হাজার ৭৫১ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। মোট লেনদেন বেশি কমার কারণ গত সপ্তাহে এক কার্যদিবস কম লেনদেন হয়েছে।