আজ: শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ইং, ৫ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৫ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

১০ জুন ২০২৪, সোমবার |

kidarkar

দুই দিনে সূচক উধাও ১৩০ পয়েন্ট

পুঁজি হারানোর আর্তনাদ বেড়েই চলেছে, এ পতন থামবে কবে?

খালিদ হাসান : স্মরণকালের সবচেয়ে খারাপ অবস্থানে পুঁজিবাজার। ব্যাপক সম্ভাবনাময় এ খাতটি মুখ থুবড়ে পড়েছে। সবার চোখের সামনে প্রতিদিনই হাওয়ায় মিশে যাচ্ছে হাজার হাজার কোটি টাকার বাজারমূলধন। আতঙ্কে দিন কাটছে বিনিয়োগকারীদের। সূচকের অব্যাহত পতনে বিনিয়োগকারীদের লোকসানের পাল্লা ভারী হচ্ছে। তাদের পিঠ রীতিমতো দেওয়ালে ঠেকে গেছে। ফলে লাখো বিনিয়োগকারী পুঁজি হারিয়ে বাজার ছাড়ছেন।

টানা দুর্গতি পুঁজিবাজারকে সম্পূর্ণ ধ্বংসের পথে নিয়ে গেলেও বিষয়টি নিয়ে কাউকে তেমন সিরিয়াস ভূমিকা গ্রহণ করতে দেখা যাচ্ছেনা। ফলে নিয়ন্ত্রক সংস্থার ওপরও ক্ষোভ বাড়ছে বিনিয়োগকারীদের। কিন্তু এভাবে চলতে থাকলে দেশের আর্থিক খাতের অন্যতম স্তম্ভ এবং অন্যতম একটি নিয়ামক শক্তি পুঁজিবাজার যে অন্তিম শয়ানে চলে যাবে, এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই। যদিও পুঁজিবাজার সংক্রান্ত বিষয়ে সরকারপ্রধান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ইতিপূর্বে বারবার তৎপরতা দেখিয়েছেন; কিন্তু তাতে করেও বিশেষ কোনো ফল লাভ হয়নি।

তবে বাজার সংশ্লিষ্টরা আশা করেছিলো ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট পুঁজিবাজার বান্ধব হবে। কিন্তু বাজেটে কোনো প্রণোদনা তো পেলই না পুঁজিবাজার। উল্টো মূলধনী মুনাফার (ক্যাপিটাল গেইন) ওপর কর বসানো হয়েছে। এছাড়া, তালিকাভুক্ত কোনো কোম্পানি বা তহবিলের সিকিউরিটিজ বা শেয়ার হস্তান্তরের জন্য ১০ শতাংশ হারে কর দিতে হবে। পাশাপাশি তালিকাভুক্ত কোম্পানির করহার অপরিবর্তিত থাকলেও অতালিকাভুক্ত কোম্পানির ক্ষেত্র ২.৫০ শতাংশ কমানোর প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে।

ফলে বাজেটের নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে বাজারে। বাজেট ঘোষণার পর টানা দুই কার্যদিবস বড় দরপতন হয়েছে পুঁজিাবাজরে। ফলে দুই কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ডিএসইএক্স সূচক কমেছে ১৩০ পয়েন্টের বেশি। এর আগে দুই মাসের পতনে ডিএসই সূচক কমেছে ৬০০ পয়েন্টের বেশি।

বিশ্বের অন্য দেশের পুঁজিবাজার যখন ভালো অবস্থানে। সেই সময় দেশের পুঁজিবাজারে কেন এমন দুর্দশা? কেন পুঁজিবাজার স্থিতিশীল হচ্ছে না। এ পতনের শেষ কোথায় এমন প্রশ্ন লাখ লাখ বিনিয়োগকারীর।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত দুই মাসে লাগাতার পতনে ৫০ হাজারের বেশি বিনিয়োগকারী সর্বশান্ত হয়ে বাজার ছেড়েছেন। পতনের ছোবল অব্যাহত থাকায় প্রতিদিনই নিঃস্ব হওয়ার বিনিয়োগকারীদের তালিকা বড় হচ্ছে। কিন্তু পতনের তান্ডব থামার কোনো লক্ষণ নেই। তাদেরও একই প্রশ্ন, তাহলে কী পুঁজিবাজার শেষ হয়ে যাবে?

বাজার বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবস সোমবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ডিএসই ব্রড ইনডেক্স আগের দিনের চেয়ে ৬৫ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৫ হাজার ১০৫ পয়েন্টে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১৭পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১ হাজার ১০৩ পয়েন্টে এবং ডিএসই–৩০ সূচক ২৩ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১ হাজার ৮১১ পয়েন্টে। দিনভর লেনদেন হওয়া ৩৯১ কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ২৬ টির, দর কমেছে ৩৪২ টির এবং দর অপরিবর্তিত রয়েছে ২৩টির।

ডিএসইতে ৩১৮ কোটি ৭৮ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। যা আগের কার্যদিবস থেকে ৩৯ কোটি ১২ লাখ টাকা কম। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৩৫৭ কোটি ৯০ লাখ টাকার ।

অপরদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১৬২ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৪ হাজার ৬৭৮ পয়েন্টে। সিএসইতে ২১৪ টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২২ টির দর বেড়েছে, কমেছে ১৬৭ টির এবং ২৫ টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। সিএসইতে ২৩ কোটি ৫৪ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।

৩ উত্তর “পুঁজি হারানোর আর্তনাদ বেড়েই চলেছে, এ পতন থামবে কবে?”

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.