আজ: বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪ইং, ২৯শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

০২ অক্টোবর ২০২৪, বুধবার |

kidarkar

অব্যাহত দরপতনে পুঁজি হারানো বিনিয়োগকারীদের আর্তনাদ

নিজস্ব  প্রতিবেদক: স্মরণকালের সবচেয়ে খারাপ অবস্থানে দেশের পুঁজিবাজার। ব্যাপক সম্ভাবনাময় খাতটি মুখ থুবড়ে পড়েছে। সবার চোখের সামনে প্রতিদিনই হাওয়ায় মিশে যাচ্ছে হাজার হাজার কোটি টাকার বাজার মূলধন। আতঙ্কে দিন কাটছে বিনিয়োগকারীদের। সূচকের মাঝে মধ্যে নামমাত্রা কয়েকটি কোম্পানির শেয়ারে ভর করে উত্থান হলেও তার দ্বিগুনের বেশি কোম্পানির শেয়ারের দরপতন হচ্ছে। ফলে সূচকের কিছুটা উত্থান হলেও বিনিয়োগকারীদের লোকসানের পাল্লা ভারী হচ্ছে।

তাদের পিঠ রীতিমতো দেওয়ালে ঠেকে গেছে। ফলে গত এক মাসে লাখ লাখ বিনিয়োগকারীর পুঁজি হারিয়ে বাজারবিমুখ হয়ে পড়ছেন। বাড়ছে বিনিয়োগকারীদের আর্তনাদ। যদিও পুঁজিবাজার সংক্রান্ত বিষয়ে অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনুস জাতির উদ্দেশ্যে ভাষনে পুঁজিবাজার ইস্যুতে ইতিবাচক বক্তব্য দিলেও তাতে বিশেষ কোনো ফল লাভ হয়নি।

এছাড়া বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) নবগঠিত কমিশন পুঁজিবাজারকে নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হচ্ছে। এতে কমিশন গঠনের শুরুটা ভালো হলেও দিন দিন তার গ্রহণযোগ্যতা হারাচ্ছে। ফলে নতুন করে বাজারমুখী হচ্ছে না বিনিয়োগকারীরা। শুধু বাজারে চলছে জরিমানা আর জরিমানা। পুঁজিবাজার স্থিতিশীল না করে কী ভাবে কারসাজি চক্রকে জরিমানা করছে এ নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মাঝে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। ফলে বর্তমান বাজারে আস্থা ও তারল্য সংকটে হাহাকার চলছে।

এছাড়া বড় বিনিয়োগকারীরা সাইডলাইনে বসে রয়েছেন। যেহেতু পুঁজিবাজারের অনিয়ম ও দুর্নীতিরোধে নিয়ন্ত্রক সংস্থার তদন্ত কার্যক্রম চলছে, তাই সবাই যার যার পূর্বের হিসেব নিয়ে ব্যস্ত রয়েছে। কারণ ব্যক্তি ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী প্রায় সবাই কম বেশি কোন না কোন শেয়ারে প্রাইস মেকিংয়ে ভূমিকা রাখে। বিএসইসির তদন্ত রিপোর্টে আবার কেউ ফেঁসে যায় কিনা সেই আতঙ্কে শেয়ার ক্রয়-বিক্রয় থেকে দূরে রয়েছে। ফলে পুঁজিবাজার স্থিতিশীল ইস্যুতে বিষয়টি নিয়ে কাউকে তেমন সিরিয়াস ভূমিকা গ্রহণ করতে দেখা যাচ্ছে না। ফলে নিয়ন্ত্রক সংস্থার ওপরও ক্ষোভ বাড়ছে বিনিয়োগকারীদের। কিন্তু এভাবে চলতে থাকলে দেশের আর্থিক খাতের পুঁজিবাজার যে অন্তিম শয়ানে চলে যাবে, এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই।

এদিকে সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূচকের নামমাত্রা উত্থানে লেনদেন শেষ হয়েছে। এদিন সূচক বাড়লেও কমেছে টাকার পরিমাণে লেনদেন। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

জানা গেছে, দিনশেষে ডিএসই ব্রড ইনডেক্স আগের দিনের চেয়ে ১৭ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৭৭৭ পয়েন্টে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১৪ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১ হাজার ২৮৮ পয়েন্টে এবং ডিএসই ৩০ সূচক ১২ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ২ হাজার ১০৯ পয়েন্টে।

দিনভর লেনদেন হওয়া ৩৯৫ কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৯৩ টির, দর কমেছে ২৬২ টির এবং দর অপরিবর্তিত রয়েছে ৪০ টির। ডিএসইতে ৭১৮ কোটি ৬৩ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। যা আগের কার্যদিবস থেকে ৪৪ কোটি ২৫ লাখ টাকা বেশি। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৬৭৪ কোটি ৩৮ লাখ টাকার ।

অপরদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১০ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৬ হাজার ১৭৫ পয়েন্টে। সিএসইতে ২৪২ টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৬৯ টির দর বেড়েছে, কমেছে ১৪৮ টির এবং ২৫টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। সিএসইতে ১২ কোটি ৩ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।

 

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.