চুয়াডাঙ্গায় চিকিৎসকের ভুল অস্রোপচারে মৃত্য ঝুঁকিতে গৃহবধূ; শাস্তির দাবিতে স্বজনদের মানবন্ধন
নিজস্ব প্রতিবেদক: চুয়াডাঙ্গার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসকের বেপরোয়া অস্রোপচারে গৃহবধূ মৃত্য ঝুঁকিতে রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় চিকিৎসকের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছে ভোক্তভোগীর স্বজনরা। তবে এরই মধ্যে অভিযুক্ত চিকিৎসক চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জুনিয়র কনসালটেন্ট (সার্জারি) ডা. এহসানুল হক তন্ময় ভুক্তভোগীর স্বজনদের কে অভিযোগ তুলে নিতে নানা ভাবে প্রলোভন দেখিয়েছে বলেও প্রমাণ পাওয়া গেছে।
জানা যায়, গত ০৩/০৯/২৪ ইং তারিখে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ৯ ওয়ার্ডের আরামপাড়া এর স্থানীয় বাসিন্দা মোসাম্মত মহিমা বেগম (৪৫) এর ডান হাতের তালুতে অসাবধানতাবশত বাশেঁর চোচ ফুটে গেলে সাথে সাথে হাতের অবস্থা খারাপ হতে থাকায় পরিবারের লোকজন তাকে তাৎক্ষণিকভাবে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগে নিয়ে যায়। সেখানে কর্ব্যরত চিকিৎসক ডা. এহসানুল হক তন্ময় কোন প্রকার পরীক্ষা না করিয়েই প্রথমে জানায় রোগীর হাতে কিছু নেই এবং চিকিৎসা পত্র লিখে দিয়ে ওষুধ নিয়মিত খেয়ে যেতে বলে এবং পরবর্তীতে কোন প্রকার সমস্যা হলে রোগীকে তার ব্যক্তিগত চেম্বারে নিয়ে যেতে বলে।
এমতাবস্তায় ওষুধ খেয়ে রোগীর অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় ডা. তন্ময়ের নির্দেশনা অনুযায়ী রোগীকে দুদিন পর তার চেম্বারে নিয়ে গেলে তিনি জানান রোগীর হাতে ইনফেকশন হয়েছে এবং ভিতরে থাকা চোচ জরুরী ভিত্তিতি অপারেশন করাতে হবে। রোগীর হার্টের বাল্ব অপারেশন করানোর পর রোগী কোন প্রকার ওষুধ খেতে পারেনা এবং রোগীর শারিরীক অবস্থার অবনতি হয় এমন তথ্য ডাক্তারকে জানানো হলে ডাক্তার স্বজনদের আশ্বস্ত করে বলেন হাতের তালুর অপারেশনে রোগীর কোন প্রকার সমস্যা হবেনা। ডা. এহসানের কথায় রোগীর স্বজনরা অপারেশনে রাজী হয় এবং ০৫/০৯/২৪ ইং তারিখে অপারেশন করানো হয়।
অপারেশন এর তিনদিন পর থেকে রোগীর অপরেশন পরবর্তী জটিলতা এবং হার্টের সমস্যা বেড়ে যাওয়ায় তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালে রোগীর অবস্থার অবনতি হতে থাকায় সেখানে কর্বত্যরত চিকিৎসকরা রোগীকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (রামেক) রেফার্ড করে এবং রোগীকে ছয়দিন সেখানে সিসিইউতে চিকিৎসাধীন থাকতে হয়।
রাজশাহী মেডিকেলের সিসিইউতে চিকিৎসা গ্রহণের পর রোগীর হার্টের অবস্থা কিছুটা উন্নতি হলে স্বজনরা তাকে বাড়ি নিয়ে যায় কিন্তু ডান হাতের অপারেশন করা অংশ ফুলতে থাকে এবং তা থেকে পুজঁ বের হতে থাকে। হাত অতিরিক্ত ফুলে যাওয়াতে রোগীর পরিবারের লোকজন হাতের তালুতে চাপ দিলে সেখান থেকে পুঁজ বের হয় এবং সাথে সাথে বিধেঁ থাকা বাশের চোচ বের হয়ে আসে।
রোগীর স্বজনদের সাথে কথা বলে জানা যায় ডা. এহসান কোন প্রকার এক্স-রে করানো ছাড়ায় রোগীর হাতে অস্রোপচার করে এবং চোচ ফুটার জায়গাটিতে অস্রোপচার না করে হাতের অন্য একটি অংশে অস্রোপচার করে এবং অস্রোপচারের পর ডাক্তার ডাক্তার কিংবা সহকারী কেও কোন প্রকার কালেকশন (বিধেঁ থাকা বাশেঁর চোচ) রোগীর স্বজনদের দেখায়নি।
এর আগে , ভোক্তভোগীর পরিবার ও স্বজনরা চিকিৎসকের ভুল অস্রোপচারের শাস্তির দাবিতে মানবন্ধন করে এবং আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সংলিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানান।
ডা. তন্ময়ের এমন বেপরোয়া অস্রোপচার এবং সরকারি হাসপাতাল থেকে রোগীকে এক প্রকার কৌশল করে নিজের ব্যক্তিগত চেম্বারে নিয়ে গিয়ে অপচিকিৎসার নামে রোগীর মৃত্যু ঝুঁকি, অঙ্গহানি আর আর্থিক হয়রানির গল্প স্থানীয়দের কাছে নতুন গল্প নয়।। স্থানীয়দের কাছে নতুন নয়। চিকিৎসার নামে সাধারণ মানুষের হয়রানি এবং ভুল চিকিৎসার সংস্কৃতির রমরমা ব্যবসায় যেনো হয়ে ওঠেছে ডা. তন্ময়দের অর্থ উপার্জনের প্রতিষ্ঠিত হাতিয়ার।