২০২৫ সালে ৩২ লাখ মেট্রিক টন জ্বালানি তেল আমদানির পরিকল্পনা
নিজস্ব প্রতিবেদক: আগামী বছর (২০২৫ সালে) জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ের জন্য দেশের চহিদা মেটাতে পরিশোধিত ও অপরিশোধিত প্রায় ৩২ লাখ টন জ্বালানি তেল এবং চলতি বছরের নভেম্বরের জন্য এক কার্গো তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার।
এ লক্ষ্যে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের প্রস্তাবে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি। বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কমিটির বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, ২০২৫ সালের (জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর) জন্য পরিশোধিত জ্বালানি তেল সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে আমদানির প্রস্তাবে নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের অধীনস্ত নিজস্ব তহবিল থেকে এ জ্বালানি কেনা হবে।
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২০১৬ সাল থেকে জ্বালানি তেলের মোট চাহিদার ৫০ শতাংশ জি-টু-জি ভিত্তিতে এবং ৫০ শতাংশ উন্মুক্ত আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে আমদানি করে আসছে।
বিক্রয় প্রবণতা ও পর্যাপ্ত মজুত বিবেচনায় ২০২৫ সালের জন্য জি-টু-জি ভিত্তিতে মোট আমদানির পরিমাণ গ্যাস অয়েল ১৯.১০ লাখ মেট্রিক টন (১০%+), জেট এ-১= ৩.৬৫ লাখ মেট্রিক টন (১০%+), মোগ্যাস ১.২৫ লাখ মেট্রিক টন (১০%+), ফার্নেস অয়েল ৪.৫০ লাখ মেট্রিক টন (১০%+) এবং মেরিন ফুয়েল ৪৫ হাজার মেট্রিক টনসহ (১০%+) মোট পরিশোধিত জ্বালানি তেল ২৮ লাখ ৯৫ হাজার মেট্রিক টন।
রাষ্ট্রীয় জরুরি প্রয়োজনে ও জনস্বার্থে পিপিএ ২০০৬ এর ৬৮(১) ধারা এবং পিপিআর ২০০৮ এর বিধি ৭৬(২) অনুযায়ী সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে আমদানির প্রস্তাব নীতিগত অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হলে কমিটি তাতে অনুমোদন দিয়েছে।
সভায় ২০২৫ সালের জন্য অপরিশোধিত জ্বালানি তেল (ক্রুড অয়েল) সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে আমদানির নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) কর্তৃক জি-টু-জি ভিত্তিতে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় সৌদি আরামকো থেকে অ্যারাবিয়ান লাইট ক্রুড (এএলসি) এবং অ্যাডনক, আবুধাবি থেকে ক্রুড অয়েল আমদানি করে ইস্টার্ন রিফাইনারিতে প্রক্রিয়াকরণ করে থাকে।
ইআরএল ফিড ডিজাইন অনুযায়ী প্রক্রিয়াকরণের জন্য কাঁচামাল হিসেবে এই দুটি ক্রুড অয়েল অধিক উপযোগী এবং টেন্ডার প্রক্রিয়ায় অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে আমদানির সুযোগ নেই বিধায় রাষ্ট্রীয় জরুরি প্রয়োজনে ও জনস্বার্থে পিপিএ ২০০৬ এর ৬৮(১) ধারা এবং পিপিআর ২০০৮ এর বিধি ৭৬(২) অনুযায়ী ২০২৫ সালের জন্য সৌদি আরামকো, সৌদি আরব এবং অ্যাডনক, আবুধাবি থেকে ১৩ লাখ মেট্রিক টন অপরিশোধিত জ্বালানি তেল (ক্রুড অয়েল) সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে কেনার নীতিগত অনুমোদনের জন্য প্রস্তাব উপস্থাপন করা হলে কমিটি তাতে অনুমোদন দিয়েছে।
সৌদি আরব থেকে ৭ লাখ মেট্রিক টন এবং আবুধাবি থেকে ৬ লাখ মেট্রিক টন অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করা হবে।
সভায় গ্যাসের জরুরি চাহিদা মেটানোর জন্য স্পট মার্কেট থেকে এক কার্গো (১০-১১ নভেম্বর ২০২৪ সময়ের জন্য ৩০তম) এলএনজি সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে আমদানির নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। স্পট মার্কেট থেকে ১০-১১ নভেম্বর ২০২৪ (৩০তম কার্গো) সময়ের জন্য পুনঃকোটেশন আহ্বান করা হলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে মাত্র দুটি প্রতিষ্ঠান প্রস্তাব দাখিল করে।
অন্যদিকে পিপিআর-২০০৮ এর বিধি ৭৩(৭)-এ কমপক্ষে তিনটি গ্রহণযোগ্য কোটেশন না পাওয়া গেলে কোটেশনগুলো বাতিল করে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতি প্রয়োগ করার বিধান রয়েছে। বিদ্যুৎ, সার, শিল্পখাতসহ বিভিন্ন খাতে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহের লক্ষ্যে রাষ্ট্রীয় জরুরি প্রয়োজন বিবেচনায় স্পট মার্কেট থেকে এক কার্গো (১০-১১ নভেম্বর ২০২৪ সময়ের জন্য ৩০তম) এলএনজি কেনার প্রস্তাব ‘পিপিআর- ২০০৮’ এর বিধি ৭৬(২) অনুসরণে সরাসারি ক্রয় পদ্ধতিতে ক্রয়ের নীতিগত অনুমোদনের জন্য প্রস্তাব করা হলে কমিটি তাতে অনুমোদন দেয় বলে সূত্র জানায়।