মেক্সিকোতে নিরাপত্তা বাহিনী-অপরাধী সংঘাতে নিহত ১৬
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মেক্সিকোর দক্ষিণাঞ্চলে সংঘাতপূর্ণ গুয়েরেরো রাজ্যে নিরাপত্তা বাহিনী ও সন্দেহভাজন অপরাধীদের মধ্যে সহিংসতার একাধিক ঘটনায় কমপক্ষে ১৬ জন নিহত হয়েছে। দেশটির সামরিক বাহিনী এ তথ্য জানিয়েছে। খবর এএফপির।
প্রথম সংঘাতের ঘটনাটি ঘটে প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূল এলাকার একটি শহর টেকপান দে গালেয়েনায়। এখানে সংঘর্ষে দুজন মারা যায় এবং আরও চারজন আহত হয়।
এরপর ওই এলাকার একটি সামরিক ঘাঁটিতে সংঘবদ্ধ অপরাধীরা হামলা করলে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে সংঘর্ষে ১৪ জন বন্দুকধারী নিহত হয়। মেক্সিকোর জাতীয় প্রতিরক্ষা সচিবালয় থেকে এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়।
গুয়েরেরো হলো মেক্সিকোর সবচেয়ে দরিদ্র রাজ্যগুলোর একটি। এখানে মাদক উৎপাদন ও পাচারের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিভিন্ন কার্টেলের মধ্যে সংঘাতের ঘটনা প্রায়ই ঘটে। সংঘাতপূর্ণ এই এলাকায় বছরের পর বছর ধরে বিভিন্ন দলের মধ্যে খণ্ডযুদ্ধ লেগেই থাকে। সমুদ্রতীরবর্তী রিসোর্ট শহর আকাপুলকোর পাশের এই রাজ্যটিতে গত বছর এক হাজার ৮৯০টি খুনের ঘটনা ঘটে।
অক্টোবরের প্রথম দিকে গুয়েরেরো রাজ্যের রাজধানীর মেয়রকে হত্যা করা হয়। ক্ষমতাগ্রহণের এক সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে খুন হন তিনি।
এ ছাড়া গতকাল বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) মেক্সিকোর উত্তরে গুয়ানাজুয়াতো রাজ্যে একটি পুলিশ স্টেশনের বাইরে গাড়ি বোমা বিস্ফোরণে তিনজন পুলিশ কর্মকর্তা আহত হন। পরে পুলিশ জানায়, বিস্ফোরণে পুলিশ স্টেশনসহ বেশকিছু বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
মেক্সিকোর মধ্যাঞ্চল পর্যটকদের জন্য অন্যতম আকর্ষণীয় এলাকা ও ইন্ডস্ট্রিয়াল হাব হিসেবেও পরিচিত। তবে বর্তমানে এখন তা হয়ে উঠেছে অন্যতম সংঘাতপূর্ণ এলাকা। গত ৪ অক্টোবর গুয়ানাজুয়াতো রাজ্যর সালামানকা নামের একটি শহরের বিভিন্ন স্থানে ১২ জন পুলিশ কর্মকর্তাকে হত্যা করে ফেলে রাখা হয়। মেক্সিকোর ক্ষমতাশালী দুটি কার্টেল গ্রুপ সান্তা রোসা দে লামা ও জালিসকো নিউ জেনারেশনের মধ্যে সশস্ত্র সংঘাতের জের ধরে হত্যাকাণ্ডের ঘটনাগুলো ঘটে।
এদিকে বৃহস্পতিবারের সংঘাতের ঘটনা উল্লেখ করে রাজ্যের গভর্নর লিবিয়া গার্সিয়া বলেছেন, তার প্রধান কাজ হলো গুয়ানাজুয়াতো রাজ্যের স্থিতিশীলতা বজায় রাখা। তিনি সবাইকে সঙ্গে নিয়ে এই জটিল পরিস্থিতির উত্তরণ ঘটাতে চান। গভর্নর জানান, দেশের নিরাপত্তা বাহিনীর অংশগ্রহণে আকাশ ও স্থল পথে অভিযান চলছে।
মেক্সিকোতে ২০০৬ সালে মাদক ব্যবসায় জড়িত কার্টেলগুলোর বিরুদ্ধে সামরিক বাহিনীর অংশগ্রহণে অভিযান শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত সাড়ে চার লাখেরও বেশি মাদক সংক্রন্ত হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে।