লেবাননে শান্তিরক্ষা সদরদপ্তরে হামলা, ৮ শান্তিরক্ষী আহত
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: চলতি অক্টোবরের শুরুতে দক্ষিণ লেবাননে ইসরায়েলের স্থল আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর থেকে ইউনিফিল অবস্থানগুলো কমপক্ষে ২০ বার আক্রমণের মুখে পড়েছে লেবাননে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে আটজন শান্তিরক্ষী আহত হয়েছেন। রকেট হামলার কারণে এই ঘটনা ঘটে বলে মনে করা হচ্ছে।
শক্তিশালী সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ বা তাদের কোনও সহযোগী গোষ্ঠী সম্ভবত এই হামলা চালিয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। বুধবার (৩০ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
লেবাননে নিয়োজিত জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশন ইউনাইটেড নেশনস ইন্টারিম ফোর্স ইন লেবানন (ইউনিফিল) বলেছে, দক্ষিণ লেবাননে তাদের সদর দপ্তরে সম্ভবত হিজবুল্লাহ বা তাদের সহযোগী কোনও গোষ্ঠীর ছোড়া রকেট আঘাত হানার পর তাদের আটজন শান্তিরক্ষী আহত হয়েছেন।
লেবাননে মোতায়েন থাকা জাতিসংঘের এই বাহিনী মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে বলেছে, “একটি রকেট ইউনিফিল সদর দপ্তরে আঘাত হেনেছে। এতে একটি গাড়ির ওয়ার্কশপে আগুন ধরে যায়। ইউনিফিল সদর দপ্তরের উত্তর দিক থেকে নিক্ষেপ করা ওই রকেটটি সম্ভবত হিজবুল্লাহ বা তাদের একটি সহযোগী গোষ্ঠী ফায়ার করেছিল।”
অস্ট্রিয়ার ফেডারেল প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, হামলায় আট অস্ট্রিয়ান সৈন্য আহত হয়েছে। এই হামলার নিন্দা করে তারা আরও বলেছে, “আক্রমণটি কোথা থেকে চালানো হয়েছে তা বলা এখন বলা সম্ভব নয়।”
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, “আজ বেলা ১২:৫৮ মিনিটে ক্যাম্প নকোরায় রকেটটি আঘাত হানলে ইউনিফিল কন্টিনজেন্টের আট অস্ট্রিয়ান সৈন্য আহত হয়; তবে তাদের কারও আঘাতই গুরুতর নয়।”
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, জখমগুলো “সামান্য এবং উপরিভাগের”। আহতদের মধ্যে সৈন্যরা কেউই নেই, তারা একটি মেরামত প্লাটুনের সদস্য। জখমের কারণে তাদের জরুরি চিকিৎসার প্রয়োজন ছিল।
অস্ট্রিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী ক্লাউদিয়া ট্যানার এক বিবৃতিতে বলেছেন, “আমরা সম্ভাব্য সবচেয়ে জোরালো ভাষায় এই হামলার নিন্দা জানাই এবং অবিলম্বে এই হামলার তদন্তের দাবি জানাই।”
তিনি আরও বলেন, “সকল পক্ষকে অবিলম্বে জাতিসংঘের সকল শান্তিরক্ষীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হচ্ছে। জাতিসংঘের শান্তিরক্ষীদের ইচ্ছাকৃতভাবে বা অসাবধানতাবশত বিপদে ফেলা হলে এটা সহ্য করা যায় না এবং করা হবেও না।”
প্রসঙ্গত, ইসরায়েল ১৯৭৮ সালে আক্রমণের পর লেবাননের দক্ষিণাঞ্চল থেকে ইসরায়েলি সৈন্যদের প্রত্যাহার করা হয়েছে কিনা তা তদারকি করতে ইউনিফিল গঠন করা হয়েছিল। ইউনিফিলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ১০ হাজারের বেশি শান্তিরক্ষী রয়েছেন।
ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে ২০০৬ সালের যুদ্ধের পর জাতিসংঘ তাদের মিশন সম্প্রসারিত করে এবং সীমান্ত বরাবর তৈরি করা ‘বাফার জোনে’ টহলদারি করতে শান্তিরক্ষীদের অনুমতি দেওয়া হয়।