কেয়া গ্রুপকে জড়িয়ে সাউথইস্ট ব্যাংককে নিয়ে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ
শেয়ারবাজার ডেস্ক : গত (২৮ অক্টোবর) সোমবার বহুল প্রচারিত দৈনিক অনলাইন শেয়ারবাজারনিউজ, কম পত্রিকায় “তিন ব্যাংকের কাছে কেয়া কসমেটিকসের সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকা দাবি” শিরোনামে কেয়া গ্রুপকে জড়িয়ে সাউথইস্ট ব্যাংককে নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
প্রকাশিত “তিন ব্যাংকের কাছে কেয়া কসমেটিকসের সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকা দাবি” শীর্ষক প্রকাশিত সংবাদটি সঠিক নয় বলে দাবি করেছেন সাউথইস্ট ব্যাংক।
এ বিষয়ে সাউথইস্ট ব্যাংকের বক্তব্য নিম্নরুপঃ
গ্রাহকের অভিযোগ হচ্ছে, “প্রত্যাবাসিত রপ্তানিমূল্য গ্রাহকের বৈদেশিক মুদ্রায় রক্ষিত হিসাবে ক্রেডিট করা হয় নাই”। এর প্রেক্ষিতে আমাদের বক্তব্য হচ্ছে, প্রত্যাবাসিত রপ্তানি মূল্য গ্রাহকের সংশ্লিষ্ট হিসাবে স্থানান্তর ব্যতিরেকে ব্যাংকের অন্য কোন হিসাবে জমা রাখার সুযোগ নেই। গ্রাহকের প্রত্যাবাসিত রপ্তানি মূল্য তথা বৈদেশিক মুদ্রা গ্রাহকের হিসাবে স্থানান্তরের পর গ্রাহকেরই দায় সমন্বয়ে ব্যবহৃত হয়েছে। গ্রাহকের অভিযোগের প্রেক্ষিতে, ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষক, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং ব্যাংক কর্তৃক নিযুক্ত বহিঃনিরীক্ষকও তাদের নিরীক্ষা প্রতিবেদনে বৈদেশিক মুদ্রার মাধ্যমে গ্রাহকের বিভিন্ন প্রকার দায় সমন্বয় হয়েছে মর্মে অভিমত ব্যক্ত করেছেন
রপ্তানি গ্রাহকের লেনদেন সম্পাদনের সুবিধার্থে, ব্যাংক স্থানীয় মুদ্রার পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রাতেও হিসাব পরিচালনা করে থাকে। রপ্তানি আয় প্রত্যাবাসন সাপেক্ষে, রপ্তানি-সংশ্লিষ্ট সকল দায় পরিশোধ করে অবশিষ্ট বৈদেশিক মুদ্রা গ্রাহকের বৈদেশিক মুদ্রায় রক্ষিত হিসাবে স্থানান্তর করা হয়। তবে, রপ্তানি- সংশ্লিষ্ট অন্যান্য দায় যেমন প্যাকিং ক্রেডিট, এলটিআর, টাইম লোন, আইডিবিপি, এফডিবিপি, ফোর্সড লোন, টার্ম লোন ইত্যাদি পরিশোধের পর যদি বৈদেশিক মুদ্রা অবশিষ্ট না থাকে, সেক্ষেত্রে স্থানান্তরের কোন বাধ্যবাধকতা নেই। সাউথইস্ট ব্যাংক যথাযথ ব্যাংকিং নিয়মাচার পরিপালন সাপেক্ষে সকল লেনদেন পরিচালনা করেছে এবং সকল তথ্য ব্যাংকের কোর ব্যাংকিং সফটওয়্যারে সংরক্ষিত আছে।
রপ্তানি মূল্যের বিপরীতে ইস্যুকৃত গ্রাহকের সকল ইএক্সপি ফর্মস বাংলাদেশ ব্যাংকের ড্যাশবোর্ডে যথাযথভাবে রিপোর্ট করা হয়েছে। সাউথইস্ট ব্যাংক ২০০৪ সাল থেকে কেয়া গ্রুপের সাথে ব্যাংকিং সম্পর্ক বজায় রেখে আসছে এবং রপ্তানি মূল্য প্রত্যাবাসন ও স্থানান্তর সংক্রান্ত সকল ভাউচার অফিসে সংরক্ষনের পাশাপাশি গ্রাহককেও এর কপি নিয়মিতভাবে প্রদান করেছে; যেখানে বৈদেশিক মুদ্রার স্থানান্তরের সঠিক প্রতিফলন রয়েছে। গ্রাহকেরও নিজস্ব একাউন্টস বিভাগ নিয়মিত সেগুলো তাদের রেকর্ডে সংরক্ষণ করেছে। এমতাবস্থায়, গ্রাহকের উত্থাপিত অভিযোগ সম্পূর্ন ভিত্তিহীন এবং বিভ্রান্তিমূলক।
এছাড়া, গ্রাহকের লেনদেন সংক্রান্ত অভিযোগের বিষয়ে ব্যাংক কর্তৃক একটি বহিঃনিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান নিয়োগ করা হয়েছে, যারা তাদের প্রতিবেদনে গ্রাহকের হিসাবের সকল লেনদেনসমূহ সঠিক ব্যাংকিং নিয়মাচার মেনেই করা হয়েছে মর্মে অভিমত ব্যক্ত করেছেন এবং তাদের প্রতিবেদনে এ সংক্রান্ত কোন অসঙ্গতি পাওয়া যায়নি।
সম্প্রতি, গ্রাহক বিষয়টি বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনকে অবহিত করেছে এবং কমিশনের অনুরোধের প্রেক্ষিতে সাউথইস্ট ব্যাংক প্রয়োজনীয় নথি প্রদানসহ সকল ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছে।
কেয়া গ্রুপ তার ঋণ পরিশোধে সচেতন নয় বলে তার লেনদেন বিবরণী পর্যালোচনা করে প্রতীয়মান হয়েছে। ২০০৪ সাল থেকে গ্রাহক সাউথইস্ট ব্যাংকের সহিত লেনদেন পরিচালনা করে আসছে। হঠাৎ করে, ২০ বছর পর, অর্থাৎ ২০২৩-২৪ সালে এসে “গ্রাহকের বৈদেশিক মুদ্রায় রক্ষিত হিসাবে বৈদেশিক মুদ্রা স্থানান্তর হয় নাই এবং পুরাতন দায়-দেনা নিয়ে অহেতুক বক্তব্য প্রদান” -এ সংক্রান্ত অভিযোগ সম্পূর্ণ কল্পনাপ্রসূত ও দুরভিসন্ধিমূলক।
সাউথইস্ট ব্যাংকের সহিত কেয়া গ্রুপ একটি ঋণখেলাপি প্রতিষ্ঠান। খেলাপি ঋণ আদায়ে ব্যাংকের জোর তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। আমাদের ধারণা,
ঋণ আদায় প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্থ ও বিলম্বিত করার অসৎ উদ্দেশ্যে গ্রাহক এই বিভ্রান্তিমূলক অভিযোগ ছড়িয়ে ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করছেন। সাউথইস্ট ব্যাংক সকলের জন্য একটি সুষ্ঠু ও নিরাপদ আর্থিক ব্যাংকিং পদ্ধতি নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সাউথইস্ট ব্যাংক একটি আধুনিক গ্রাহক
বান্ধব ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংক এবং দেশের প্রচলিত আইন সম্পূর্নরূপে অনুসরণ করে এই ব্যাংক অত্যন্ত স্বচ্ছতার সাথে সার্বিক কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছে।