সিএসইতে কমোডিটি ডেরিভেটিভস বিষয়ক সার্টিফিকেট ট্রেনিং কোর্স শুরু
নিজস্ব প্রতিবেদক: চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জ পিএলসি (সিএসই)-তে আজ থেকে চট্টগ্রামস্থ প্রধান কার্যালয়ে প্রথমবারের মত দুইদিনব্যাপী কমোডিটি ডেরিভেটিভস বিষয়ক একটি সার্টিফিকেট প্রশিক্ষন অনুষ্ঠানের শুভ উদ্ভোধন হয়েছে । এতে সিএসই এবং ডিএসইর ট্রেক-এর সম্মানিত প্রতিনিধিগণ অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানটির ঊদ্ভোধন করেন সিএসইর সম্মানিত চেয়ারম্যান জনাব একেএম হাবিবুর রহমান। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন সিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব এম সাইফুর রহমান মজুমদার, এফসিএ, এফসিএমএ, পরিচালক মেজর (অব) এমদাদুল ইসলাম এবং অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ । এমসিএক্স (মালটি কমোডিটি এক্সচেঞ্জ) ইন্ডিয়া-এর ভাইস প্রেসিডেন্টে এন্ড হেড অব রিসার্চ, দেবজ্যোতি দে অনলাইন প্লাটফর্ম এর মাধ্যমে প্রশিক্ষন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। মূল প্রশিক্ষণে কমোডিটি এক্সচেঞ্জ বিষয়ক রেগুলেটরি, বিজনেস এবং টেকনোলজি বিষয়ক উপস্থাপনা প্রদান করেন কনভেনার, কমোডটি এক্সচেঞ্জ প্রোজেক্ট, জনাব মোঃ মরতুজা আলম, এবং কমোডটি এক্সচেঞ্জ প্রোজেক্ট সদস্য জনাব মোঃ ফয়সাল হুদা, ম্যানেজার, জনাব মোহাম্মাদ হাবিবুল্লাহ এবং জনাব নাহিদ আফরোজ ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিএসইর চেয়ারম্যান জনাব একেএম হাবিবুর রহমান বলেন, সিএসই বাংলাদেশে প্রথম কমোডিটি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠার কাজটি করছে এবং এজন্য প্রয়োজনীয় তিনটি অংশের মধ্যে রেগুলেটরি এবং কারিগরি অংশের কাজ শেষের দিকে, তৃতীয় অংশ মার্কেট ডেভেলপমেন্ট, সেটাও চলমান। তারই ধারাবাহিকতায় বেশ কিছু সচেতনতামূলক অনুষ্ঠান এবং প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। সেই প্রেক্ষাপটে আজকের এই সার্টিফিকেট প্রদান অনুষ্ঠানটি নতুন মাত্রা যোগ করতে যাচ্ছে । প্রশিক্ষণেরও তিনটি উদ্দেশ্য থাকে প্রথমত নিজের দক্ষতাকে আরও উন্নিত করা, জ্ঞানকে বর্ধিত করা এবং এটিচুউড পরিবর্তন করা । আজকের এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আপনারা যেমন ট্র্যাডিশনাল মার্কেট এবং কমোডিটি মার্কেট এর পার্থক্য বুঝতে পারবেন, তেমনি একই সাথে নতুন মার্কেটে অংশগ্রহণের প্রক্রিয়ায় এগিয়ে যাবেন। আমাদের প্রচেষ্টা থাকবে এই প্রশিক্ষন কার্যক্রমগুলিকে সংশ্লিষ্ট স্টেকদেরকে যুক্ত করে আরও প্রাণবন্ত ও আকর্ষণীয় করে তোলা। আপনারা যারা আজকের এই প্রশিক্ষন কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করছেন আমরা আশা করবো আপনারাই হবেন কমোডিটি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠার পর অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে প্রথম সারিতে। আমি এই অনুষ্ঠানটিতে আপনাদের সাথে যুক্ত হতে পেরে গর্ববোধ করছি এবং আমি আশা করছি আমরা খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে অত্যন্ত সুন্দরভাবে এক্সচেঞ্জ স্থাপনের কাজটি সম্পন্ন করতে পারবো । আর এর মাধ্যমে আমরা একটি গতিশীল পুঁজিবাজারও গঠন করতে পারবো ।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সিএসইর পরিচালক মেজর (অব) এমদাদুল ইসলাম বলেন, আমাদের বাংলাদেশ কোটি কোটি মানুষের দেশ এবং বিপুল সম্ভাবনাময় অথচ পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত, নেপাল বা পাকিস্তান থেকে এখনো পিছিয়ে আছে কমোডিটি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠার দিক দিয়ে। আজ কমোডিটি এক্সচেঞ্জ থাকলে পন্যের সঠিক এবং যৌক্তিক মূল্য পাওয়া যেত এবং মুল্যের এত উঠানামা হত না । এতে করে ভোক্তা থেকে উৎপাদনকারী সবাই উপকৃত হত। কজেই আমাদের অর্থনীতির জন্য এই কমোডিটি এক্সচেঞ্জের প্রতিষ্ঠা এবং এর কার্যক্রম শুরু করা অতিব জরুরী। আমরা সিএসই আজ এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠার জন্য আরেক ধাপ এগিয়ে গেলাম কারন এই প্রশিক্ষণটিও প্রথম হিসেবে ইতিহাসের অংশ হয়ে গেল, একই সাথে আপনারাও প্রথম প্রশিক্ষন গ্রহণকারী হিসেবে ইতিহাসের অংশীজন হলেন। আপনাদের অনুরোধ করবো যে, খুব গুরুত্ব আর মনোযোগ দিয়ে প্রশিক্ষণটি সম্পন্ন করবেন যেন পরবর্তীতে এই জ্ঞান আপনি কাজে লাগাতে পারেন।
সিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব এম সাইফুর রহমান মজুমদার, এফসিএ, এফসিএমএ বলেন, আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে অনেক আগ থেকেই সুগঠিত ও সুপ্রতিষ্ঠিত কমোডিটি ডেরিভেটিবস এক্সচেঞ্জ রয়েছে। তারপরও এক্সচেঞ্জগুলো এবং প্রতিষ্ঠিত ব্রোকাররা নিয়মিত প্রশিক্ষনের আয়োজন করেন । এই প্রশিক্ষনগুলোর দুটি দিক আছে প্রথমত নতুন নতুন পরিবর্তনগুলো জানানো এবং দ্বিতীয়ত নতুন জেনারেশনকে প্রস্তুত করা । ইতিমধ্যে সিএসই কমোডিটি এক্সচেঞ্জ স্থাপনের জন্য প্রযুক্তিগত অবকাঠামো তৈরির কাজ প্রায় শেষ করেছে এবং সংশ্লিষ্ট রেগুলেশন অনুমোদনের জন্য বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে জমা দিয়েছে যা খুব শীঘ্রই অনুমোদন পাবে বলে আশা করছি। এখন গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো মার্কেট এবং মার্কেট সংশ্লিষ্ট অংশগ্রহণকারীদের উপযুক্তভাবে তৈরি করা অর্থাৎ যারা এক্সচেঞ্জের সাথে যুক্ত হবেন তাদেরকে সঠিকভাবে প্রস্তুতের জন্য বিভিন্ন ধরনের সচেতনতামূলক অনুষ্ঠান এবং ট্রেনিং-এর ধারাবাহিক কার্যক্রম অব্যাহত রাখা । গত দুই বছর ধরে সে লক্ষ্যে সিএসই টিম সচেতনতামূলক বিভিন্ন ধরনের নিয়মিত কার্যক্রম ধারাবাহিকভাবে পরিচালনা করছে । আজকে শুরু হতে যাচ্ছে প্রাতিষ্ঠানিক প্রশিক্ষন, কারন এই প্রশিক্ষণ শেষে প্রতিটি অংশগ্রহণকারীদেরকে যে সার্টিফিকেট প্রদান করা হবে যা তাকে পরবর্তীতে তার প্রতিষ্ঠানে এমনকি বাজার প্রস্তুতির প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ করে তুলবে । অর্থাৎ মার্কেট প্রস্তুতির কাজটি এতই ব্যাপক যে, সিএসইর একার পক্ষে সম্ভব ন। বিনিয়োগকারী পর্যন্ত পৌঁছাত গেলে আপানরাই হবেন মধ্যজন যারা প্রথম প্রশিক্ষণগ্রহণকারী হিসেবে পরবর্তী জনকে প্রশিক্ষণ দিবেন। এই দীর্ঘ প্রক্রিয়াতে আপানাদের স্বাগতম এবং আমরা আশা করছি সবার সার্বিক এবং স্বতঃস্ফূর্ত সহযোগিতায় খুব অল্প সময়ে একটি সুগঠিত কমোডিটি এক্সচেঞ্জ স্থাপনের কাজটি আমরা দক্ষতার সাথে সম্পন্ন করতে পারবো ।