বেসিক ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যানসহ পরিবারের ৫ সদস্যকে আদালতে হাজিরের নির্দেশ
শেয়ারবাজার ডেস্ক : বেসিক ব্যাংকের প্রায় ৯৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলায় ব্যাংকটির সাবেক চেয়ারম্যান শেখ আবদুল হাই বাচ্চু ও তার পরিবারের চার সদস্যকে আগামী দুই জানুয়ারির মধ্যে আদালতে হাজিরের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পরিবারের চার সদস্য হলেন- বাচ্চুর স্ত্রী শিরিন আক্তার, ভাই শেখ শাহরিয়ার পান্না, ছেলে শেখ রাফা হাই ও শেখ সাবিত হাই অনিক।
ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতের বিচারক জাকির হোসেন এই আদেশ দেন। এর আগে বনানী থানা পুলিশের প্রতিবেদনে বলা হয়, অভিযুক্তরা পলাতক থাকায় তাদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।
গত ১২ সেপ্টেম্বর একই আদালত এ মামলার অভিযোগপত্রে বাচ্চু ও তার পরিবারের চার সদস্যকে পলাতক দেখিয়ে তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। বাচ্চুসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ আমলে নিয়ে আদালত এ আদেশ দেন।
এই মামলার আরেক আসামি লা মেরিডিয়ান ঢাকার মালিক আমিন আহমেদ বর্তমানে জামিনে আছেন। এ মামলায় আত্মসমর্পণ করার পর ১০ জুলাই আমিনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছিল।
গত ২৭ মে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ নেয়ামুল আহসান গাজী বাদী হয়ে বাচ্চু, তার স্ত্রী শিরিন আক্তার, আমিন আহমেদসহ চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
গত বছরের ২ অক্টোবর দুদকের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ নুরুল হুদা ঢাকা-১ সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলাটি করেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, বাচ্চু আমিন আহমেদের কাছ থেকে ১১০ কোটি টাকায় ৩০ দশমিক ২৫ কাঠা জমি কিনলেও দুটি দলিলে সম্পত্তির মূল্য দেখানো হয় ১৫ কোটি ২৫ লাখ টাকা। জমির দাম বাজার মূল্যের চেয়ে কম দেখানো হয়েছে তা নিশ্চিত করতে আমিন সহায়তা করেছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
পরে বাচ্চু তার স্ত্রী শিরিন ও ছেলে রাফা ও অনিকের কাছে জমি হস্তান্তর করেন।
মামলার এজাহারে আরও বলা হয়, বাচ্চু তার অবৈধ আয় ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন এবং রেজিস্ট্রেশনে জমির মূল্য ৯৪ কোটি ৭৫ লাখ টাকা কম দেখিয়ে সরকারকে আট কোটি ৫২ লাখ টাকার বেশি রাজস্ব থেকে বঞ্চিত করেন।
গত বছরের ১২ জুন দুই হাজার ২৬৫ কোটি টাকা আত্মসাতের ৫৯টি মামলায় বাচ্চুসহ ১৪৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় দুদক।
তবে ২০০৯ থেকে ২০১৩ সালের মধ্যে চলা অর্থ আত্মসাতের সময় ব্যাংকটির দায়িত্বে থাকা তৎকালীন বোর্ড সদস্যদের অভিযুক্ত করেনি কমিশন।
২০০৯ থেকে ২০১৩ সালের মধ্যে এই ব্যাংক থেকে সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়া হয়। এরমধ্যে ৯৫ শতাংশের বেশি ঋণ বোর্ডই অনুমোদন দিয়েছে।
২০১৫ সালে এই কেলেঙ্কারির ঘটনায় দুদক ৫৬টি মামলা করলেও তখন বাচ্চু বা বোর্ড সদস্যদের কাউকেই আসামি করা হয়নি।