আজ: শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪ইং, ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৮ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

০৬ নভেম্বর ২০২৪, বুধবার |

kidarkar

এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ নিয়ে বিএসইসির তদন্ত কমিটি গঠন

নিজস্ব প্রতিবেদক : পুঁজিবাজারে ওষুধ ও রসায়ন খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ লিমিটেডের প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সংগৃহীত অর্থের ব্যবহার এবং বিগত ৬ বছরের আর্থিক প্রতিবেদন খতিয়ে দেখতে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। গঠিত তদন্ত কমিটিকে আগামী ৬০ দিনের মধ্যে এ সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন কমিশনে দাখিল করতে নির্ধশ দেওয়া হয়েছে।

সম্প্রতি এ সংক্রান্ত একটি আদেশ জারি করা হয়েছে বলে বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে।

গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্যরা হলেন- বিএসইসির অতিরিক্ত পরিচালক মো. আল মাসুম মির্ধা, বিএসইসির সহকারী পরিচালক মোসাব্বির আল আশিক এবং ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্যবস্থাপক স্নেহাশিষ চক্রবর্তী।

বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, গঠিত তদন্ত কমিটি ২০১৭ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজের আর্থিক রেকর্ড পর্যালোচনা করবে এবং আইপিওর অর্থ কীভাবে ব্যবহার করা হয়েছিল তা তদন্ত করবে। কোনো অনিয়ম পাওয়া গেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তথ্য মতে, মিথ্যা জমির মালিকানা দাবি, ভুল আর্থিক এবং জালিয়াতি শেয়ার মানি ডিপোজিটের অভিযোগ উঠায় ২০২২ সালের জানুয়ারিতে আইপিও সাবস্ক্রিপশন প্রক্রিয়াটি স্থগিত করা হয়েছিল। পরে তদন্তে জাল জমির মালিকানা নথি, ভুল আর্থিক বিবরণী এবং জালিয়াতি শেয়ার মানি ডিপোজিটের প্রমাণ পাওয় যায়। এরই ধরাবাহিকতায় বিএসইসি এশিয়াটিক ল্যাবরেটরির প্রত্যেক পরিচালক ও ইস্যু ম্যানেজারকে ৫০ লাখ টাকা করে জরিমানা করে। এছাড়া, ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনির আহমেদ, প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা এবং কোম্পানি সচিবকে ২৫ লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।

গত মঙ্গলবার পর্যন্ত ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজের শেয়ার সর্বশেষ লেনদেন হয়েছে ৩৪.৫০ টাকায়। সর্বশেষ ২০২৪ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাব বছরে কোম্পানিটির পরিচালন পর্ষদ স্পনসর এবং পরিচালকদের বাদে সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ প্রদানের ঘোষণা দিয়েছে। সর্বশেষ হিসাব বছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে ২.৮২ টাকা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে কোম্পানিটি শেয়ারপ্রতি মুনাফা ছিল ২.১৯ টাকা। গত ৩০ জুন, ২০২৪ তারিখে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৩৯.৩১ টাকা। আগামী ১৯ ডিসেম্বর, বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় হাইব্রিড পদ্ধতিতে কোম্পানিটির বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হবে। এর জন্য রেকর্ড তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ২০ নভেম্বর।

এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ ট্যাবলেট, ক্যাপসুল, ওরাল লিকুইড, সাসপেনশনের জন্য পাউডার, চক্ষু চিকিৎসা, ইনজেকশন এবং অন্যান্য ফার্মাসিউটিক্যাল আইটেম সহ সারা বাংলাদেশে ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্য (মানুষের ব্যবহারের জন্য) উৎপাদন, বিক্রয় এবং বিতরণ করে থাকে।

প্রসঙ্গত, বিএসইসির ৮৩৭তম কমিশন সভায় এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজের বুক বিল্ডিং পদ্ধতির আইপিও অনুমোদন দেওয়া হয়। আইপিওর মাধ্যমে শেয়ারবাজার থেকে ৯৫ কোটি টাকার মূলধন সংগ্রহ করবে কোম্পানিটি। এজন্য গত বছরের ১৬ থেকে ২২ জানুয়ারি পর্যন্ত পাবলিক সাবস্ক্রিপশনের সময়সীমা নির্ধারিত ছিল। ওই বছরের ১০ থেকে ১৩ অক্টোবর কোম্পানির শেয়ারের কাট-অব প্রাইস (প্রান্তসীমা মূল্য) নির্ধারণে বিডিং অনুষ্ঠিত হয়। বিডিংয়ে যোগ্য বিনিয়োগকারীরা (ইআই) কোম্পানির শেয়ারের প্রান্তসীমা মূল্য ৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে প্রান্তসীমা মূল্যের চেয়ে ৩০ শতাংশ বা ২০ টাকা এ দুইয়ের মধ্যে যেটি কম হবে, সে মূল্যে শেয়ার ইস্যু করার শর্ত দিয়েছিল বিএসইসি। চলতি বছরের ৫ মার্চ থেকে পুঁজিবাজারে কোম্পানিটির লেনদেন চালু হয়।

আইপিওর মাধ্যমে সংগ্রহিত অর্থে কোম্পানিটি ব্যবসা সম্প্রসারণ, উৎপাদন ভবন নির্মাণ, ব্যাংক ঋণ পরিশোধ ও ইস্যু ব্যবস্থাপনা খরচ খাতে ব্যয় করবে বলে জানিয়ে ছিল কোম্পানি কর্তৃপক্ষ। কোম্পানির ইস্যু ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালন করেছে শাহজালাল ইকুইটি ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.