আফগানিস্তানের বিপক্ষে বিকেলে মাঠে নামছে বাংলাদেশ
স্পোর্টস ডেস্ক : ১৮ ম্যাচের ১১টিতেই জয়, হার ৭টিতে। পরিসংখ্যান বাংলাদেশকে এগিয়ে রাখলেও আফগানিস্তানের বিপক্ষে খেলতে নামা মানেই যেন বাংলাদেশের জন্য স্নায়ুচাপের লড়াই। বিগত কয়েক বছর ধরেই দুই দলের মাঝে লড়াই চলছে সমানে সমান। একসময় বাংলাদেশের বিপক্ষে আফগানিস্তানের জয় কিছুটা অঘটন ভাবা হলেও, সাম্প্রতিক সময়ে দুই দলের লড়াই অনেকটাই সমানে সমান।
শারজাহতে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজেও আছে সেই সমানে-সমান লড়াইয়ের উত্তাপ। প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ হেরেছে ৯২ রানের ব্যবধানে। আর পরের ম্যাচে তারাই জয় পেয়েছে ৬৮ রানের ব্যবধানে। শারজাহ স্টেডিয়ামে টস একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে উঠেছে, সেই টসভাগ্যকে এই ম্যাচেও পাশে চাইবে বাংলাদেশ। যদিও টস করার সময় আজ বাংলাদেশ নিয়মিত অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তকে পাবে কি না তা নিয়ে আছে শঙ্কা।
আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের শেষ ও তৃতীয় ওয়ানডেতে অনিশ্চিত নাজমুল হোসেন শান্ত। বাংলাদেশ অধিনায়কের খেলা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। মূলত চোটের কারণে তার মাঠে নামা নিয়ে ধোয়াশা তৈরি হয়েছে। দ্বিতীয় ম্যাচে খেলার সময় চোটে পড়েছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। শট কাভারে ফিল্ডিং করতে গিয়ে কুচকিতে ব্যথা পেয়ে মাঠ ছেড়েছিলেন টাইগার অধিনায়ক। পরে মাঠে বাকিটা সময় অধিনায়কত্ব করেন মেহেদী হাসান মিরাজ।
কুচকির সেই চোট এখনও পুরোপুরো কাটিয়ে উঠতে পারেননি শান্ত। তার চোটের সবশেষ অবস্থা নিয়ে বিসিবির প্রধান চিকিৎসক দেবাশীষ চৌধুরির ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘আজকে একটা এমআরআই করার কথা রয়েছে সেটা হলেই জানা যাবে বিস্তারিত।’ শান্ত খেলতে না পারলে শেষ ম্যাচে অধিনায়কত্ব করতে দেখা যাবে মেহেদী হাসান মিরাজকে। আর শান্তর জায়গায় একাদশে সুযোগ মিলতে পারে টপ অর্ডার ব্যাটার জাকির হাসানের।
অস্বস্তি আছে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ আর তাওহীদ হৃদয়কে নিয়ে। মিডল অর্ডারে দুই ভরসার নামই প্রথম দুই ম্যাচে হয়েছেন ব্যর্থ। এদের মধ্যে রিয়াদের ব্যর্থতার গল্পটা আলাদা করে বলতেই হচ্ছে। শেষ ৪ ম্যাচে তার রান ০, ১, ২, ৩।
৩৮ বছরের মাহমুদউল্লাহর জন্য তার রিফ্লেক্স আর জাজমেন্টের ক্ষমতা। স্ট্যামিনা এবং টাইমিংয়ে প্রভাব পড়ছে ব্যাপক আকারে। ব্যাটে-বলে ঠিকঠাক সংযোগ না হওয়া কিংবা বল বুঝতে না পারায় ভুগছেন তিনি। এমন দিনে মানসিক চাপ বাড়তেই পারে। সিরিজের শেষ ম্যাচে তার ওপর নির্ভরশীলতা থাকবে স্বাভাবিক। যদিও মাহমুদউল্লাহ সেই প্রত্যাশা মেটাতে পারবেন কি না তা বড় প্রশ্ন।
আফগানিস্তানের সামনে এই ম্যাচটা সমতায় ফেরার সুযোগ। দ্বিপাক্ষিক সিরিজের হিসেবে দুই দলের মধ্যেকার ১১ ম্যাচে বাংলাদেশ জিতেছে ৬টি, বাকি ৫টি জয় আফগানিস্তানের। সিরিজ জয় বাংলাদেশের বেশি, তবে সেখানেও ব্যবধান মাত্র ২–১–এর। এই ম্যাচ জিতলে দ্বিপাক্ষিক সিরিজে বাংলাদেশ-আফগানিস্তান যেমন সমানে সমান হবে, তেমনি সিরিজ সংখ্যাতেও দুই দল হবে সমানে সমান।
দুই দলের মধ্যেকার সবশেষ সিরিজটা অবশ্য গিয়েছে আফগানিস্তানের ঘরে। গত বছরের জুলাইয়ে দুই দলের মধ্যে চট্টগ্রামে হওয়া সর্বশেষ সিরিজটা বাংলাদেশের জন্য ভালো কাটেনি। এর আগে ২০১৬ ও ২০২২ সালের আগের দুটি সিরিজ ছিল বাংলাদেশের পক্ষে। এবার ঠিক কোন ইতিহাস ফিরে আসে, সেটা দেখার জন্য অপেক্ষা করতে হবে ৫০ ওভারের লড়াইয়ের শেষ পর্যন্ত।
অবশ্য এই ম্যাচের আগে বাংলাদেশ কিছুটা আত্মবিশ্বাসী থাকছে সেটা নিশ্চিত। সৌম্য সরকার রান পাচ্ছেন। মিডল অর্ডারে জাকের আলী অনিক নিজের অভিষেক ম্যাচেই দিয়েছেন আস্থার প্রতিদান। লোয়ার মিডল অর্ডারে গত ম্যাচে নাসুম আহমেদ হয়েছেন ত্রাতা। একবছর পর ফিরে এসে ব্যাটে-বলে ছিলেন উজ্জ্বল। বোলিং ইউনিট দুই ম্যাচেই নিজেদের প্রমাণ করেছে। ৬৮ রানের জয়টা শারজাহ স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের প্রথম জয়ের ম্যাচ। মাত্র একদিন আগেই হয়ে যাওয়া সেই ম্যাচটা নিশ্চিতভাবেই আত্মবিশ্বাস জোগাবে টিম টাইগার্সদের।