আজ: বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪ইং, ২৯শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

১৪ নভেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার |

kidarkar

ইতিবাচক ধারায় সঞ্চয়পত্র

শেয়ারবাজার ডেস্ক : চলতি অর্থবছরের শুরু (জুলাই) থেকে ইতিবাচক ধারা ফিরে আসে জাতীয় সঞ্চয়পত্র বিক্রিতে। অর্থবছরের তৃতীয় মাস সেপ্টেম্বরেও সে ধারা অব্যাহত ছিল। এ সময়ে মানুষ সঞ্চয়পত্র ভাঙার চেয়ে কিনেছেন বেশি। গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের অধিকাংশ সময়েই যেটা নেতিবাচক ধারায় ছিল।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদন বলছে, চলতি ২০২৪-২৫ সালের তৃতীয় মাস সেপ্টেম্বরে সঞ্চয়পত্র বিক্রির ইতিবাচক ধারা অব্যাহত ছিল। এ মাসে আগের সুদ-আসল পরিশোধ করেও ৪ হাজার ১০৯ কোটি টাকা ইতিবাচক ছিল। আর চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে (জুলাই-আগস্ট-সেপ্টেম্বর) আগের আসল-সুদ পরিশোধ করেও ৮ হাজার ৩৩২ কোটি টাকা ইতিবাচক দেখা গেছে।

গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের তৃতীয় মাস সেপ্টেম্বরে সঞ্চয়পত্র বিক্রির ধারা ছিল নেতিবাচক। ওই সময়ে বিক্রির চেয়ে আগের সুদ-আসল বাবদ বেশি পরিশোধ করতে হয়েছিল ১৪৭ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। একই অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) বিক্রির চেয়ে আগের সুদ-আসল বাবদ বেশি পরিশোধ করতে হয়েছিল ১ হাজার ২৬৪ কোটি টাকা।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় মাস আগস্টেও সঞ্চয়পত্র বিক্রি ইতিবাচক ধারায় ছিল। ওই মাসে আগের সুদ-আসল পরিশোধ করেও ২ হাজার ৩৬ কোটি টাকা ইতিবাচক ছিল। এমনকি চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়েও সঞয়পত্র বিক্রি ছিল ইতিবাচক ধারায়। ওই মাসে আগের সুদ-আসল পরিশোধ করেও ২ হাজার ১৮৭ কোটি ৫৬ লাখ টাকা ইতিবাচক ছিল।

গত অর্থবছরের শেষ মাস জুনে সঞ্চয়পত্র নিট বিক্রি (ঋণাত্মক) ৩ হাজার ৩৮১ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। অর্থাৎ বিক্রির চেয়ে আগের সুদ-আসল বাবদ ৩ হাজার ৩৮১ কোটি ৪৩ লাখ টাকা বেশি পরিশোধ করতে হয়েছে।

খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মানুষ এখন সঞ্চয়পত্রকে বেশি নিরাপদ মনে করছেন। কিছু ব্যাংক গ্রাহকের আমানতের টাকা ফেরত দিতে না পারায় এমনটা হয়েছে। এ কারণে মানুষ বাড়তি টাকায় সঞ্চয়পত্র কিনছে।

২০২৩-২৪ অর্থবছরের ১২ মাসে (জুলাই-জুন) সঞ্চয়পত্র নিট বিক্রি ঋণাত্মক ধারায় হয়েছে। গত অর্থবছরের ১২ মাসে আগের আসল ও সুদ বাবদ ২১ হাজার ১২৪ কোটি ৩৮ লাখ টাকা বিক্রির চেয়ে আগের সুদ-আসল বাবদ বেশি পরিশোধ করতে হয়েছে। অর্থাৎ গত অর্থবছরের প্রথম দুই মাস (জুলাই-আগস্ট) সঞ্চয়পত্র বিক্রির ধারা ইতিবাচক ছিল। এরপর সেপ্টেম্বর থেকে টানা নেতিবাচক ধারায় চলে যায় সঞ্চয়পত্র বিক্রি। যেটা অর্থবছরের শেষ মাস জুন পর্যন্ত চলে।

তথ্যমতে, গত অর্থবছরের প্রথম দুই মাস (জুলাই-আগস্ট) সঞ্চয়পত্র নিট বিক্রি ৫ হাজার ৫৬২ কোটি টাকা ইতিবাচক ছিল। এরপর থেকে টানা নিট বিক্রি ঋণাত্মক হতে থাকে। গত অর্থবছরের সেপ্টেম্বরে ঋণাত্মক হয় ১৪৭ কোটি, অক্টোবরে ১ হাজার ৪০ কোটি, নভেম্বরে ১ হাজার ৫৫৪ কোটি, ডিসেম্বরে ২ হাজার ২০৪ কোটি, জানুয়ারিতে ১ হাজার ২৮৭ কোটি, ফেব্রুয়ারিতে ১ হাজার ৫৪১ কোটি, মার্চে ৩ হাজার ৬৫৩ কোটি, এপ্রিলে ২ হাজার ১০৩ কোটি ও মে মাসে ৩ হাজার ৯৪ কোটি টাকা ঋণাত্মক হয়।

অন্যদিকে সঞ্চয়পত্র বিক্রির পরিমাণ কমবে, তা আন্দাজ করেই সরকার ঋণ নেওয়া কমিয়ে দেয়। গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র বিক্রি করে সরকারের নিট ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ১৮ হাজার কোটি টাকা। যা আগের ২০২২-২৩ অর্থবছরে এই লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৫ হাজার কোটি টাকা। আর সংশোধিত বাজেটে তা কমিয়ে ৩২ হাজার কোটি টাকা করা হয়েছিল। ওই পুরো অর্থবছরের শেষে নিট বিক্রি ঋণাত্মক হয়ে দাঁড়ায় ৩ হাজার ২৯৫ কোটি টাকা। আর চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র থেকে ১৫ হাজার ৪০০ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সরকার।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.