আজ: শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ইং, ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৯শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

১৪ নভেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার |

kidarkar

চ্যালেঞ্জে প্রচলিত ব্যাংকিং, জেনজি গ্রাহক টানতে ভরসা এআই ব্লকচেইন?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: জেনারেটিভ আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা জেন এআই, ব্লকচেইন এবং ক্লাউড কম্পিউটিংয়ের মতো নতুন প্রজন্মের প্রযুক্তি প্রচলিত ব্যাংকিং এবং ব্যবসায়িক মডেলকে বিশাল চ্যালেঞ্জে ফেলেছে। সম্প্রতি ভারতের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ব্যাংকিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স (আইআইবিএফ)-এর গবেষণা প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এই তথ্য।

তবে যুগের চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে নতুন এসব প্রযুক্তির সঙ্গে দ্রুত খাপ খাইয়ে নিয়ে ব্যাংকিং ও বাণিজ্যিক খাত নিজেদের কার্যক্রমকে আরও উন্নত করতে পারে বলেও পরামর্শ উঠে এসেছে এই প্রতিবেদনে।

এ ব্যাপারে ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রাজনিশ কর্নাটক ভারতের বাণিজ্য বিষয়ক সংবাদমাধ্যম দি হিন্দু বিজনেস লাইনকে বলেন, ‘জেনএআই, ব্লকচেইন ও ক্লাউড কম্পিউটিংয়ের মতো প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন ভবিষ্যতে প্রচলিত ব্যাংকিং কার্যক্রম এবং বাণিজ্যিক মডেলকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলবে। যদিও নির্ভরশীলতা এবং আস্থার জায়গা থেকে এখনও পুরানো ব্যাংকিং পদ্ধতি অনন্য, তবে আমরা এই নতুন প্রজন্মের প্রযুক্তিগুলো আমাদের দৈনিন্দিন কার্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করার মাধ্যমে আমরা আমাদের সেবাকে আরও সহজ ও উন্নত করতে পারি।’

বর্তমানে ভারতের জনসংখ্যার যে চিত্র তাতে এর উল্লেখযোগ্য অংশ এখন ’জেন জি’ বা ’মিলেনিয়ালস’, যারা দেশটির দ্রুত বর্ধনশীল ভোক্তা শ্রেণি হিসেবে পরিচিত। আর এই প্রযুক্তি ব্যবহারে অভ্যস্ত নতুন প্রজন্মের ভোক্তাদের পছন্দ এবং চিন্তাভাবনা প্রচলিত ভোক্তা-শ্রেণি থেকে অনেকটাই আলাদা বলে উল্লেখ করেন রাজনেশ কর্নাটক।

এই ধরনের গ্রাহকদের আকৃষ্ট করতে ব্যাংকগুলোকে তাদের গ্রাহক আকর্ষণের কৌশলের পরিকল্পনাকে নতুন করে সাজাতে হবে। এর অন্যতম উপায় হতে পারে- সেবা প্রদানে বেশি সম্ভব ডিজিটাল পদ্ধতির আত্মস্থকরণ। তবে এ ধরনের সেবা দিতে ব্যাংক এবং বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ডাটা সাইন্স এবং মডেলিং টুলস এ দক্ষ জনশক্তির নিয়োগ আরও বেশি করে দিতে হবে বলে উল্লেখ করেন রাজনেশ।

অবশ্য এ ধরনের ডিজিটালাইজেশন যত বৃদ্ধি পাবে সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ ও ঝুঁকিও এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়বে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

বিশ্লেষকরা বলছেন, বর্তমানে সাইবার নিরাপত্তা ঝুঁকি আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে। পাশাপাশি সাইবার স্পেস বর্তমানে রূপান্তরিত হয়েছে প্রতিদ্বন্দ্বী রাষ্ট্রগুলোর ভূ-রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে। ফলে বাড়ছে সাইবার হামলার ঘটনা।

এছাড়া ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকেও মোকাবেলা করতে হচ্ছে সাইবার জালিয়াতি ও হ্যাকিংয়ের মতো সাইবার আক্রমণকে। তবে সাইবার ঝুঁকি মোকাবেলায় ব্যাংক ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে অবশ্যই সাইবার হুমকি সামাল দিতে সক্ষম প্রশিক্ষিত কর্মীর সংখ্যা বাড়াতে হবে, তাদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে বলেও মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

ব্যাংক অব বরোদার প্রধান নির্বাহী দেবদত্ত চান্দ বলেন, যখন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ব্লকচেইন, এআই-এর মতো নতুন প্রজন্মের প্রযুক্তিগুলোর সঙ্গে দ্রুত খাপ খাইয়ে নেয়ার চেষ্টা করছে, তখন একইসঙ্গে তাদের আন্তর্জাতিক আর্থিক ব্যবস্থার সঙ্গে সংযুক্ত থাকার সম্ভাব্য ঝুঁকি এবং অনিশ্চয়তাকেও মোকাবেলা করতে হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, এ ধরনের পরিস্থিতির স্বাভাবিক কারণ অর্থনীতি সম্প্রসারণ হচ্ছে এবং এক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধির গতি সবসময় মসৃণ নয়। এখানে বিভিন্ন ধাপে ওঠানামা রয়েছে। এ পরিস্থিতিতে ব্যাংকগুলোকে দ্রুত খাপ খাইয়ে নেয়ার সামর্থ্য দেখাতে হবে। পাশাপাশি নিজেদের সুসময়েও তাদের সতর্ক থাকতে হবে যেন ব্যবসার খারাপ সময়কে তারা সহজেই মোকাবেলা করতে পারে।

তবে জেন এআই-এর মতো প্রযুক্তির যুগে তৈরি হওয়া চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ব্যাংকগুলো তাদের আইটি খাতের বাজেট বাড়াতে হচ্ছে বলে লন্ডনভিত্তিক কনসালটেন্সি প্রতিষ্ঠান আর্নস্ট অ্যান্ড ইয়ং গ্লোবাল-এর প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। এর মাধ্যমে নতুন নতুন প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন ও বিজনেস মডেলের সঙ্গে নিজেদের কার্যক্রমের খাপ খাইয়ে নেয়ার চেষ্টা করছেন তারা।

নতুন প্রজন্মের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে ব্যাংক ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রতিনিয়তই এআই প্রযুক্তির ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। এর জন্য ব্যবহারিক কার্যক্রম, গ্রাহক সেবা এবং প্রতিষ্ঠানের প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করতে ব্যাংকগুলোকে নতুন নতুন বেঞ্চমার্কের সঙ্গে অভ্যস্ত হতে হচ্ছে বলেও উল্লেখ করা হয় ওই প্রতিবেদনে।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.