আজ: সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪ইং, ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৯শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

১৫ নভেম্বর ২০২৪, শুক্রবার |

kidarkar

পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশে জাহাজ আসায় উদ্বিগ্ন ভারত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পাকিস্তানের করাচি থেকে গত সপ্তাহে একটি পণ্যবাহী জাহাজ সরাসরি চট্টগ্রাম বন্দরে নোঙর করে। যা ১৯৭১ সালের পর প্রথম কোনো পাকিস্তানি পণ্যবাহী জাহাজের বাংলাদেশে নোঙর করার ঘটনা।

আর পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশে জাহাজ আসার ঘটনায় গভীর উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে ভারতের নিরাপত্তা বাহিনী। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টেলিগ্রাফ ইন্ডিয়া শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, ভারতের পূর্ব ও পশ্চিমাঞ্চলের দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে সরাসরি সামুদ্রিক সংযোগ ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে (সেভেন সিস্টার্স) সম্ভাব্য অস্থিরতা তৈরির কাজে ব্যবহার করা হতে পারে। কারণ বাংলাদেশ সীমান্তের খুব কাছে এই রাজ্যগুলো অবস্থিত।

সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে আরও দাবি করা হয়েছে, শেখ হাসিনার পতনের পর ক্ষমতায় আসা অন্তর্বর্তী সরকার পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্য কার্যক্রম বাড়াতে আগ্রহী। আর তাদের আশা সরাসরি সামুদ্রিক পথের মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য বাড়বে। ২০২৩ সালে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ ৮০০ মিলিয়ন ডলারেরও কম ছিল।

একটি সূত্র সংবাদমাধ্যমটিকে বলেছেন, “চট্টগ্রাম ও মংলা বাংলাদেশের প্রধান দুই বন্দর। গত পাঁচ দশকে এখানে পাকিস্তান জায়গা পায়নি। দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য হতো সিঙ্গাপুর ও কলম্বোর মাধ্যমে।”

“কিন্তু এখন পাকিস্তানি জাহাজ সরাসরি চট্টগ্রাম বন্দরে আসবে। আপনি বলতে পারবেন না পাকিস্তান থেকে চট্টগ্রামে নিষিদ্ধ জিনিস (অস্ত্র) আসবে না। আর সেগুলো সশস্ত্র গোষ্ঠীর হাতে যাবে না।”

তিনি ২০০৪ সালের অস্ত্র উদ্ধারের উল্লেখ করে দাবি করেন, পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা ট্রলারে করে আসামের বিচ্ছিন্নতাবাদী দল উলফার জন্য ১ হাজার ৫০০ চাইনিজ অস্ত্র পাঠিয়েছিল। কিন্তু সেগুলোর উলফার হাতে যাওয়ার আগেই জব্দ করা হয়।

সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারত সাবেক স্বৈরাচার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ব্যবহার করে বাংলাদেশের এ দুটি বন্দর থেকে চীনকে দূরে রেখেছিল।

ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর একটি সূত্র বলেছেন, “গত বছর মংলা পোর্টের টার্মিনাল পরিচালনার দায়িত্ব পেয়ে চীনের ওপর একটি কৌশলগত জয় পেয়েছিল ভারত। কিন্তু এখন পাকিস্তান চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহারের সুযোগ পেয়েছে। এই বিষয়টি অবশ্যই এই অঞ্চলের ভূরাজনীতির ওপর প্রভাব ফেলবে। কারণ মিয়ানমারও চট্টগ্রামের খুব কাছে।”

সূত্রটি বলেছেন, যেহেতু মিয়ানমার এখন টালমাটাল অবস্থায় আছে তাই এমনিতেই তারা উদ্বিগ্ন। তাদের শঙ্কা মিয়ানমার থেকে ভারতে অবৈধ অনুপ্রবেশ এবং মাদক কারবারি বেড়ে যেতে পারে।

এদিকে প্রতিবেদনটিতে বাংলাদেশের সরকারি কোনো সূত্রের কোনো বক্তব্য প্রকাশ করা হয়নি।

ভারত এমন উদ্বিগ্ন হলেও পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশে জাহাজ আসার বিষয়টিকে ‘ঐতিহাসিক’ হিসেবে অভিহিত করা হচ্ছে। কারণ এরমাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান জটিল সম্পর্ক উষ্ণ হওয়ার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট।

সূত্র: টেলিগ্রাফ ইন্ডিয়া

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.