আজ: বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪ইং, ২০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১লা জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, বুধবার |

kidarkar

১৯৭১ সালের আজকের এই দিনে হানাদার মুক্ত হয় গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলা

নিজস্ব প্রতিবেদক: আজ ৪ ডিসেম্বর, ১৯৭১ সালের আজকের এই দিনে গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি ও তিস্তামুখ রেলওয়ে ফেরিঘাট এলাকা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর কবল থেকে মুক্ত করেন মুক্তিযোদ্ধারা। গাইবান্ধা জেলার মধ্যে ফুলছড়ি উপজেলা প্রথম হানাদার মুক্ত করে এই দিনে বীর মুক্তিযোদ্ধারা উড়িয়েছিলেন বিজয়ের লাল সবুজের পতাকা।

ফুলছড়ি উপজেলাকে মুক্ত করতে গিয়ে যুদ্ধ চলাকালে পাকবাহিনীর সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধে শহীদ হন ৫ বীর মুক্তিযোদ্ধা। এ সময় পাকিস্তানের ২২ পাক সেনা সদস্য নিহত হন। যুদ্ধে শহীদ হওয়া পাঁচ মুক্তিযোদ্ধারা হলেন, আফজাল হোসেন, কবেজ আলী, যাহেদুর রহমান বাদল, ওসমান গণী এবং আব্দুল সোবহান। ৫ ডিসেম্বর শহীদ ৫ মুক্তিযোদ্ধার মরদেহ গরুর গাড়িতে করে সাঘাটা উপজেলার সগুনা ইউনিয়নের খামার ধনারুহা প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এনে সমাহিত করা হয়।

পরবর্তীতে পাঁচ শহীদের স্মরণে বিদ্যালয়ের পাশেই নির্মিত হয় স্মৃতিস্তম্ভ। এছাড়া যুদ্ধের সময় নিহত বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ অনেকের মরদেহ ফুলছড়ি উপজেলার তিস্তামুখঘাট রেললাইন-সংলগ্ন গণকবরে সমাহিত করা হয়। কয়েক বছর আগে গণ কবরটির বাউন্ডারিসহ একটি স্মৃতিসৌধ নির্মিত হলেও তা অরক্ষিত অবস্থায় আছে।

স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা জানান, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ১৯৭১ সালের ২৩ এপ্রিল তৎকালীন ফুলছড়ি সিও অফিসের (বর্তমান উপজেলা পরিষদ কার্যালয়) চার কিলোমিটার দূরে তিস্তামুখ রেলওয়ে ফেরিঘাট এলাকায় ঘাঁটি স্থাপন করে। ক্যাম্প থেকে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আশেপাশের এলাকার হিন্দু সম্প্রদায ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের লোকজনের বাড়িতে হামলা ও লুটপাট চালায়। একপর্যায়ে তারা বেশ কিছু বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ করে। নারীদের ওপর চালানো হয় নির্যাতন।

তারা আরও জানান, পাকিস্তানি বাহিনীর অত্যাচারে মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠলে জুন মাসের প্রথম দিকে এলাকার ছাত্র-যুবক ভারত থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে আসেন। ১১নং সেক্টরের কোম্পানি কমান্ডার রোস্তম আলী খন্দকারের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধাদের দিনব্যাপী গেরিলা যুদ্ধের পর সন্ধ্যার দিকে গবিন্দিতে পাকিস্তানের সেনাদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মুখ যুদ্ধ হয়।

প্রতিবছর এই দিনটিকে ফুলছড়ি উপজেলা মুক্ত দিবস হিসেবে পালন করেন স্থানীয়রা। দিবসটি উপলক্ষ্যে শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পমাল্য অর্পণ ও আলোচনা সভাসহ  বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.