যুদ্ধে ইউক্রেনের ৪৩ হাজার সেনা নিহত, স্বীকার করলেন জেলেনস্কি
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : রাশিয়ার পূর্ণমাত্রায় আক্রমণ শুরুর পর থেকে যুদ্ধে ইউক্রেনের ৪৩ হাজার সেনা নিহত হয়েছেন। ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি নিজেই এ তথ্য জানিয়েছেন। তার পক্ষ থেকে এটি ছিল দেশটির ক্ষতির পরিমাণ সম্পর্কে এক বিরল স্বীকৃতি।
জেলেনস্কি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানান, যুদ্ধে ইউক্রেনের ৩ লাখ ৭০ হাজার সেনা আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তবে এদের মধ্যে কিছু সেনা একাধিকবার আহত হয়েছেন এবং কয়েকজনের জখম ছিল খুবই সামান্য।
এসময় ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট দাবি করেন, যুদ্ধে রুশ বাহিনীর ১ লাখ ৯৮ হাজার সেনা নিহত এবং ৫ লাখ ৫০ হাজার সেনা আহত হয়েছেন। তবে উভয় পক্ষের ক্ষয়ক্ষতির এই তথ্য তাৎক্ষণিকভাবে যাচাই করতে পারেনি বিবিসি।
কিয়েভ এবং মস্কো উভয়েই নিয়মিতভাবে একে অপরের ক্ষতির পরিসংখ্যান প্রকাশ করলেও নিজেদের ক্ষতির তথ্য জানাতে সংকোচ প্রকাশ করেছে। নতুন এই পরিসংখ্যানে বছরের শুরুর তুলনায় ইউক্রেনীয় মৃতের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ফেব্রুয়ারিতে জেলেনস্কি বলেছিলেন, যুদ্ধে ইউক্রেনের ৩১ হাজার সেনা নিহত হয়েছেন।
তাহলে এখন কেন নিজেদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির তথ্য সামনে আনলেন জেলেনস্কি। ধারণা করা হচ্ছে, তার এই স্বীকৃতির পেছনে একটি সম্ভাব্য কারণ হতে পারে নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একটি মন্তব্য, যেখানে তিনি দাবি করেছিলেন ইউক্রেন ‘অযথা চার লাখ সেনা হারিয়েছে’।
আবার, রাশিয়ার ক্ষতির পরিমাণ সম্পর্কে জেলেনস্কির দেওয়া তথ্যের সঙ্গে অন্যান্য পশ্চিমা কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্যের মিল পাওয়া যায়। তাদের দাবি, রাশিয়ার মোট আট লাখ সেনা হতাহত হয়েছে।
যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, কেবল গত নভেম্বরেই ৪৫ হাজার ৬৮০ জন রুশ সেনা নিহত বা আহত হয়েছেন, যা ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে পূর্ণমাত্রায় যুদ্ধ শুরুর পর থেকে যেকোনো মাসের জন্যই সর্বোচ্চ।
এদিকে, রাশিয়া পূর্ব সীমান্তে দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে। সম্প্রতি পূর্ব ইউক্রেন ও পশ্চিম কুরস্ক অঞ্চলের ২ হাজার ৩৫০ বর্গকিলোমিটার এলাকা দখল ও পুনরুদ্ধার করেছে তারা। এ অবস্থায় শান্তি আলোচনার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিচ্ছেন জেলেনস্কি। তবে ইউক্রেনের নিরাপত্তার জন্য কার্যকর আন্তর্জাতিক গ্যারান্টি থাকতে হবে বলে শর্ত দিয়েছেন তিনি।
ক্রেমলিন জানিয়েছে, আলোচনার জন্য তাদের দুয়ার খোলা। তবে যুদ্ধবিরতির শর্তাদি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন নির্ধারণ করবেন। তবে এই শর্তে রাজি নয় ইউক্রেন।
সূত্র: বিবিসি