পুঁজি হারানোর আর্তনাদ বেড়েই চলেছে, নির্বিকার বিনিয়োগকারীরা
নিজস্ব প্রতিবেদক : সবচেয়ে খারাপ অবস্থানে পুঁজিবাজার। ব্যাপক সম্ভাবনাময় এ খাতটি মুখ থুবড়ে পড়েছে। সবার চোখের সামনে প্রতিদিনই হাওয়ায় মিশে যাচ্ছে হাজার হাজার কোটি টাকার বাজারমূলধন। আতঙ্কে দিন কাটছে বিনিয়োগকারীদের। সূচকের অব্যাহত পতনে বিনিয়োগকারীদের লোকসানের পাল্লা ভারী হচ্ছে। তাদের পিঠ রীতিমতো দেওয়ালে ঠেকে গেছে। সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস বৃহস্পতিবারও (১২ ডিসেম্বর) পতন হয়েছে শেয়ারবাজারে। আজকের দিন নিয়ে টানা ৬ কর্মদিবস পতন হয়েছে শেয়ারবাজারে।
জানা যায়, সর্বশেষ গত ৪ ডিসেম্বর শেয়ারবাজারে উত্থান হয়েছিল। ওই দিন শেয়ারবাজারের সূচক ১২ পয়েন্ট বেড়েছিল। তবে এরপরের ৬ কর্মদিবস পতন হয়েছে শেয়ারবাজারে। এই টানা পতনে শেয়ারবাজার থেকে ১৩৩ পয়েন্ট সূচক কমেছে। আর বিনিয়োগকারীরা বাজার থেকে হারিয়েছেন ১৪ হাজার ৩২৯ কোটি টাকা।
বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, নিয়ন্ত্রক সংস্থার নানান উদ্যোগের পরও শেয়ারবাজারে টানা পতন। অব্যাহত পতনে বিনিয়োগকারীরা তাদের মূলধনের সাড়ে ১৪ হাজার কোটি টাকা হারিয়েছে। এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়। নিয়ন্ত্রক সংস্থার প্রধান কাজ হচ্ছে শেয়ারবাজারকে নিয়ন্ত্রণ করা। কিন্তু তারা বাজারকে কতটুকু নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে তারাই ভালো বলতে পাবে। বিনিয়োগকারীদের পুঁজির নিশ্চয়তা দেওয়াও নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাজ। পুঁজির নিশ্চয়তা না পেলে এই বাজারে বিনিয়োগকারীদের ধরে রাখা কঠিন হয়ে যাবে। কাজেই ইতিবাচক বাজারের নিশ্চতয়তা নিয়ন্ত্রক সংস্থাকেই নিশ্চিত করতে হবে।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার সামান্য পতনে শুরু হয় লেনদেন। মাত্র এক মিনিটের মধ্যেই বাজার ইতিবাচক প্রবণতায় উঠে যায়। এরপর আবার পতন হলেও ১০টা ৫৫ মিনিটের দিকে আবার ইতিবাচক প্রবণতায় চলে আসে সূচক। দুপুর ১২টা ২৮ মিনিট পর্যন্ত উত্থানেই হচ্ছিল লেনদেন। এরপর আবার নেতিবাচক ও ইতিবাচক প্রবণতায় লেনদেন হলেও শেষ পর্যন্ত পতন হয়েছে শেয়ারবাজারে। এদিন শেয়ারবাজারে পতন হলেও টাকার পরিমাণে লেনদেন আগের কর্মদিবস থেকে কিছুটা বেড়েছে। তবে বাজার থেকে বিনিয়োগকারীরা হারিয়েছে ৮৬১ কোটি টাকা।
বাজার পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, আজ ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৯.০৬ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ১০৫ পয়েন্টে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে‘ডিএসইএস’ ২.০৫ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ১৪০ পয়েন্ট এবং ‘ডিএস-৩০’ সূচক ৭.৫২ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৮৮১ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
এদিন ডিএসইতে ৩৫১ কোটি ৫৯ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৩০৪ কোটি ২৩ লাখ টাকা। আজ লেনদেন বেড়েছে ৪৭ কোটি ৩৬ লাখ টাকার বা ১৫ শতাংশ।
ডিএসইতে লেনদেন আজ হওয়া ৩৯৪টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দর বেড়েছে ১০৫টির বা ২৬.৬৫ শতাংশের, কমেছে ১৯৮টির বা ৫০.২৫ শতাংশের এবং দর পরিবর্তন হয়নি ৯১টির বা ২৩.০৯ শতাংশের।
অপর শেয়ারবাজার সিএসইতে আজ ৪ কোটি ২৭ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।এদিন সিএসইতে লেনদেন হওয়া ২০৪ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে ৪৯টির, কমেছে ১১৫টির এবং পরিবর্তন হয়নি ৪০টির। সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৬০ পয়েন্ট কমে দাঁডিয়েছে ১৪ হাজার ৩০৪ পয়েন্টে।
সমস্যা কি ???
টাকা সবার নাই হয় যাক।
কারত আর এই নিয়ে মাথা ব্যাথা নেই।
সবার মাথা ব্যাথা এখন জরিমানা নিয়ে,
পতন নিয়ে করো মাথা ব্যাথা নাই।।
আগের সরকারের মাথা ব্যাথা ছিলনা পতন নিয়ে।
আলহামদুলিল্লাহ এই সরকার এর মধ্যে ও মাথা ব্যাথা নেই।
মাকসুদ কামাল একটা ফকিরের পোলা ও বাজারের কি বুঝে
Very good
ধারাবাহিক অস্বাভাবিক পতন চলছে মাসের পর মাস।।সাধারণত বিনিয়োগকারীদের নিয়ে কারোর কোন মাথা ব্যথা নেই। এটা খুব দুঃখ জনক।
We are very sorry that we bd people 😭alk are lotara….
শেয়ার বাজারে টাকা ঢুকিয়ে আজ দিশেহারা। দুঃশ্চিন্তায় দিন রাত কাটছে। কি হবে সামনের দিনগুলো।
ভাই এ সাধিনতার জন্য কষ্ট করলাম এখন পুঁজি হারালাম
বাজারের শেষ বিনিয়োগকারী
বেলায়েত সাহেব প্রতিদিন ভোরে ছাদে যান। চায়ের কাপ হাতে নিয়ে শহরের নিস্তব্ধতা উপভোগ করেন। কিন্তু আজকাল তাঁর মন খারাপ। শেয়ার বাজারের দুরবস্থার কারণে আশেপাশের সব বিনিয়োগকারী যেন হারিয়ে গেছে। রফিক, তাঁর সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধু, গতকাল মেসেজে লিখেছে, “বেলায়েত ভাই, আমি সব বিক্রি করে বের হয়ে এসেছি। তুমি কেন এখনও পড়ে আছ?”
বেলায়েত সাহেব দীর্ঘশ্বাস ফেলেন। একসময় শেয়ার বাজার তাঁর জীবনের অংশ ছিল। কত আনন্দ, কত উত্তেজনা—সবই যেন হারিয়ে গেছে। তাঁর কেনা শেয়ারগুলো এখন ৫০-৭০ শতাংশ মূল্য হারিয়েছে। বিক্রি করলে যা থাকবে, তাতে সংসারের মাসখরচও চলবে না।
টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে বলে শুনেছেন। ভেবেছিলেন কিছু উন্নতি হবে। কিন্তু সেই কমিটি একটা মিটিং করেই থেমে গেছে। বড় কর্মকর্তাদের বাজার নিয়ে অদক্ষ মন্তব্য সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আরও হতাশা তৈরি করেছে।
রোদ উঠতে শুরু করেছে। মোবাইলে একটা নোটিফিকেশন এলো—একটি শেয়ারের দাম আরও কমেছে। বেলায়েত সাহেব তা বন্ধ করে কাপটা নামিয়ে রাখেন। মনে মনে ভাবেন, “এই বাজারটা যদি জুয়ার কোর্ট হত, তাহলে কেউ না কেউ লাভ করত। এখানে তো সবাই হারছে।” তাহলে কি এটা নিয়ন্ত্রিত বাজার হাজারো প্রশ্ন বেলায়েত সাহেবের।
ছাদ থেকে নামার সময় তাঁর মনে হয়, এই বাজারে বিনিয়োগের চেয়ে এখন মুক্তির আশা করাই বেশি যুক্তিসঙ্গত। কিন্তু মুক্তি আসবে কীভাবে? এই প্রশ্নই তাঁকে প্রতিদিন তাড়া করে।
শেষ লাইন:
বাজারে তিনি টিকে আছেন কেবল অভ্যাসবশত। তাঁর মতো বিনিয়োগকারী আর কেউ আছে কিনা জানেন না। শেয়ার বাজার যেন একটা শূন্য, অথচ গভীর অন্ধকার।