আজ: শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪ইং, ২৯শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, শুক্রবার |

kidarkar

ওয়াশরুমে পড়েছিলেন কবি হেলাল হাফিজ, মাথা ফেটে বের হচ্ছিল রক্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক: দ্রোহ ও প্রেমের কবি হেলাল হাফিজ মারা গেছেন। জানা গেছে, রাজধানীর শাহবাগের একটি হোস্টেলে তিনি মারা যান। ওই হোস্টেলের ওয়াশরুমে পড়েছিলেন কবি হেলাল হাফিজ। তখন তার মাথা ফেটে রক্ত বের হচ্ছিল।

শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) শাহবাগের সুপার হোম হোস্টেলে মারা যান কবি হেলাল হাফিজ। বর্তমানে তার মরদেহ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে রাখা হয়েছে।

শাহবাগ থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, দুপুরের দিকে হোস্টেলের একটি কমন ওয়াশরুমে যান কবি হেলাল হাফিজ। ওয়াশরুমে যাওয়ার অনেকক্ষণ পরেও তার কোনো সাড়া-শব্দ না পেয়ে হোস্টেলের অন্য রুমের বাসিন্দারা বাথরুমের দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন। তখন তারা দেখেন কবি হেলাল হাফিজ ওয়াশরুমে পড়ে রয়েছেন এবং তার মাথা ফেটে রক্ত বের হচ্ছিল।

শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ খলিল মনসুর বলেন, শাহবাগের ওই হোস্টেলের একটি কক্ষে থাকতেন কবি হেলাল হাফিজ। দুপুরে তিনি হোস্টেলের একটি কমন ওয়াশরুমে যান। অনেকক্ষণ হলেও তিনি ওয়াশরুম থেকে বের হচ্ছিলেন না। পরে হোস্টেলের অন্য রুমের সদস্যরা ওয়াশরুমের সামনে এসে ডাকাডাকি করলেও তিনি সাড়া দেননি। পরে তারা বাধ্য হয়ে ওয়াশরুমের দরজা ভাঙেন। দরজা ভেঙে দেখতে পান কবি হেলাল হাফিজ ওয়াশরুমের ফ্লোরে পড়ে রয়েছেন এবং তার মাথা ফেটে অনেক রক্ত বের হয়েছে।
তিনি বলেন, আমাদের প্রাথমিক ধারণা স্ট্রোক বা অন্য কোনো শারীরিক সমস্যার কারণে তিনি বাথরুমে পড়ে যান। বাথরুমের বেসিনটিও ভাঙা ছিল। আমাদের ধারণা– তিনি বেসিনের ওপর পড়ে যান। তখন বেসিন ভেঙে যায় এবং উনার মাথা ফেটে যায়।

কবি হেলাল হাফিজ ১৯৪৮ সালের ৭ অক্টোবর নেত্রকোণার আটপাড়া উপজেলার বড়তলী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা খোরশেদ আলী তালুকদার পেশায় ছিলেন স্কুলশিক্ষক আর মা কোকিলা বেগম গৃহিণী।

কবি হেলাল হাফিজ অনেকটা বোহেমিয়ান জীবন কাটালেও সাংবাদিকতাকে পেশা হিসেবে বেছে নেন।

কবি হেলাল হাফিজের লেখালেখির সূচনা ষাটের দশকের উত্তাল সময়ে। তবে প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘যে জলে আগুন জ্বলে’ প্রকাশিত হয় দেশ স্বাধীন হওয়ারও অনেক পরে ১৯৮৬ সালে। ২৬ বছর পর ২০১২ সালে প্রকাশিত হয় তার দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ ‘কবিতা একাত্তর’। ২০১৯ সালে প্রকাশ পায় কবির আরেকটি কাব্যগ্রন্থ ‘বেদনাকে বলেছি কেঁদো না’।

‘এখন যৌবন যার, মিছিলে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়/ এখন যৌবন যার, যুদ্ধে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়’-উনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের সময় তার রচিত কবিতা ‘নিষিদ্ধ সম্পাদকীয়’র এ পঙ্‌ক্তি দুটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে যেমন, তেমনি এখনো প্রেরণা জুগিয়ে চলেছে প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলনে।

উল্লেখ্য, কবিতায় অসামান্য অবদানের স্মারক হিসেবে হেলাল হাফিজকে ২০১৩ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার দেওয়া হয়। এ ছাড়া তিনি পেয়েছেন যশোর সাহিত্য পরিষদ পুরস্কার (১৯৮৬), আবুল মনসুর আহমদ সাহিত্য পুরস্কার (১৯৮৭), নেত্রকোণা সাহিত্য পরিষদের কবি খালেকদাদ চৌধুরী পুরস্কার ও সম্মাননা।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.