আজ: শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪ইং, ২৯শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, শুক্রবার |

kidarkar

সয়াবিন তেলের সরবরাহ স্বাভাবিক হয়নি, আলু-পেঁয়াজ-সবজিতে স্বস্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাজারে দুই সপ্তাহ ধরে চলা বোতলজাত সয়াবিন তেল নিয়ে অস্থিরতা এখনো কাটেনি। যদিও গত সোমবার সয়াবিন তেলের দাম প্রতি লিটারে ৮ টাকা বাড়িয়েছে সরকার। তারপরও গত চারদিনে বাজারে তেল সরবরাহ স্বাভাবিক করেনি কোম্পানিগুলো। এখনো পাড়া-মহল্লার বেশিরভাগ দোকানে মিলছে না সয়াবিন তেল।

তবে বাজারে সুখবর আছে অন্য প্রায় অনেক পণ্যেই। আলু, পেঁয়াজ ও সবজিসহ কিছু মুদি পণ্যেরও দাম কমেছে। স্থিতিশীল রয়েছে মুরগি ও ডিমের দাম। শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমনটিই জানা গেছে।

সকালে রামপুরা বাজারে গিয়ে বেশ কয়েকটি দোকান ঘুরে হাতেগোনা দুটি দোকানে বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি করতে দেখা গেছে। সেখানে আলম স্টোরের রেজাউল আলম গণমাধ্যামকে বলেন, কোম্পানি গতকাল (বৃহস্পতিবার) তেল দেওয়ার কথা ছিল। শেষবেলায় জানিয়েছে দিতে পারবে না। শনিবার দেবে। প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে একই অবস্থা। এরমধ্যে তেলের দাম বেড়েছে। আগামীকাল তেল পাবো বলে আশা করছি।

বিভিন্ন ব্র্যান্ডের পরিবেশকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত একটি ছাড়া অন্য কোনো কোম্পানি নতুন দামের সয়াবিন তেলের বোতল বাজারে ছাড়েনি। এজন্য তারাও খুচরা পর্যায়ে পণ্যটি দিতে পারছেন না।

বাড়তি দাম যোগ করে বাজারে এখন প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিনের দাম ১৭৫ টাকা। আর খোলা সয়াবিনের দাম ১৫৭ টাকা। তবে নতুন এ দামের তেল এখনো আসেনি। সরবরাহ সংকটের কারণে বোতলজাত সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১৮০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। নতুন করে দাম বাড়ার আগে বোতলজাত সয়াবিন প্রতি লিটার ১৬৭ টাকা ও খোলা সয়াবিনের লিটার ছিল ১৪৯ টাকা।

খুচরা বাজারে ভোজ্যতেলের সংকট থাকলেও গত সপ্তাহের চেয়ে মসুর ডালের দাম কেজিতে ৫ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ১১৫ থেকে ১৩০ টাকায়। এছাড়া চিনি, আটা ও ময়দাসহ অন্য পণ্যগুলোর দাম স্থিতিশীল রয়েছে।

দীর্ঘদিন অস্থিতিশীল থাকা পেঁয়াজের বাজারেও স্বস্তি ফিরতে শুরু করেছে। কমেছে দামও। এক-দেড় মাস আগে দেশি ভালো মানের পেঁয়াজের কেজি ছিল ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা। কেজিতে ৪০ টাকার মতো কমে এখন বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১১০ টাকা। বাজারে এখন দেশি হাইব্রিড পেঁয়াজের কেজিতে ৩০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকা আর আমদানি করা পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭৫ থেকে ৮০ টাকা দরে। এ ধরনের পেঁয়াজের কেজি মাস দেড়েক আগেও ছিল ১০০ টাকার মতো।

মহাখালী কাঁচা বাজারের দোকানি আজাদ খাঁন বলেন, নতুন পেঁয়াজ ওঠা শুরু করেছে। পাতা পেঁয়াজও এসেছে। ফলে আগের মজুত পেঁয়াজ বাজারে ছাড়তে শুরু করেছেন ব্যবসায়ীরা। নতুন পেঁয়াজ পুরোপুরি চলে এলে দাম আরও কমবে।

নিম্নমুখী ধারা দেখা গেছে আলুর বাজারেও। ভারত থেকে আমদানি করা নতুন আলুর দাম ১২০ টাকা থেকে কমে ৭০ টাকায় নেমেছে। এ ধরনের আলুর আধিক্যের কারণে পুরোনো আলুর দামও কেজিপ্রতি ১০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ৬০-৬৫ টাকায়।

বাজারে শীতের সবজির সরবরাহও বেড়েছে। ফলে কমতে শুরু করেছে সব ধরনের সবজির দাম। সবজির কেজি এখন গড়ে ৪০ থেকে ৫০ টাকার মধ্যে।

শিমের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা, সপ্তাহ দুয়েক আগেও যা ছিল ৮০ থেকে ১০০ টাকা। মুলার কেজি ৪০ থেকে নেমেছে ২০ টাকায়। এছাড়া প্রতি কেজি শালগম ৪০ থেকে ৫০ ও বেগুন ৪০ থেকে ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আকারভেদে প্রতিটি ফুল ও বাঁধাকপির কিনতে ক্রেতার গুনতে হচ্ছে ৩০ থেকে ৫০ টাকা।

কিছুদিন আগেও আকাশছোঁয়া কাঁচামরিচের দাম কমে তলানিতে নেমেছে। বাজারে এখন প্রতি কেজি কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকায়। গত দুই সপ্তাহ ধরে এ দামেই বিক্রি হচ্ছে কাঁচামরিচ।

বাজারে মুরগির দামও অপরিবর্তিত দেখা গেছে। গত সপ্তাহের মতো প্রতি কেজি ব্রয়লার ১৭৫ থেকে ১৮৫ এবং সোনালি জাতের মুরগি ২৭০ থেকে ২৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ফার্মের মুরগির ডিম প্রতি ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকায়।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.