আজ: বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪ইং, ৩রা পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৪ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

১৬ ডিসেম্বর ২০২৪, সোমবার |

kidarkar

বিজয়ের দিনে টাইগারদের জয় উপহার

নিজস্ব প্রতিবেদক: আজ মহান বিজয় দিবস, বাঙালির মুক্তির দিন। ভোরের আলো ফোটার পরেই বাংলাদেশ পালন করছে বিজয়ের ৫৩ বছর। এমনদিনে দেশের মানুষের উৎসবের উপলক্ষ্যটা আরেকটু বড় হলো। ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জে শ্বাসরুদ্ধকর এক জয় উপহার দিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল।

সুদূর ক্যারিবিয়ান দ্বীপ সেন্ট ভিনসেন্টে টানটান উত্তেজনার ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৭ রানে হারিয়েছে লিটন দাসের দল। এতে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ।

জিততে হলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের শেষ ওভারে দরকার ছিল ১০ রান। বাংলাদেশের দুই উইকেট। ক্রিজে তখনও ম্যাচের ‘সেরা’ ব্যাটার রভম্যান পাওয়েল। রোমারিও শেফার্ডের সঙ্গে যার ৩৩ বলে ৬৭ রানের জুটি বাংলাদেশের জয়টাকে অনেকখানি বিলম্বিত করেছে। হাসান মাহমুদের শেষ ওভারে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিতে বাধ্য হলেন সেই পাওয়েল। সেখানেই মূলত জয়টা নিশ্চিত হয়ে যায় লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের জন্য। এরপর এক বল বিরতি দিয়ে বোল্ড আলজারি জোসেফ। তাতেই নিশ্চিত দারুণ এক জয়।

দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেলেই বাংলাদেশের আসল পারফরম্যান্সের দেখা মেলে। ক্রিকেটপাড়ায় বহুল চর্চিত এই বাক্যটাই যেন পূর্ণতা পেল নতুন করে। ওয়ানডে সিরিজে ধবলধোলাইয়ে পর সমালোচনার তীরে বিদ্ধ ছিল বোলিং লাইনআপ। বিশেষ করে ৩২১ রান সংগ্রহ করেও বোলারদের ব্যর্থতায় ম্যাচ হেরেছিল দল। আজ সেই বোলাররাই হলেন জয়ের মুখ্য নায়ক।

সেন্ট ভিনসেন্টের আর্নস ভ্যালিতে বাংলাদেশ সময় ভোরে শুরু হওয়া ম্যাচে টস হেরে ব্যাটে নামে টাইগাররা। তবে ব্যাটে ভালো শুরু করতে পারেনি বাংলাদেশ। দলীয় ১৫ রানেই বিদায় নেন ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম ও তিনে নামা অধিনায়ক লিটন। তামিম ১১ বলে ৬ রান ও লিটন দাস গোল্ডেন ডাক মেরে সাজঘরে ফেরেন। দুইজনই আকিল হোসেনের শিকার হয়ে ফেরেন। দীর্ঘদিন পর ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ দিয়ে দলে ফেরা আফিফও দলের হাল ধরতে পারেননি। ৮ রানে আফিফ যখন ফেরেন তখন দলীয় সংগ্রহ মাত্র ৩০।

১০০-এর আগে ৫ উইকেট হারানো বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ রানের ইনিংসটি খেলেন সৌম্য সরকার। তার ইনিংসটি ছিল ৩২ বলে ৪৩ রানের। সৌম্যর ব্যাট থেকে তিনটি ছয় ও দুইটি চার আসে। উইকেট ধরে টিকে থাকা জাকির হাসান খেলেন ২৭ বলে ২৭ রানের ইনিংস। শেষদিকে শেখ মেহেদীর ২৪ বলে ২৬ ও শামীম পাটোয়ারির ১৩ বলে ২৭ রানের ক্যামিওতে দেড়শো (১৪৭ রান) ছোঁয়া সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ।

১৪৮ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নামা ক্যারিবীয় ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই ব্রেকথ্রু পায় বাংলাদেশ। তাসকিনের প্রথম বলেই তানজিদ তামিমের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ব্রান্ডন কিং। এরপর শুরু হয় শেখ মেহেদীর স্পিন ভেলকি। তার শিকার হয়ে একে একে ফিরে যান নিকোলাস পুরান, জনসন চার্লস, আন্দ্রে ফ্লেচার, রোস্টন চেজ। মেহেদীর ক্যারিয়ারসেরা বোলিংয়ের দিন মাত্র ৩৮ রানেই ৫ উইকেট তুলে নেয় বাংলাদেশ। দলীয় ৫৮ রানে তানজিম হাসান সাকিবের বলে ক্যারিবীয়রা ষষ্ঠ উইকেট হারায়। এরপর আকিল হোসেনকেও ক্রিজে সেট হয়ে দেননি লেগস্পিনার রিশাদ হোসেন।

৬১ রানে ৭ উইকেট হারানো ওয়েস্ট ইন্ডিজের হার মনে হচ্ছিল সময়ের ব্যাপার। এরপরই রোমাঞ্চ জমিয়ে রাখেন রভম্যান পাওয়েল ও রোমারিও শেফার্ড। তাদের ৩৩ বলে ৬৭ রানের জুটিতে ভয় জাগে টাইগার শিবিরে। মনে হচ্ছিল, আরেকবার তীরে এসে তরী ডু্ববে বাংলাদেশের। তবে শেষ পর্যন্ত স্নায়ু ধরে রেখে জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে টাইগাররা। ক্যারিবীয়দের পক্ষে সর্বোচ্চ ইনিংসটি আসে পাওয়েলের ব্যাট থেকেই। তিনি ৩৫ বলে চারটি ছয় ও পাঁচটি চারে ৬০ রান করেন।

বাংলাদেশের পক্ষে ৪ ওভার বল করে ১৩ রানের বিনিময়ে চারটি উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হয়েছেন শেখ মেহেদী। তাসকিন আহমেদ ও হাসান মাহমুদ শিকার করেছেন দুইটি করে উইকেট। এছাড়া একটি করে উইকেট নিয়েছেন রিশাদ হোসেন ও তানজিম সাকিব।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.