মেট্রোরেলে একক যাত্রায় চালু হচ্ছে কাগজের টিকিট
শেয়ারবাজার ডেস্ক : ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) মেট্রোরেলে যাত্রীসেবার উন্নয়নে এবার একক টিকিট সংকট কাটাতে যাত্রা টিকিটের পরিবর্তে আসছে কিউআর কোড ভিত্তিক টিকিটিং বা কাগজের টিকিট।
মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) ডিএমটিসিএল তাদের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে ডিএমটিসিএল। সেখানে বলা হয়, যাত্রীবৃদ্ধি পাওয়ার কারণে চাহিদা মতে গুরুত্বপূর্ণ যাত্রীবহুল মেট্রো স্টেশনসমূহে সিঙ্গেল জার্নি টিকেট ইস্যু করতে অধিক সময় লাগছে। এছাড়া সিঙ্গেল জার্নি টিকেট নির্দিষ্ট স্লটে জমা না পাওয়ায় এবং যৌক্তিক কারনে বেশ কিছু টিকিটের কার্যকারিতা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় সাময়িক অসুবিধার সৃষ্টি হয়েছে । এ সমস্যার সমাধানে দ্রুত সিঙ্গেল জার্নি টিকিট সংগ্রহ করা হচ্ছে। এছাড়া বিকল্প পদ্ধতি কিউ আর কোড চালুর মাধ্যমে ভ্রমণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আশা করা যায়, ডিসেম্বর ২০২৪ এর শেষ নাগাদ পরিস্থিতির উন্নতি হবে। সম্মানিত যাত্রীগণের সাময়িক এ অসুবিধার জন্য ডিএমটিসিএল কর্তৃপক্ষ আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছে। হাতে পর্যাপ্ত সময় নিয়ে স্টেশনে আসার জন্য সম্মানিত যাত্রীগণকে বিনীত অনুরোধ জানানো হচ্ছে।
ডিএমটিসিএলের কর্মকর্তারা বলছেন, একক যাত্রার টিকিটগুলো নানাভাবে বেহাত হয়েছে, যেমন কেউ কেউ কার্ডটি স্যুভেনির হিসেবে রেখে দেওয়ার জন্য নিয়ে গেছেন। এমনও ব্যক্তি আছেন, যিনি হয়তো মিরপুর থেকে মতিঝিল যাচ্ছেন, একসঙ্গে দুটি কার্ড নিয়েছেন; যাতে আসার পথে লাইনে না দাঁড়িয়ে সরাসরি ট্রেনে ওঠা যায়। আবার সাধারণত একই দূরত্বের ভাড়া পরিশোধ করে ফিরতি যাত্রার টিকিট কাটা যায়। একক যাত্রার কার্ড ভাড়া পরিশোধ করে নেওয়ার পর এর কার্যকারিতা ওই দিন রাত ১২টা পর্যন্ত থাকে। কোনো কারণে নির্ধারিত সময়ে কেউ ফিরতি যাত্রায় কার্ড ব্যবহার না করে হয়তো বাসায় নিয়ে গেছেন আর ফেরত দেননি।
ঢাকায় মেট্রোরেল নির্মাণ ও পরিচালনার দায়িত্বে থাকা প্রতিষ্ঠান ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) সূত্র বলছে, এখন তাদের হাতে একক যাত্রার টিকিট কার্ড আছে মাত্র ৩০ হাজারের মতো। এ মাসে আরও ৩০ হাজার কার্ড আসবে। জানুয়ারির শেষ দিকে আসতে পারে ১ লাখ ২০ হাজারের মতো কার্ড। এরপরও একক যাত্রার টিকিট কার্ডের সমস্যা মিটবে না বলে মনে করছেন কর্মকর্তারা।
ডিএমটিসিএলের হিসাবে, মেট্রোরেলে এখন দিনে প্রায় সাড়ে তিন লাখ যাত্রী যাতায়াত করেন। গড়ে ৪৫ শতাংশ যাত্রী একক যাত্রার কার্ড ব্যবহার করেন। অন্যরা যাতায়াত করেন এমআরটি কার্ডে। একক যাত্রার কার্ডসংকটে যাত্রীদের স্টেশনে গিয়ে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি সময় অপেক্ষা করে ট্রেনে উঠতে হচ্ছে। অনেকে কার্ড না পেয়ে বিকল্প ব্যবস্থায় গন্তব্যে যাচ্ছেন।
এমন পরিস্থিতিতে একক যাত্রার কার্ডের সংকট কাটাতে নতুন কার্ড আমদানির পাশাপাশি বিকল্প উদ্যোগও নিয়েছে ডিএমটিসিএল। সংস্থার সূত্র জানিয়েছে, একক যাত্রার জন্য কাগজের কার্ড চালু করা হবে। এতে কিউআর কোড থাকবে। সেটি যন্ত্রে স্ক্যান করে প্রবেশ ও বের হতে পারবেন যাত্রীরা। এর জন্য প্রতিটি স্টেশনে একটা করে আলাদা যন্ত্র ও প্রবেশপথ চালু করা হবে। এসব কার্ড কেউ নিয়ে গেলেও সমস্যা নেই। বাইরের দেশে এ ধরনের টিকিটের প্রচলন আছে। চাইলে কেউ এক দিনের কাগজের টিকিট অন্য দিন ব্যবহার করতে পারবেন না।
সূত্র আরও জানায়, কাগজের টিকিট সংগ্রহের লক্ষ্যে ঠিকাদার নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করেছে ডিএমটিসিএল। দেড় মাসের মধ্যেই একক যাত্রার কাগজের টিকিট চালু করার প্রচেষ্টা আছে। তবে একক যাত্রার প্লাস্টিক কার্ডও চলমান থাকবে। কারণ, মেট্রোরেলের প্রতিটি স্টেশনের প্রবেশ ও বের হওয়ার পথে প্লাস্টিকের কার্ডের জন্য যন্ত্র বসানো আছে। এ ব্যবস্থা বেশ কার্যকর এবং বেশিসংখ্যক যাত্রী ব্যবহার করতে পারেন। সূত্র: প্রথম আলো