প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক তৃতীয় ধাপ চূড়ান্ত নিয়োগ নিয়ে আর কত প্রহসন ?
নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি তিনটি ধাপে দেওয়া হয়েছিল। প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপ নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু তৃতীয় ধাপ নিয়ে এ প্রহসন যেন থামছেই না। ২০২৩ সালের ১৪ জুন তারিখের বিজ্ঞপ্তি এবং লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় ২৯ শে মার্চ, ২০২৪। ২১ এপ্রিল, ২০২৪ তারিখে এ ধাপের লিখিত পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয়। আর এতে উত্তীর্ণ হয় প্রায় ৪৬ হাজার পরীক্ষার্থী।
এদিকে, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে চলতি বছরের ২৩ জুলাই জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জারি করা প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে কোটা সংক্রান্ত আগের সব পরিপত্র,প্রজ্ঞাপন, আদেশ, নির্দেশ, অনুশাসন রহিত করা হয়েছে।
এরই প্রেক্ষিতে জনপ্রশাসন ও আইন মন্ত্রণালয়ের নিকট এই বিষয়ে ব্যাখ্যা জানতে চায় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর যে, কিসের ভিত্তিতে ফলাফল প্রকাশ করা হবে। ফলে প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা অনুসরণ করা হবে নাকি জনপ্রশাসনের সর্বশেষ কোটা প্রজ্ঞাপন অনুসারে হবে, তা নিয়ে ধোঁয়াশা ছিল।
আইন ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মতামত নিয়েই বিধিমালা অনুযায়ী চলতি বছর ৩১ শে অক্টোবর প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ তৃতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশিত হয়। আর এতে করে উত্তীর্ণ হয় ৬৫৩১ জন।
এর আগে ২০১৮ সালে সরকার যখন কোটা বাতিল সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন দিয়েছিল, তখনো প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিজস্ব নিয়োগ বিধিমালা অনুসারে। যা প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা ২০১৯ নামে পরিচিত। এটি প্রজ্ঞাপন নয়, বিধিমালা। আইনের পর বিধিমালা, বিধিমালার পর প্রজ্ঞাপন, প্রজ্ঞাপনের পর অফিস আদেশ।
কিন্তু আপত্তি তৈরি হয় এখানেই। কেন নতুন প্রজ্ঞাপন অনুসারে ফলাফল প্রকাশ করা হলো না? আর তা জানতে চেয়ে ৩১ জন হাইকোর্টে রিট করে যারা সুপারিশ প্রাপ্ত হয়নি। এরই প্রেক্ষিতে ৬৫৩১ জনের নিয়োগ কার্যক্রম ৬ মাসের জন্য স্থগিত হয়ে যায় যায়। চূড়ান্ত সুপারিশ প্রাপ্ত হওয়ার পরও যোগদান করতে না পেরে ৬৫৩১ জন এক প্রকারের হতাশ হয়ে পড়েছে। নিজ নিজ জেলা সিভিল সার্জনে মেডিকেল টেস্ট এবং জেলা শিক্ষা অফিসে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা প্রদান করাও হয়েছিল। আরো জানা যায় যে, অনেক জেলার কিছু কিছু উপজেলায় চূড়ান্ত সুপারিশ প্রাপ্তরা যোগদান পত্রও হাতে পেয়েছিল। এমনকি যারা অন্যান্য সরকারি চাকরি করতো তারা এই প্রাথমিকে যোগদান করার জন্য কর্মরত চাকরি থেকে অব্যাহতিও নিয়েছিল।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব, জনাব মোখলেসুর রহমান গণমাধ্যমকে জানান যে, কোটা নিয়ে হাইকোর্টের যে রায়, সেটা নতুন চাকরির ক্ষেত্রে বাস্তবায়ন করা হবে। এদিকে, প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপ প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগ, প্রাথমিকের নিজস্ব বিধিমালা অনুসারে নিয়োগ কার্যক্রম শেষ করে যোগদানও করেছে। আইনের মাধ্যমে কাউকে অধিকার দেওয়া যায় কিন্তু অধিকার ক্ষুন্ন করা যায় না। তাহলে ৬৫৩১ জন কেন নিজেদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে? এই বৈষম্যের শেষ কোথায়? প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক তৃতীয় ধাপ নিয়োগ নিয়ে আর কত প্রহসন?