আজ: মঙ্গলবার, ০৭ জানুয়ারী ২০২৫ইং, ২৩শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৫ই রজব, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

০৫ জানুয়ারী ২০২৫, রবিবার |

kidarkar

বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহে ধীরগতি

নিজস্ব প্রতিবেদক : মূল্যস্ফীতি কমাতে মুদ্রা সরবরাহ কমাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। একদিকে থেমে থেমে সুদহার বাড়ানো হচ্ছে, আরেকদিকে বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে টাকা তুলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে শোধ করা হচ্ছে। গত তিন বছরে ডলারের বিপরীতে টাকার দর পতন হয়েছে ৪৫ শতাংশের মতো। এর সঙ্গে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের সংকট তো আছেই। এমন পরিস্থিতির মধ্যে দেশের পট পরিবর্তনের পর ব্যবসায়ীদের অনেকেই পলাতক। এসবের প্রভাবে সব মিলিয়ে বেসরকারি খাতের ঋণপ্রবাহে আরও ধীরগতি দেখা দিয়েছে। গত নভেম্বর শেষে বেড়েছে মাত্র ৭ দশমিক ৬৬ শতাংশ। করোনাকালীনের পর যা সর্বনিম্ন।

সংশ্লিষ্টরা জানান, বছর তিনেক আগে ডলারের দর ছিল ৮৪ থেকে ৯০ টাকার মধ্যে। সেখান থেকে বাড়তে বাড়তে এখন ১২৩ থেকে ১২৫ টাকা হয়েছে। এর মধ্যে ঋণের খরচ অনেক বেড়ে যাওয়ায় অনেকে বিনিয়োগে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। আবার অধিকাংশ ব্যাংক এখন তারল্য সংকটে পড়েছে। ফলে বাড়তি সুদে ঋণ নেওয়ার চেষ্টা করেও অনেকে পাচ্ছেন না। এর অন্যতম কারণ, বাজারে মুদ্রা সরবরাহ কমাতে দফায় দফায় নীতি সুদহার বাড়িয়ে এখন ১০ শতাংশ নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আবার সরকার বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ঋণ না নিয়ে উল্টো আগের দায় শোধ করছে। গত ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে ৬৫ হাজার ৪২৫ কোটি টাকা নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে পরিশোধ করা হয়েছে ৪৪ হাজার ৪৭৯ কোটি টাকা। এতে সরকারের নিট ঋণ বেড়েছে মাত্র ২০ হাজার ৯৪৬ কোটি টাকা। এসব কারণে গ্রাহক পর্যায়ে সুদহার বেড়ে অনেক ব্যাংকে ১৫ শতাংশ ছাড়িয়েছে। মূল্যস্ফীতি না কমে আরও বেড়ে গত নভেম্বরে দাঁড়িয়েছে ১১ দশমিক ৩৮ শতাংশ।

সংশ্লিষ্টরা জানান, সুদসহ ঋণস্থিতির হিসাব হয়। বর্তমানে বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি গড় সুদহারের অনেক কম। গত অক্টোবর পর্যন্ত ব্যাংক ঋণের গড় সুদহার দাঁড়িয়েছে ১১ দশমিক ৭৭ শতাংশ। গত বছরের অক্টোবরে ছিল ৭ দশমিক ৮৯ শতাংশ। গত নভেম্বর শেষে বেসরকারি খাতে ঋণস্থিতি দাঁড়িয়েছে ১৬ লাখ ৬৪ হাজার ৩২৪ কোটি টাকা। আগের বছরের একই সময়ে ছিল ১৫ লাখ ৪৫ হাজার ৯৪১ কোটি টাকা। এর মানে এক বছরে ঋণস্থিতি বেড়েছে মাত্র ১ লাখ ১৮ হাজার ৩৮৩ কোটি টাকা। এক বছর আগের ঋণস্থিতির ওপর যদি গড়ে ১০ শতাংশ সুদ যোগ হয়, তাও ঋণস্থিতি দেড় লাখ কোটি টাকার বেশি বৃদ্ধির কথা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইটে ২০০৫-০৬ অর্থবছর থেকে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির তথ্য রয়েছে। দীর্ঘ এ সময়ে কেবল ২০২১ সালে মে মাসে একবার ঋণ প্রবৃদ্ধি ৮ শতাংশের নিচে নেমেছিল। বেসরকারি খাতে সর্বোচ্চ ঋণ প্রবৃদ্ধি ২৫ দশমিক ১৮ শতাংশে উঠেছিল ২০০৭-০৮ অর্থবছরে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৪ দশমিক ২৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয় ২০০৯-১০ অর্থবছরে। ২০১৯ সালের নভেম্বরের আগ পর্যন্ত প্রবৃদ্ধি সব সময় দুই অঙ্কের ঘরে ছিল। ওই মাসে প্রবৃদ্ধি কমে ৯ দশমিক ৮৭ শতাংশে নামে।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.