আজ: বুধবার, ০৮ জানুয়ারী ২০২৫ইং, ২৪শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৬ই রজব, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

০৭ জানুয়ারী ২০২৫, মঙ্গলবার |

kidarkar

বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরানোর জন্য সহায়তা করছে সরকার: অর্থ উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক : অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরানোর জন্য যথেষ্ট সহায়তা করছে সরকার। নিয়ন্ত্রণ সংস্থাকে সাপোর্ট দেয়া হচ্ছে, আইসিবিকে তিন হাজার কোটি টাকা ঋণ দেয়া হয়েছে এসব তো আস্থা ফেরাতেই করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (০৭ জানুয়ারি) রাজধানীর নিকুঞ্জে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ভবনে দেশের পুঁজিবাজারে চলমান সংকট নিরসনে করণীয় নির্ধারণে সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক আলোচনা সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, পৃথিবীর বড় বড় দেশগুলোতে ইন্ডাস্ট্রিগুলোর জন্য লং টার্ম ফাইন্যান্সিং পুঁজিবজার থেকে আসে। ব্যাংকের টাকা হলো জণগণের জমা করা টাকা।  প্রত্যেক দেশে, দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ পুঁজিবাজার থেকে আসে, ব্যাংক থেকে নয়। ব্যবসায়ীগুলিকে তাদের সমস্ত তহবিলের জন্য শুধুমাত্র ব্যাংকের উপর নির্ভর করা উচিত নয়। তাদের অন্তত ২০-৩০% নিজস্ব থাকা উচিত। সবকিছু যদি ঋণের উপর ভিত্তি করে হয়, তাহলে কিভাবে কাজ করবে?

সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আজকে আমরা পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট সকলের থেকে তাদের সুবিধা অসুবিধাগুলো শুনেছি। ইতিমধ্যে এগুলোর মাঝে কতোগুলো সমস্যা সমাধানের জন্য কিছু পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আপনারা অনেক সময় দেখেন যে শেয়ারমার্কেট পরে গেছে। এর কারণ বাজার রিফর্ম হচ্ছে৷ কারও উপকার করার জন্য এখানে কোন পলিসি নেয়া হয়নি, যা অতিতে হয়েছিলো।

তিনি বলেন,শুধু মাত্র রাষ্ট্রীয় কোম্পানিগুলোই নয়, বিদেশী কোম্পানি এবং পরিবার-পরিচালিত কোম্পানিগুলোকে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত করতে উৎসাহিত করা উচিত।

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, বাজারে ভালো কোম্পানির সংখ্যা না বাড়ালে ভিত্তি বাড়বে কীভাবে? বিনিয়োগকারীরা কোথায় বিনিয়োগ করবে? দেশি, সরকারি, বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে তালিকাভুক্ত করার জন্য কাজ করছি।

তিনি বলেন, বাজারে আস্থা ফিরিয়ে আনতে বর্তমানে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছি। এখন শুধু সংস্কার করা হচ্ছে। আমরা নতুন কোনো নীতি তৈরি করছি না। আমরা আগের মতো এগোবো না।

বিএসইসি এবং ডিএসইতে এখনও যারা অসদাচরণে জড়িত তাদের ব্যবস্থাও নেওয়া হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ইতিমধ্যে বেশ কিছু ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।  আমরা নিশ্চিত যে বাজারের উন্নতি হবে।

আইসিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, আমরা বাজেটে শুল্কসহ বিভিন্ন ছাড়ের মতো আর্থিক প্রণোদনা দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা করেছি। আমরা তাদের সুবিধা না দিলে বিদেশি কোম্পানি আসবে না।

তিনি বলেন, আমরা আশা করছি যে আসন্ন বাজেটে এই ধরনের ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করা হবে। উপদেষ্টা এর আগে মিটিং করেছিলেন এবং মূলধন লাভের উপর কর ছাড় দিয়েছিলেন। দীর্ঘমেয়াদী বাজার উন্নয়নের জন্য এই ধরনের প্রণোদনা প্রয়োজন।

ডিএসই পরিচালনা পর্ষদ আয়োজিত সভাটি পুঁজিবাজারের সকল স্টেকহোল্ডার এবং অর্থ উপদেষ্টার সাথে সকাল ১০টায় শুরু হয়েছিল। তবে সেখানে সাংবাদিকদের আসতে বাধা দেওয়া হয়।

বৈঠকে সাংবাদিকদের অনুমতি না দেওয়ার বিশেষ কোনো কারণ জানাননি ডিএসইর কর্মকর্তারা।

গত বছরের আগস্টে গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে দেশের পুঁজিবাজার অস্থিতিশীল পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে।

এই পরিস্থিতির মধ্যে অর্থ উপদেষ্টা সমস্ত মূল স্টেকহোল্ডারদের সাথে বৈঠকে অংশ নেওয়া পুঁজিবাজারের জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।

সাধারণত ডিএসইর জনসংযোগ বিভাগ এই ধরনের মিটিংগুলির জন্য সাংবাদিকদের আমন্ত্রণ কার্ড পাঠায় বা তাদের উপস্থিত হওয়ার জন্য ইমেল বা বার্তার মাধ্যমে তাদের অবহিত করে। কিন্তু আজ সকালে বৈঠকে তা হয়নি।

ডিএসইতে উপস্থিত সাংবাদিকরা দাবি করেছেন যে এটি স্টেকহোল্ডারদের সাথে প্রথম বড় মিটিংগুলির মধ্যে একটি যেখানে সাংবাদিকদের প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়নি।

ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত এ আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি), বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই), ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিবিএ), বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ), সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিডিবিএল), সেন্ট্রাল কাউন্টারপার্টি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিসিবিএল), ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি), ফাইনান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিলের (এফআরসি) প্রতিনিধিরা।

 

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.