আজ: বৃহস্পতিবার, ০৯ জানুয়ারী ২০২৫ইং, ২৫শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৭ই রজব, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

০৮ জানুয়ারী ২০২৫, বুধবার |

kidarkar

গাজাজুড়ে লাগাতার ইসরায়েলি হামলা, ৫ শিশুসহ নিহত আরও ৪৯

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বর্বর হামলায় আরও ৪৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এতে করে উপত্যকাটিতে নিহতের মোট সংখ্যা প্রায় ৪৫ হাজার ৯০০ জনে পৌঁছেছে।

এছাড়া ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে চলা এই হামলায় আহত হয়েছেন আরও লক্ষাধিক ফিলিস্তিনি। বুধবার (৮ জানুয়ারি) এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, মঙ্গলবার গাজাজুড়ে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৪৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে আল-মাওয়াসির তথাকথিত “নিরাপদ অঞ্চলে” পাঁচ শিশু এবং জাবালিয়ায় চালানো হামলায় আটজন লোকও নিহত হয়েছেন।

আল জাজিরা বলেছে, ইসরায়েলি বাহিনী আল-মাওয়াসির “মানবিক অঞ্চলসহ” গাজা উপত্যকাজুড়ে তাদের আক্রমণ আরও জোরদার করছে এবং আবাসিক বাড়িঘর ও বেসামরিক অবকাঠামোর উল্লেখযোগ্য ধ্বংস ঘটাচ্ছে।

এদিকে ত্রাণবাহী গাড়ির ওপর ইসরায়েলের আক্রমণ এবং জ্বালানি ট্যাংকসহ সহায়তাবাহী গাড়িতে ফিলিস্তিনি গ্যাংদের পদ্ধতিগত লুটপাটের কারণে মানবিক সংকট দিন দিন গভীরতর হচ্ছে। এই অপরাধী গোষ্ঠীগুলো ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর কাছ থেকে এক ধরনের সুরক্ষা পাচ্ছে।

এছাড়া গাজার ইউরোপীয় হাসপাতাল সতর্ক করে বলেছে, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাদের মজুদে থাকা জ্বালানি শেষ হয়ে যাবে এবং আল-আকসা হাসপাতালও বলেছে, জ্বালানির ঘাটতির কারণে তাদেরকে বিদ্যুৎ বন্ধ করে দিতে হবে।

এদিকে সর্বশেষ এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত গাজায় মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪৫ হাজার ৮৮৫ জনে পৌঁছেছে বলে মঙ্গলবার অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, নিরলস এই হামলায় আরও অন্তত এক লাখ ৯ হাজার ১৯৬ জন ব্যক্তিও আহত হয়েছেন।

ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ মনে করছে, গাজা উপত্যকা জুড়ে ধ্বংস হওয়া বাড়ির ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও ১০ হাজারেরও বেশি লোক নিখোঁজ রয়েছেন। মূলত  গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব সত্ত্বেও ইসরায়েল অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে তার নৃশংস আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে।

উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।

এছাড়া ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে প্রায় ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।

মূলত ইসরায়েলি আক্রমণ গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। আর খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজার সকলেই এখন খাদ্য নিরাপত্তাহীন অবস্থার মধ্যে রয়েছেন।

এছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। ইসরায়েল ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.