আজ: শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫ইং, ২৬শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৮ই রজব, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

০৯ জানুয়ারী ২০২৫, বৃহস্পতিবার |

kidarkar

টিউলিপের এখন দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ানো উচিত: দ্য টাইমস

নিজস্ব প্রতিবেদক: লন্ডনে ফ্ল্যাট উপহার এবং বাংলাদেশের রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে বেশ চাপের মধ্যে পড়েছেন যুক্তরাজ্যের অর্থ ও নগরবিষয়ক মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক। ইতিমধ্যে টিউলিপের বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগের বিষয়ে তদন্তের সিদ্ধান্তও নিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ।

তবে এই তদন্তের মধ্যেই সিটি মিনিস্টারের দায়িত্ব থেকে টিউলিপকে সরে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টাইমস।

রুপার্ট মারডকের মালিকানায় থাকা ব্রিটিশ সংবাদপত্রটির সম্পাদকীয়তে লেখা হয়েছে যে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর টিউলিপ সিদ্দিক আর দায়িত্ব চালিয়ে যেতে পারেন না।

এ ছাড়া টিউলিপকে এ দায়িত্বের জন্য বেছে নেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সমালোচনাও করা হয়েছে সম্পাদকীয়তে। বুধবার (৮ জানুয়ারি) দ্য টাইমস লিখেছে, এমন প্রেক্ষাপটে লেবার পার্টির সিটি মিনিস্টার হিসেবে টিউলিপকে বাছাই করাই ‘স্বচ্ছ ছিল না’। টিউলিপ এ পদের জন্য একমাত্র বিকল্প ছিলেন না।

টিউলিপকে এ দায়িত্বের জন্য বেছে নেওয়ার সমালোচনা করে সম্পাদকীয়তে আরও লেখা হয়েছে, স্যার কিয়ার স্টারমার তার উত্তর লন্ডনের প্রতিবেশীদের রাজনৈতিক সুক্ষ্মদর্শিতা ও যোগ্যতা যাই হোক না কেন, গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে তাদের বসিয়ে রেকর্ড করেছেন।

দ্য টাইমস তাদের সম্পাদকীয়তে আরও লিখেছে, যাই হোক যুক্তরাজ্যের আর্থিক সেবা খাতের দায়িত্বে টিউলিপকে বসানোর সিদ্ধান্ত কতটা অবিবেচনাপ্রসূত ছিল, তা সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে সামনে আসা অনেক প্রাসঙ্গিক কারণগুলোতে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

টিউলিপের বিরুদ্ধে তার খালা, বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত কর্তৃত্ববাদী শাসক শেখ হাসিনার সঙ্গে আর্থিক সম্পর্কের ব্যাপারে অনেকগুলো অভিযোগ সামনে এসেছে।

তদন্ত কর্মকর্তা টিউলিপের আবাসন বা ‘উপহারের ফ্ল্যাট’ এবং এর সঙ্গে শেখ হাসিনা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের যোগসূত্র খুঁজবেন। তদন্ত চলাকালে তার সরে দাঁড়ানোই উচিত হবে। তবে তদন্তে যদি তিনি নির্দোষ প্রমাণিত হন তাকে সরকারে ফিরিয়ে আনার পথ খুলে যাবে।

টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির বিষয়ে তদন্ত করবেন ব্রিটিশ সরকারের ইনডিপেনডেন্ট এথিকস অ্যাডভাইজর (স্ট্যান্ডার্ডস ওয়াচডগ) স্যার লাউরি ম্যাগনাস।

দ্য টাইমস লিখেছে, গত বছরের জুলাইয়ে মন্ত্রী হওয়ার সময় টিউলিপ সিদ্দিক তার পরিবারের আর্থিক ও রাজনৈতিক বিষয়গুলো কেবিনেট অফিসে স্পষ্ট করেছিলেন কিনা, সেটি অবশ্যই তদন্ত করে দেখা উচিত। আর যেহেতু টিউলিপকে নিয়ে এত বিতর্ক হচ্ছে, সেহেতু তিনি মন্ত্রিপরিষদের দায়দায়িত্ব পালনে অক্ষম। দুর্নীতি দমন মন্ত্রীর বিরুদ্ধেই দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। আর্থিক দুর্নীতির অপরাধের ঘটনাগুলোতে তিনি নিজেকেই বাঁচাতে বা দূরে রাখতে পারেননি।

সম্পাদকীয়তে আরও লেখা হয়েছে, দেশের অর্থনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ সময়টিতে এ অবস্থায় টিউলিপ সিদ্দিক তার দায়িত্ব আর চালিয়ে যেতে পারেন না। গণমাধ্যমের সামনেও তিনি আসতে পারেন না। তার এখন একমাত্র কাজ হবে অনুসন্ধান চলাকালে দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ানো। কিন্তু যদি তিনি সেটি না করেন, তবে তা হবে স্যার কিয়ার স্টারমারের জন্য অপ্রয়োজনীয় বিরক্তির কারণ।

টিউলিপের বিকল্প হিসেবে অন্য কাউকে তার পদে বসানোর কথাও লিখেছে সংবাদমাধ্যমটি। তার পরিবর্তে সতীর্থ আর্থিক সেবা বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী এমা রেনল্ডসকে বেছে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.