আজ: বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫ইং, ১লা মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৪ই রজব, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

১৫ জানুয়ারী ২০২৫, বুধবার |

kidarkar

সংবিধানে বড় পরিবর্তন: সরকারের সংস্কার পরিকল্পনায় ১৫টি গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক : আজ (১৫ জানুয়ারি ২০২৫), নির্বাচন ব্যবস্থা, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), পুলিশ বাহিনী এবং সংবিধান সংস্কারের জন্য গঠিত চারটি কমিশন তাদের প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দিয়েছে। এসব কমিশনের সুপারিশগুলো সরকারের বিভিন্ন কাঠামোকে আরও কার্যকর এবং প্রাতিষ্ঠানিকভাবে শক্তিশালী করার উদ্দেশ্যে।

১. নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন:নির্বাচন ব্যবস্থাকে আরও প্রাতিষ্ঠানিক এবং কার্যকর করতে কমিশন বেশ কিছু সুপারিশ করেছে। নির্বাচনের সুষ্ঠুতা ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে, নির্বাচন কমিশনকে আরও ক্ষমতাশালী করা এবং নির্বাচন প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন আনা হয়েছে।

– প্রধান নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে আইনে সংশোধন।- ইসির ক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে কার্যকর ব্যবস্থা গড়ে তোলা।- ‘না’ ভোটের সুযোগ যুক্ত করা।- সংরক্ষিত নারী আসনে সরাসরি ভোটের ব্যবস্থা।- জাতীয় পরিচয়পত্রের সেবা ইসির অধীনে আনা এবং দুই কক্ষের পার্লামেন্ট গঠন।

এছাড়া, নির্বাচন প্রক্রিয়ায় আরও সুনির্দিষ্ট শাস্তির ব্যবস্থা এবং মনোনয়ন পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনার সুপারিশ করা হয়েছে।

২. দুদক সংস্কার কমিশন:দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কে আরও স্বাধীন এবং কার্যকরী করতে ৪৭ দফা সুপারিশসহ প্রতিবেদন জমা দিয়েছে এই কমিশন। কমিশন প্রধান ইফতেখারুজ্জামান জানিয়েছেন, প্রতিবেদনটি দুটি দিক নিয়ে তৈরি করা হয়েছে:

– দুদক সংক্রান্ত সরাসরি সংস্কার।- রাষ্ট্র কাঠামোর মধ্যে পরিবর্তন এনে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গড়ে তোলা।

৩. পুলিশ সংস্কার কমিশন:পুলিশ বাহিনীতে সংস্কার আনতে, কমিশন একটি সমীক্ষার ভিত্তিতে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। এতে জনগণ বিশেষ করে ৮৮.৭ শতাংশ মানুষ রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত পুলিশ বাহিনী চেয়েছে।

– পুলিশ বাহিনীতে নিয়োগ, বদলি, বেতনভাতা এবং পদোন্নতি ক্ষেত্রে বৈষম্য দূর করার সুপারিশ।- পুলিশ বাহিনীর ওপর রাজনৈতিক প্রভাব কমানো এবং পুলিশী বল প্রয়োগের ক্ষেত্রে শৃঙ্খলা আনা।

এছাড়া, জুলাই-অগাস্টে পুলিশের অপ্রীতিকর কার্যক্রমের জন্য শাস্তির সুপারিশও রয়েছে।

৪. সংবিধান সংস্কার কমিশন:সংবিধান সংস্কার কমিশন সংবিধানে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনার প্রস্তাব দিয়েছে। এর মূল লক্ষ্য হচ্ছে ক্ষমতার ভারসাম্য আনা এবং প্রাতিষ্ঠানিক বিকেন্দ্রীকরণ।

– এক ব্যক্তির দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সুযোগ না থাকা।- রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতায় ভারসাম্য আনা।- বিচার বিভাগের স্বাধীনতা বাড়ানো এবং সাংবিধানিক সংস্থাগুলোর সংখ্যা বাড়ানো।

কমিশনের প্রধান অধ্যাপক আলী রীয়াজ জানান, সংস্কারের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে এককেন্দ্রীক ক্ষমতার পরিবর্তে জবাবদিহিমূলক ক্ষমতা প্রতিষ্ঠা করা।

এই সংস্কার কমিশনগুলো ১৫টি কমিশনের মধ্যে প্রথম ছয়টি, যার মধ্যে নির্বাচন ব্যবস্থা, দুদক, পুলিশ, বিচার বিভাগ, জনপ্রশাসন এবং সংবিধান সংস্কারের জন্য গঠিত হয়। কমিশনগুলোর প্রতিবেদন জমা দেওয়ার সময়সীমা ৯০ দিন ছিল, যা পরে এক্সটেনশন নিয়ে ১৫ জানুয়ারি ২০২৫ তে জমা দেওয়া হয়।

এই সংস্কারগুলো সরকারের সুষ্ঠু পরিচালনা ও উন্নয়ন নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে, যার মাধ্যমে জনগণের আস্থা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.