ইতিবাচক ধারায় ফেরার ইঙ্গিত দিচ্ছে শেয়ারবাজার
নিজস্ব প্রতিবেদক : পতনের বৃত্ত থেকে বেরিয়ে ঊর্ধ্বমুখী ধারায় ফেরার ইঙ্গিত দিচ্ছে দেশের শেয়ারবাজার। আগের কার্যদিবসের ধারাবাহিকতায় সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবস সোমবার (২০ জানুয়ারি) দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। ফলে মূল্যসূচকের বড় উত্থান হয়েছে বাজারটিতে। পাশাপাশি বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পাশাপাশি অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠান। ফলে এ বাজারটিতেও মূল্যসূচক বেড়েছে। এর মাধ্যমে চলতি সপ্তাহের দুই কার্যদিবসেই উভয় শেয়ারবাজার মূল্যসূচক বাড়লো। তবে সিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ কমেছে।
এর আগে গত সপ্তাহে লেনদেন হওয়া পাঁচ কার্যদিবসেই শেয়ারবাজারে দরপতন হয়। এতে এক সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন কমে দুই হাজার ৬৫৮ কোটি টাকা। আর প্রধান মূল্যসূচক কমে ৬০ দশমিক ৫১ পয়েন্ট। এমন পতনের পর চলতি সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস লেনদেনের শুরুতে নেতিবাচক প্রবণতা দেখা দিলেও লেনদেনের শেষদিকে বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ে। ফলে টানা পাঁচ কার্যদিবস কমার পর মূল্যসূচকের ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মেলে।
এ পরিস্থিতিতে সোমবার ডিএসইতে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতে সূচকের ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মেলে। লেনদেনের শুরুতে দেখা দেওয়া এই ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা লেনদেনের শেষ পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। এমনকি লেনদেনের সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে দাম বাড়ার তালিকাও বড় হতে থাকে। ফলে মূল্যসূচকের মোটামুটি বড় উত্থান দিয়েই দিনের লেনদেন শেষ হয়।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ২৪৮টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ৮১টির এবং ৭১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৫০ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ১৯৫ পয়েন্টে উঠে এসেছে।
অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ২০ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৯২৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১৫ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ১৭১ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
মূল্যসূচক বাড়ার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও বেড়েছে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৪২৬ কোটি ৯২ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৩৬৮ কোটি টাকা। সে হিসাবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন বেড়েছে ৫৮ কোটি ৯২ লাখ টাকা।
এ লেনদেনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে লাভেলো আইসক্রিমের শেয়ার। টাকার অঙ্কে কোম্পানিটির ১৪ কোটি ৪৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা মিডল্যান্ড ব্যাংকের ১৪ কোটি ২৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ১২ কোটি ৭৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- ওরিয়ন ইনফিউশন, খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ, আফতাব অটোমোবাইল, এডিএন টেলিকম, কোহিনূর কেমিক্যাল, ফাইন ফুডস এবং মুন্নু ফেব্রিক্স।
অপর শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৮৫ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২০০টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১১২টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৬১টির এবং ২৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ২ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৩ কোটি ২৬ লাখ টাকা।