শেয়ারবাজারে ফিরেছে ইতিবাচক প্রবণতা
নিজস্ব প্রতিবেদক : পতনের বৃত্ত থেকে বের হয়ে ইতিবাচক ধারায় দেশের শেয়ারবাজার। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার পাশাপাশি মূল্যসূচকও বাড়ছে। সেই সঙ্গে লেনদেনের গতিও বাড়তে শুরু করেছে। ৩০০ কোটি টাকার ঘরে নেমে যাওয়া লেনদেন এখন ৫০০ কোটি টাকার কাছাকাছি চলে এসেছে।
আগের দুই কার্যদিবসের ধারাবাহিকতায় সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবস মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। ফলে মূল্যসূচকও বেড়েছে। সেই সঙ্গে বাজারটিতে দেড় মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পাশাপাশি অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠান। ফলে এ বাজারটিতেও মূল্যসূচক বেড়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ। এর মাধ্যমে চলতি সপ্তাহের তিন কার্যদিবসেই উভয় শেয়ারবাজার মূল্যসূচক বাড়লো।
এর আগে গত সপ্তাহে লেনদেন হওয়া পাঁচ কার্যদিবসেই শেয়ারবাজারে দরপতন হয়। এতে এক সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন কমে দুই হাজার ৬৫৮ কোটি টাকা। আর প্রধান মূল্যসূচক কমে ৬০ দশমিক ৫১ পয়েন্ট। এমন পতনের পর চলতি সপ্তাহের দুই কার্যদিবস ঊর্ধ্বমুখী থাকে শেয়ারবাজার।
আর মঙ্গলবার ডিএসইতে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতে সূচকের ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মেলে। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার কারণে লেনদেনের এক পর্যায়ে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ৩৯ পয়েন্ট বেড়ে যায়।
তবে লেনদেনের শেষদিকে কিছু বিনিয়োগকারী মুনাফা তুলে নেওয়ার জন্য বিক্রির চাপ বাড়ায়। এতে দাম বাড়ার তালিকা থেকে বেশি কিছু প্রতিষ্ঠান দাম কমার তালিকায় চলে আসে। ফলে দাম বাড়ার তালিকা ছোট হয়ে আসে। সেই সঙ্গে আটকে যায় সূচকের বড় উত্থান। তবে দাম বাড়ার তালিকায় বেশি প্রতিষ্ঠান থাকার পাশাপাশি সবকটি মূল্যসূচক বেড়েই দিনের লেনদেন শেষ হয়।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ১৬৫টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ১৫৬টির এবং ৮০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৬ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ২০২ পয়েন্টে উঠে এসেছে।
অন্য দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ২ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৯২৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ১৭২ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
মূল্যসূচক বাড়ার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও বেড়েছে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৪৯৯ কোটি ১৪ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৪২৬ কোটি ৯২ টাকা। সে হিসাবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন বেড়েছে ৭২ কোটি ২২ লাখ টাকা। এর মাধ্যমে গত বছরের ৩ ডিসেম্বরের পর ডিএসইতে সর্বোচ্চ লেনদেন হলো।
এ লেনদেনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে ওরিয়ন ইনফিউনের শেয়ার। টাকার অঙ্কে কোম্পানিটির ২৩ কোটি ২৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা এটিএন টেলিকমের ১৬ কোটি ৭২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ১৩ কোটি ৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ফারইস্ট নিটিং।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ, খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ, আফতাব অটোমোবাইল, বেস্ট হোল্ডিং, ড্রাগন সোয়েটার, ওরিয়ন ফার্মা এবং লাভেলো আইসক্রিম।
অন্য শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৬১ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৮৭টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৯৫টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৬১টির এবং ৩১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৪ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ২ কোটি ৫৮ লাখ টাকা।