আজ: রবিবার, ৩০ মার্চ ২০২৫ইং, ১৬ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৯শে রমজান, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

০৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, রবিবার |

kidarkar

পুঁজিবাজারে সেঞ্চুরির কাছে ‘জেড’ গ্রুপের শেয়ার, শঙ্কায় বিনিয়োগকারীরা!

খালিদ হাসান : পুঁজিবাজারে দিন দিন জেড ক্যাটাগরি বা নিম্নমানের শেয়ারেরর সংখ্যা বাড়ছে। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ২৭ কোম্পানিকে জেড শ্রেনিভুক্ত করে ডিএসই। নতুন বছরে এসেও এর সংখ্যা বাড়ছেই। ৮ই ফ্রেব্রুয়ারী পযন্ত জেড ক্যাটাগরির শেয়ারের সংখ্যা প্রায় একশ। অথাৎ প্রায় সেঞ্চুরির কাছেই। জেড ক্যাটাগরি শেয়ারের সংখ্যা বৃদ্ধির ফলে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উদ্বেগ ও শঙ্কার সৃষ্টি করেছে।

জেড ক্যাটাগরি হলো এমন শেয়ার বা কোম্পানিগুলির শ্রেণিবিন্যাস, যেগুলি আর্থিকভাবে দুর্বল বা নিয়ন্ত্রক সংস্থার নির্দেশনা মেনে চলতে ব্যর্থ হয়। এই কোম্পানিগুলি সাধারণত নিম্নমানের শেয়ার হিসাবে বিবেচিত হয় এবং বিনিয়োগকারীদের জন্য উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ। জেড ক্যাটাগরির কোম্পানিগুলি সাধারণত নিয়মিত লভ্যাংশ দিতে পারে না, তাদের আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশে বিলম্ব করে বা অন্যান্য নিয়মকানুন লঙ্ঘন করে।

ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)-তে তালিকাভুক্ত ৩৯৫টি কোম্পানির মধ্যে এখন ৯৫টি কোম্পানি জেড ক্যাটাগরিতে রয়েছে, যা মোট তালিকাভুক্ত কোম্পানির প্রায় ২৪%। এই কোম্পানিগুলি আর্থিক দুর্বলতা, লভ্যাংশ প্রদানে ব্যর্থতা বা নিয়ন্ত্রক সংস্থার নির্দেশনা অনুসরণে ব্যর্থতার কারণে জেড ক্যাটাগরিতে স্থান পেয়েছে।

বিনিয়োগকারীদের অভিযোগ, ক্যাটাগরিতে পরিবর্তনের ফলে কোম্পানিগুলো দর হারিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয় বিনিয়োগকারীরা।

তারা বলছেন, কোনো কোম্পানি যদি অনিয়ম বা অপরাধ করে তার জন্য সে কোম্পানিকে শাস্তি দেওয়া উচিত। যারা কোম্পানির দ্বায়িত্বে তাদের শাস্তি না দিয়ে কোম্পানির ক্যাটাগরি পরিবর্তন করা হচ্ছে। এতে কোম্পানির অপরাধের শাস্তি পাচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা।

জানা গেছে, গত জানুয়ারী ও ফেব্রুয়ারী মাসে ১৭টি কোম্পানির শেয়ার জেড ক্যাটাগরিতে স্থানান্তরিত হয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত মোট কোম্পানির প্রায় এক-চতুর্থাংশ এখন জেড ক্যাটাগরিতে রয়েছে।এই কোম্পানিগুলির মধ্যে অনেকগুলি দীর্ঘদিন ধরে আর্থিক সংকটে রয়েছে এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থা হারিয়েছে।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কোম্পানি গুলো আইনের পরিপালন না করায় এর দায় পরিচালনা পর্ষদকেই নিতে হবে। কোনো কোম্পানি হঠাৎ করেই জেড ক্যাটাগরিতে স্থানান্তর হলে ক্ষতিগ্রস্ত হয় বিনিয়োগকারী। এর জন্য রেগুলেটদের পলিসিও দায়ী।

বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, পুঁজিবাজারে জেড ক্যাটাগরির শেয়ার বৃদ্ধি বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। তবে সঠিক গবেষণা, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থার কঠোর নজরদারির মাধ্যমে এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করা সম্ভব। বিনিয়োগকারীদের উচিত সতর্কতা অবলম্বন করে বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত নেওয়া এবং পুঁজিবাজারের স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন।

এ বিষয়ে বিএসইসির মুখপাত্র রেজাউল করিম বলেন, জেড ইস্যুতে বিএসইসি স্টক এক্সচেঞ্জ ও টাস্কফোর্সের প্রস্তাবের অপেক্ষায় রয়েছে। বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষায় কমিশন সমাধানের চেষ্টা করছে।

তিনি বলেন, বিএসইসির উদ্যোগ ও প্রচেষ্টার ফলে কনফিডেন্স সিমেন্ট পিএলসি ‘জেড’ ক্যাটাগরি থেকে ‘এ’ ক্যাটাগরিতে উন্নীত হয়েছে। বিএসইসির তড়িৎ পদক্ষেপ এবং আন্তরিক প্রচেষ্টার ফলেই সমাধান সম্ভব হয়েছে। আগামীতেও দেশের পুঁজিবাজার ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে বিএসইসির এ ধরনের কার্যক্রম ও উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে।

৭ উত্তর “পুঁজিবাজারে সেঞ্চুরির কাছে ‘জেড’ গ্রুপের শেয়ার, শঙ্কায় বিনিয়োগকারীরা!”

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.