আজ: শুক্রবার, ২১ মার্চ ২০২৫ইং, ৭ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২০শে রমজান, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, শুক্রবার |

kidarkar

শবে বরাত উপলক্ষ্যে বেড়েছে গরু ও মুরগির মাংসের দাম

নিজস্ব প্রতিবেদক: সারাদেশে যথাযথ ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে পালিত হচ্ছে পবিত্র শবে বরাত। দিনটিকে কেন্দ্র করে নিত্যপণ্যের বাজারে উর্ধ্বগতি দেখা গেছে। বিশেষ করে চাহিদা বেশি থাকার সুযোগে বেড়েছে, গরু, মুরগি ও খাসি মাংসের দাম।

খুচরা বাজারের তথ্য অনুযায়ী, গত সপ্তাহেও প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হয়েছে ৭৫০ টাকা কেজি দরে। শবে বরাতের দিন ৭৮০ টাকা থেকে শুরু করে ৮০০ টাকা পর্যন্ত কেজি প্রতি গরুর মাংস বিক্রি হতে দেখা গেছে। এক্ষেত্রে এক সপ্তাহের ব্যবধানে গরুর মাংসে দাম বেড়েছে সর্বনিম্ন ৩০ থেকে সর্বোচ্চ ৫০ টাকা পর্যন্ত।

অন্যদিকে ব্রয়লার মুরগির দাম গত তিনদিন আগেও ছিল প্রতি কেজি ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা। এখন এক লাফে হয়েছে ২১০ টাকা। এক্ষেত্রে ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ২০ থেকে ৩০ টাকা করে। এছাড়া প্রায় গত ছয় মাস ধরে রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে খাসির মাংস কেজি প্রতি বিক্রি হতো ১১০০ টাকা কেজি দরে। কিন্তু আজ হঠাৎ করে ব্যবসায়ীরা খাসির মাংসের কেজি প্রতি দাম হাঁকাচ্ছেন ১১৫০ টাকা।

শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজধানীর শাহজাদপুর কাঁচাবাজার, বাড্ডা কাঁচাবাজার ও মালিবাগ কাঁচাবাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।
বাজারগুলোতে সরেজমিনে দেখা গেছে, বাজারে প্রতিটি মাংসের দোকানে ক্রেতাদের লম্বা ভিড়। ক্রেতারা এসে প্রথমে ব্যবসায়ীদের কাছে মাংসের দাম জিজ্ঞাসা করছেন। বাড়তি দাম শুনে অনেক ক্রেতাই বিক্রেতার কাছে ফিরতি প্রশ্ন করছেন হঠাৎ করে কেন মাংসের দাম বেড়ে গেল। ক্রেতাদের প্রশ্নের উত্তরে ব্যবসায়ীরা বলছেন, শবে বরাতের বাজারে দাম একটু বেশি থাকে।

রাজধানীর শাহজাদপুর কাঁচাবাজারে গরুর মাংস কিনতে আসা ক্রেতা মোহাম্মদ মুন্না বলেন, গত কয়েক মাস ধরেই তো গরুর মাংস ৭৫০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছিল। কিন্তু আজ হঠাৎ করে ৮০০ টাকা করে দাম চাচ্ছে। তারা কীসের ভিত্তিতে ৫০ টাকা দাম বাড়িয়েছে এটার কোনো সঠিক উত্তর দিচ্ছে না। শবে বরাতের সময় মানুষ একটু বাসায় মাংস নিতে পছন্দ করে তাই বাড়তি দাম হলেও কিনে নিচ্ছে। এছাড়া খাসির মাংসের দামও ছিল ১১০০ টাকা করে। সেখানেও তারা ৫০ টাকা দাম বৃদ্ধি করেছে।

মাংসের দাম বৃদ্ধি নিয়ে শাহজাদপুর কাঁচাবাজারের মাংস বিক্রেতা আলামিন মিয়া বলেন, গরু ও ছাগলের দাম বাজারে প্রচুর বৃদ্ধি পেয়েছে। সে কারণে মাংসের দাম একটু বেশি। এছাড়া শবে বরাতের সময় দাম একটু বেশি থাকে, এটা নতুন কিছু না।

অন্যদিকে যারা খাসি ও গরুর মাংস কিনতে পারছেন না, তারা ব্রয়লার মুরগি কিনতে গিয়ে বাড়তি দাম দিতে বাধ্য হচ্ছেন।

রাজধানীর উত্তর বাড্ডা কাঁচাবাজারের ব্রয়লার মুরগি কিনতে গিয়ে ক্রেতা মাইনুল ইসলাম বলেন, গরু ও খাসির মাংস তো আগে থেকেই অনেক দাম। ব্রয়লার মুরগির দামও বেশি ছিল। কিন্তু ১৯০ টাকা কেজি মুরগির দাম আজ হয়ে গেছে ২১০ টাকা। এভাবে হুট করে দাম বেড়ে গেলে তো আমাদের মত মানুষ জনের অনেক কষ্ট হয়।

মুরগির দামের বৃদ্ধি নিয়ে বিক্রেতা দুলাল মিয়া বলেন, গত তিনদিন আগেও ১৯০ টাকা করে বিক্রি করতাম। কিন্তু হঠাৎ সাপ্লাই কমে গেছে। আমার মনে হয় পাইকারি বিক্রেতারা শবে বরাতকে কেন্দ্র করে সাপ্লাই কমাই দিয়ে দাম বাড়িয়েছে। এখন বাড়তি দামে কিনে তো আমাদেরকে বাড়তি দামি বিক্রি করতে হবে।

এদিকে মাংসের বাজারে দামের আগুন থাকলেও সবজির বাজারে টানা স্বস্তি চলছে ক্রেতাদের জন্য।

সর্বশেষ খুচরা বাজারের তথ্য অনুযায়ী, প্রতি কেজি টমেটো ৩০ টাকা করে, আলু ২৫ টাকা, বেগুন আকার অনুযায়ী ৫০ থেকে ৭০ টাকা, গাজর ৩০ টাকা, মূলা ৩০ টাকা, হাইব্রিড শসা ৬০ টাকা, দেশী শসা ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ফুল ও বাঁধাকপি প্রতি পিস ২০ থেকে ২৫, লাউয়ের পিস ৪০ থেকে ৬০, টমেটো ২০ থেকে ২৫ টাকা কেজি, শসা ৫০ থেকে ৬০ ও কাঁচা মরিচের কেজি ৪০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

স্বস্তিতে রয়েছে পেঁয়াজের বাজার দামও। তবে দাম বাড়তি রয়েছে রসুনের। খুচরা বাজারের তথ্য অনুযায়ী প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকায়, দেশি নতুন রসুন ১৫০ থেকে ১৬০ এবং আমদানি করা রসুনের কেজি ২৫০ থেকে ২৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। একই সঙ্গে আদারও কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা দর বেড়ে ১৭০ থেকে ১৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.