আজ: রবিবার, ৩০ মার্চ ২০২৫ইং, ১৬ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৯শে রমজান, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

০৪ মার্চ ২০২৫, মঙ্গলবার |

kidarkar

এশিয়া ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার কারসাজি: হিরু-সাদিয়ার বিরুদ্ধে ১৯ কোটি টাকা জরিমানা

নিজস্ব প্রতিবেদক : পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বিমা কোম্পানি এশিয়া ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের শেয়ার কারসাজিতে জড়িত থাকার অভিযোগে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে। শেয়ার কারসাজির ঘটনায় সমবায় অধিদপ্তরের উপ-নিবন্ধক ও শেয়ার ব্যবসায়ী মো. আবুল খায়ের হিরু, তার স্ত্রী কাজী সাদিয়া হাসান এবং তাদের প্রতিষ্ঠান ডিআইটি কো-অপারেটিভকে মোট ১৯ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

২০২০ সালের ২২ অক্টোবর থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত সময়ের মধ্যে হিরু ও তার সহযোগীরা সিরিজ ট্রেডিংয়ের মাধ্যমে কৃত্রিমভাবে এশিয়া ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারের মূল্য বাড়ান। মাত্র কয়েক সপ্তাহের ব্যবধানে শেয়ারের দাম ৬০ টাকা থেকে ১১৪.১০ টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়, যা স্বাভাবিক বাজার প্রবণতার বাইরে। এই কারসাজির ফলে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা বিভ্রান্ত হয়ে ক্ষতির মুখে পড়েন, আর অপরাধীরা বিপুল পরিমাণ মুনাফা হাতিয়ে নেন।

বিএসইসির তদন্তে উঠে এসেছে, একাধিক বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিও) হিসাব ব্যবহার করে পরিকল্পিতভাবে শেয়ার লেনদেন করা হয়, যার ফলে বাজারে কৃত্রিম চাহিদা তৈরি হয়। এতে শেয়ারের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়তে থাকে, যা বাজারের স্বাভাবিক গতিবিধিকে ব্যাহত করে। তদন্তের ভিত্তিতে হিরুকে ৪ কোটি টাকা, তার প্রতিষ্ঠান ডিআইটি কো-অপারেটিভকে ৫ কোটি টাকা এবং স্ত্রী কাজী সাদিয়া হাসানকে ১০ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

এর আগেও আবুল খায়ের হিরু ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে একাধিকবার শেয়ার কারসাজির অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। বিএসইসি এর আগে সোনালী পেপার অ্যান্ড বোর্ড মিলস ও এনআরবিসি ব্যাংকের শেয়ার কারসাজির দায়ে হিরু, তার প্রতিষ্ঠান ও স্ত্রীকে জরিমানা করেছিল। ওই ঘটনায় বিশ্বখ্যাত ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানও শেয়ার কারসাজিতে জড়িত থাকায় ২ কোটি ২৬ লাখ টাকা জরিমানার মুখে পড়েন।

পুঁজিবাজারে দীর্ঘদিন ধরে এশিয়া ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার নিয়ে কারসাজির গুঞ্জন থাকলেও, এতদিন এ নিয়ে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তবে বিগত সরকারের সময়ে শেয়ারবাজারে নানা অনিয়মের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে দেখা না গেলেও, বর্তমান কমিশন বাজারে স্বচ্ছতা ফিরিয়ে আনতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। খন্দকার রাশেদ মাকসুদের নেতৃত্বে পুনর্গঠিত বিএসইসি শেয়ার কারসাজির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে এবং ভবিষ্যতেও এমন কঠোর ব্যবস্থা অব্যাহত থাকবে।

এই কারসাজির কারণে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা যে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন, তার পুনরাবৃত্তি রোধে বিএসইসি’র এ ধরনের উদ্যোগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাজারের স্থিতিশীলতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে শেয়ারবাজারের সব অনিয়মের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে কমিশন জানিয়েছে।

 

১ টি মতামত “এশিয়া ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার কারসাজি: হিরু-সাদিয়ার বিরুদ্ধে ১৯ কোটি টাকা জরিমানা”

  • মোঃ মামুনুর রশিদ says:

    বাহ! BSEC এর তো সেই performance. সাড়ে ৪ বছর পরে তারা ধরতে পারছে।
    BSEC তখন কি ঘাস কাটছে ? এই সমস্ত BSEC Employee দের কে জরিমানার আওতাই
    নিয়ে আসা হোক। এরা সবগুলা শেয়ার কারসাজিতে জড়িত।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.