সাত মাসে ২০ শতাংশও ঋণ বিতরণ করতে পারেনি ১৪ ব্যাংক

নিজস্ব প্রতিবেদক: চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ব্যাংকগুলোকে ৩৮ হাজার কোটি টাকার কৃষি ও পল্লীঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে (জুলাই থেকে জানুয়ারি) ব্যাংকগুলো ১৯ হাজার ২১৫ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করেছে। যা লক্ষ্যমাত্রার ৫০ দশমিক ৫৭ শতাংশ। তবে এ সময়ে কোনো ঋণ বিতরণ করতে পারেনি দুই ব্যাংক, তিন ব্যাংকের ঋণ বিতরণের পরিমাণ ১০ শতাংশের কম। এছাড়া ২০ শতাংশ কৃষি ও পল্লীঋণ বিতরণ করতে পারেনি ১৪ ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সবশেষ প্রতিবেদন বলছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) দুই ব্যাংক কৃষি ও পল্লী খাতে ঋণ বিতরণ করতে পারেনি। এ দুই ব্যাংক হলো বেসরকারি খাতের পদ্মা ব্যাংক এবং বিদেশি খাতের উরি ব্যাংক। এছাড়া ১০ শতাংশেরও কম ঋণ বিতরণকারী ব্যাংকগুলোর মধ্যে রয়েছে- বেসরকারি খাতের মধুমতি ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক এবং বিদেশি এইচএসবিসি।
শরিয়াহ ভিত্তিক ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক বিতরণ করেছে ১০ দশমিক ৫৯ শতাংশ। ১০০ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও ৭ মাসে মাত্র ৪ কোটি ৮৯ লাখ টাকার কৃষি ও পল্লীঋণ বিতরণ করেছে ইউনিয়ন ব্যাংক। ৩৩ কোটি টাকা ঋণ বিতরণের লক্ষ্য থাকা মধুমতি ব্যাংক বিতরণ করেছে ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা। বিদেশি এইচএসবিসি ব্যাংক লক্ষ্যমাত্রার ৮ দশমিক ৭৭ শতাংশ ঋণ বিতরণ করেছে। এ ব্যাংকটির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৮৫ কোটি টাকা। তবে ৭ মাসে ব্যাংকটি বিতরণ করেছে ২৫ কোটি টাকা।
দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে কৃষি ও কৃষি সংশ্লিষ্ট কাজে অর্থ সরবরাহ নিশ্চিত করতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর জন্য মোট ঋণের অন্তত ২ শতাংশ কৃষি খাতে বিতরণ বাধ্যতামূলক করেছে সরকার। যেসব ব্যাংক লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী কৃষিঋণ বিতরণ করবে না, তাদের জরিমানার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। যেসব ব্যাংক লক্ষ্যমাত্রার অর্থ বিতরণে ব্যর্থ হবে তারা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট তহবিলে ওই অর্থ জমা দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। এর ফলে প্রতি বছরই বাড়ছে কৃষিঋণ বিতরণ। বছরের শুরুতে লক্ষ্যও ঠিক করে দেওয়া হচ্ছে। যাতে ১২ মাসেই বিশেষ করে ফসল চাষের শুরুতে কৃষকরা সময় মতো ঋণ পান। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে কৃষিঋণের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ৩৮ হাজার কোটি টাকা, যা ২০০৯-১০ অর্থবছরে ছিল ১০ হাজার কোটি টাকারও কম।
চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে ব্যাংকগুলোর বিতরণ করা কৃষি ও পল্লীঋণের মধ্যে সরকারি ব্যাংকগুলো বিতরণ করেছে ৮ হাজার ৯৩ কোটি টাকা। বিদেশি ব্যাংকগুলো ৭৮৩ কোটি টাকা বিতরণ করেছে। এসময়ে বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলো বিতরণ করেছে ১০ হাজার ৩৩৯ কোটি টাকা।