সামিটের সৌজন্যে সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশীসহ ২০০ প্রবাসী শ্রমিকদের নিয়ে ইফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক: পবিত্র রমজান মাসে সিঙ্গাপুরে বসবাসরত শ্রমিকদের প্রতি সম্মানার্থে সামিট পাওয়ার ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড বাংলাদেশীসহ প্রায় ২০০ প্রবাসী শ্রমিকদের জন্য ইফতার আয়োজন করে।
গত ২০ মার্চ ২০২৫ তারিখে সামিট গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আজিজ খান, পিবিএম সিঙ্গাপুরের একটি ডরমিটরিতে প্রবাসী শ্রমিকদের সাথে ইফতার করেন। আরও ২০০ জন প্রবাসী শ্রমিক, যারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি তাঁদের জন্য ইফতার পাঠানো হয়।
এ ছাড়াও সামিটের পক্ষ থেকে ১,৪০০ প্রবাসী শ্রমিককে উপহার দেওয়া হয়, আর সাথে শিক্ষার্থীদের হাতে তৈরি শুভেচ্ছা কার্ড এবং কারুশিল্পের পণ্যও দেওয়া হয়েছে।
সিঙ্গাপুরের দুটি স্কুল, জেন্ড প্রাইমারি স্কুলের বিগ হার্ট কেয়ার সার্ভিসেস এবং জার্মান ইউরোপিয়ান স্কুল সিঙ্গাপুরের (“জিইএসএস”) থেকে প্রায় ৫০ জন শিক্ষার্থী এসব শুভেচ্ছা কার্ড বানিয়েছেন। শিশু শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে জিইএসএসের শিক্ষকেরা কার্ড ও কারুপণ্য হস্তান্তর করেন।
বাংলাদেশের বৃহত্তম বেসরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সামিট পাওয়ার ইন্টারন্যাশনালের এটা ছিল সিঙ্গাপুরে আয়োজিত প্রথম ইফতার অনুষ্ঠান।
সামিট গ্রুপ প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বাংলাদেশে বিভিন্ন কর্পোরেট সোশ্যাল রেসপন্সিবিলিটি (“সিএসআর”) উদ্যোগের সাথে জড়িত। সুবিধাবঞ্চিত নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী শিশুদের স্কুল পরিচালনা, ইউনিসেফের ঝড়েপড়া শিক্ষার্থীদের পাঠাদানের উদ্যোগে অংশগ্রহণসহ খেলাধুলা, সাহিত্য-স্কৃতি, বিজ্ঞান গবেষণা এবং অনলাইন পাঠদান কার্যক্রমের সঙ্গে সামিট যুক্ত রয়েছে।
মুহাম্মদ আজিজ খান বলেন, “বছরের পর বছর, সামাজিক দায়িত্ব সামিট গ্রুপের একটি মূলনীতি হিসেবে রয়েছে। সিঙ্গাপুরের বসবাসরত প্রবাসী শ্রমিকদের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো বাংলাদেশীরা। এই বছর ইফতার আয়োজনের মাধ্যমে আমরা সেইসব সিঙ্গাপুরে প্রবাসী শ্রমিকদের সম্মান জানানোর চেষ্টা করেছি।”
তিনি আরও বলেন, “এখানকার দুটি স্কুলের কিশোর ছাত্র-ত্রীরা যেভাবে সিঙ্গাপুরের প্রবাসী শ্রমিকদের প্রতি তাদের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে, তা দেখে আমি অভিভূত।”
মুহাম্মদ আজিজ খান, বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত সিঙ্গাপুরের নাগরিক, করোনা মহামারির সময় সিঙ্গাপুরের ডরমিটরিতে আইসোলেশনে থাকা বাংলাদেশী শ্রমিকদের সহায়তা করার জন্য ২০২৩ সালের অক্টোবরে সিঙ্গাপুর সরকারের পক্ষ থেকে পাবলিক সার্ভিস মেডেল (কোভিড-১৯) সম্মানে ভূষিত হোন।
জিইএসএসের শিক্ষক প্যাট্রিসিয়া অ্যামোরিম এবং মেরিকি বিক বলেন, “আমাদের স্কুলের ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী ও বিগ হার্ট সার্ভিসেসের ছোট-বড় ভাই-বোনদের একত্রেএকটি অর্থপূর্ণ কার্ড তৈরির মাধ্যমে প্রবাসী শ্রমিকদের জন্য আন্তরিক বার্তা পৌঁছে দিতে পেরে আমরা খুবই উছ্বসিত। এই আয়োজনটি কেবল সৃজনশীলতাকে উৎসাহিত করেনি, বরং আমাদের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সত্যিকার মিথস্ক্রিয়া তৈরি করতে সাহায্য করেছে। কারণ শিক্ষার্থীরা এই আয়োজনের মাধ্যমে নিজেদের গল্প এবং ধারণা শেয়ার করেছে। কার্ডগুলো তৈরির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের দলবদ্ধভাবে কাজ করা ও সহানুভূতির সুন্দর একটি অভিজ্ঞতা তৈরি করেছে। একই সাথে আমাদের সমাজে যারা এত অবদান রাখে তাদের প্রতি সম্মান প্রদর্শনেরও একটি দারুণ উদাহরণ।”
বিগ হার্ট স্টুডেন্ট কেয়ারের প্রতিনিধি শাইনা বলেন, “আমরা, সিঙ্গাপুরের জার্মান ইউরোপিয়ান স্কুলের, সাথে এই উদ্যোগে অংশীদার হতে পেরে আনন্দিত। এই আয়োজনের লক্ষ্য ছিল প্রবাসী শ্রমিকদের সম্মান জানানো। গত শুক্রবার আমাদের শিক্ষার্থীরা প্রবাসী শ্রমিকদের জন্য শুভেচ্ছা কার্ড তৈরি করতে একত্রিত হয়েছিল। এই উপহারের মাধ্যমে সিঙ্গাপুরের উন্নয়ন ও প্রবৃদ্ধিতে প্রবাসী শ্রমিকদের গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য কৃতজ্ঞতা এবং প্রশংসা জানানো হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ এই আয়োজনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মধ্যেও গভীর কৃতজ্ঞতার অনুভূতি তৈরি হয়েছে। একই সাথে নতুন বন্ধুত্ব তৈরি এবং ভিন্ন অভিজ্ঞতার জন্য আজকের দিনটি তাদের জীবনের একটি স্মরণীয় স্মৃতি হয়ে থাকবে। এটি বহুসাংস্কৃতিক কর্মকান্ড ও অন্তর্ভুক্তিমূলক আচরণের একটি শক্তিশালী প্রতিফলন ছিল—যেই গুরুপূর্ণ মূল্যবোধ আমাদের একত্রিত করেছে এবং গত ৬০ বছরে সিঙ্গাপুরের সাফল্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।”