আজ: রবিবার, ৩০ মার্চ ২০২৫ইং, ১৬ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৯শে রমজান, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

২৬ মার্চ ২০২৫, বুধবার |

kidarkar

ব্রাজিলকে বিধ্বস্ত করে আর্জেন্টিনার গোলবন্যা

স্পোর্টস ডেস্ক :ম্যাচের আগে কিংবদন্তি রোমারিওকে ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গার রাফিনিয়া বলেছিলেন এই ম্যাচ ব্রাজিল অবশ্যই জিতে ফিরবে। রাফিনিয়া নিজেও গোল করবেন বলেই পণ করে এসেছিলেন। কিন্তু এস্তাদিও মনুমেন্টালে রাফিনিয়াকে মাঠে খুঁজে পাওয়াটাই ছিল একটা আলাদা মিশন। অবশ্য রাফিনিয়া একাই না, আর্জেন্টিনার দাপুটে ফুটবলের ভিড়ে ব্রাজিলের কাউকেই সেভাবে খুঁজে পাওয়া যায়নি পারফরম্যান্স বিবেচনায়।

ম্যাচের প্রথমার্ধেই অনেকটা গল্প লেখা হয়ে গিয়েছিল এই ম্যাচের জন্য। শুরুর ২০ মিনিটের মাঝেই ব্রাজিলের জালে আর্জেন্টিনার দুই গোল। ৪৫ মিনিট যখন পার হচ্ছে, তখন ব্রাজিল পিছিয়ে ৩-১ গোলে। আর দ্বিতীয়ার্ধে ব্রাজিলের ক্ষতটা আরেকটু বাড়িয়ে দেন বদলি নামা গুইলিয়ানো সিমিওনে।

ম্যাচে নামার আগেই আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিতের খবর পেয়েছিল। আর সেটাকে তারা উদযাপন করলো চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দলকে ৪-১ গোলে বিধ্বস্ত করে। আর্জেন্টিনার হয়ে স্কোরশিটে উঠেছে হুলিয়ান আলভারেজ, অ্যালেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টার, এনজো ফার্নান্দেজ এবং গুইলিয়ানো সিমিওনের। ব্রাজিলের হয়ে একমাত্র গোল ম্যাথিয়াস কুনহার।

এস্তাদিও মনুমেন্টালে আর্জেন্টিনার প্রথম দুই গোলই এসেছে পারফেক্ট টিম প্লের সুবাদে। ম্যাচের ৪ মিনিটেই ডি পলের পাস ধরে বামপ্রান্তে আক্রমণে যান নিকোলাস টালিয়াফিকো। তার দারুণ পাস খুঁজে নেয় থিয়েগো আলমাদাকে। ছন্দে থাকা এই অ্যাটাকিং মিডফিল্ডারের ডিফেন্সচেরা পাস থেকে গোল করেন আলভারেজ৷ দুই ডিফেন্ডারের মাঝে বল পেয়ে গোল করতে কোনো সমস্যাই হয়নি আলভারেজের।

খানিক বাদে ফের ব্রাজিলের রক্ষণে ফাটল ধরায় আর্জেন্টিনা। অ্যালেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টার একাই অনেকটা পথ পার করেন ব্রাজিলের অর্ধে। সেখান থেকে আলভারেজের পা ঘুরে বল যায় নাহুলের মলিনার কাছে। ডানপ্রান্তের ক্রস থেকে সহজ ফিনিশ করেন এনজো ফার্নান্দেজ। ১২ মিনিটের মধ্যেই ২ গোল পেয়ে যায় আর্জেন্টিনা।

ঘড়ির কাঁটায় ৩০ মিনিট পেরুবার আগেই অবশ্য এক গোল শোধ করে ব্রাজিল। ইংলিশ ক্লাব উলভসে দারুণ সময় কাটানো ফরোয়ার্ড ম্যাথিয়াস কুনহা নাম তোলেন স্কোরশিটে। ক্রিশ্চিয়ান রোমেরো বল পায়ে পজিশন হারান কুনহার প্রেসিংয়ের কাছে। সেখান থেকে ঠান্ডা মাথায় ফিনিশিং।

আর্জেন্টিনার ২ গোলের লিড ফিরে পেতে সময় লেগেছে মোটে ১১ মিনিট। এবারে স্কোরশিটে ম্যাক অ্যালিস্টারের নাম। কর্নার থেকে ফেরত আসা বলে মাপা এক চিপ করেন এনজো ফার্নান্দেজ। ৬ গজের ছোট বক্সের সামনে তাতে আলতো পা ছুঁয়ে ব্যবধান ৩-১ করেন ম্যাক অ্যালিস্টার।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই নিজেদের চতুর্থ গোল পেতে পারতো আর্জেন্টিনা। ৪৯ মিনিটে ব্রাজিলের রক্ষণের ভুলেই ভাসানো বল পেয়েছিলেন আলভারেজ। ডি-বক্সের লাইন থেকে চিপটাও করেছিলেন মাপা। কিন্তু এই দফায় ব্রাজিলের গোলরক্ষক বেন্তো ছিলেন দারুণ। খানিক পিছিয়ে বল ঠেকিয়ে দেন তিনি।

৬০ মিনিটে নিকোলাস টালিয়াফিকোর হেড গোলবারে বাতাস দিয়ে বেরিয়ে যায়। ৬৮ মিনিটে আর্জেন্টিনা একাদশে আসে পরিবর্তন। আলমাদার বদলে মাঠে নামেন গুইলিয়ানো সিমিওনে। মাঠে নেমে গোল করতে তার দরকার ছিল তিন মিনিট।

নিজেদের অর্ধ থেকে এনজো ফার্নান্দেজের তড়িৎগতির ফ্রি-কিক খুঁজে নেয় টালিয়াফিকোকে। সেখান থেকে বক্সে পাস ছিল ম্যাক অ্যালিস্টারের দিকে। আর্জেন্টাইন এই মিডফিল্ডার মিস করলেও বল যায় সিমিওনের দিকে। দূরহ কোণ থেকে তার নেয়া শট ঠেকাবার কোনো উপায় ছিল না বেন্তোর সামনে। স্কোরলাইন তখন ৪-১। ২০১২ সালে লিওনেল মেসির হ্যাটট্রিক করা সেই ম্যাচের পর এবারই প্রথম আলবিসেলেস্তেদের কাছে ৪ গোল হজম করল ব্রাজিল।

৭৭ মিনিটে গোলের কাছাকাছি গিয়েছিলেন রাফিনিয়া। তার ফ্রিকিক গোলবার স্পর্শ করে বেরিয়ে যায়। খানিক পরেই পারেদেসের দূরপাল্লার শট দক্ষতার সাথে ফিরিয়ে দেন বেন্তো। শেষ পর্যন্ত আর কোনো দলই বল জালে না জড়ালে ৪-১ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে আর্জেন্টিনা।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.