আজ: মঙ্গলবার, ০৮ এপ্রিল ২০২৫ইং, ২৫শে চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৯ই শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

০৪ এপ্রিল ২০২৫, শুক্রবার |

kidarkar

ট্রাম্পের পালটা শুল্কের ঘোষণায় বিশ্ব পুঁজিবাজারে ধস

শেয়ারবাজার ডেস্ক: ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের ঘোষণার পর বিশ্বজুড়ে একটি তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। এশিয়ার পুঁজিবাজারে বড়সড় ধস নেমেছে এবং প্রায় সব রকম বাজারেই এই ঘোষণা প্রভাব ফেলেছে। স্বর্ণের মূল্য রীতিমত লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র, চীন, তাইওয়ান, দক্ষিণ কোরিয়া, অস্ট্রেলিয়া ও ভিয়েতনামসহ বিভিন্ন দেশের বাজারে নগন্য হলেও ক্ষমতার সংকট দেখা দিয়েছে। ট্রাম্পের ঘোষণার আগের দিন এশিয়ার পুঁজিবাজারেগুলো ছিল চাঙ্গা।

তবে বৃহস্পতিবার বাজার খোলার সাথে সাথেই অস্ট্রেলিয়া, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার শেয়ার সূচক পতন শুরু করে। যদিও ডলারের বিপরীতে জাপানের ইয়েনের মূল্য বেড়েছে।

ট্রাম্পের ঘোষণার পর যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ার সূচক নাসডাক ফিউচার্স ৩.৩ শতাংশ পড়ে যায়, যার ফলে প্রযুক্তি খাতের সাতটি বড় কোম্পানির বাজার মূলধন প্রায় ৭৬০ বিলিয়ন ডলার কমে যায়। অ্যাপলের শেয়ারের দাম সবচেয়ে বেশি, ৭ শতাংশ পতিত হয়। এছাড়া এসঅ্যান্ডপি ৫০০ ফিউচার্স ২.৭ শতাংশ এবং ইউরোপিয়ান ফিউচার্স প্রায় ২ শতাংশ কমেছে।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী, টোকিওর নিক্কেই সূচক প্রাথমিকভাবে ৩.৯ শতাংশ পড়েছিল, কিন্তু পরে তা কিছুটা পুনরুদ্ধার করে এবং পতনের হার ২.৯ শতাংশে গিয়ে দাঁড়ায়। হংকং ও সাংহাই বাজারেও একই রকম পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

ট্রাম্পের শুল্ক ঘোষণার পর বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম বেড়ে যায় এবং বর্তমানে আউন্স প্রতি দাম ৩,১৬০ ডলারে পৌঁছেছে। তেলের দামেও একইভাবে প্রভাব পড়েছে, অপরিশোধিত ব্রেন্ট তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ৭২.৫৬ ডলারে উঠে গেছে।

বিশ্বব্যাপী শুল্ক আরোপের পর মার্কিন ডলারের দরপতন ঘটেছে এবং ইউরোর মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। নিরাপদ বিনিয়োগের জন্য বিনিয়োগকারীরা এবার ইয়েন ও সুইস ফ্রাঙ্কের দিকে ঝুঁকছেন।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানা যায়, ট্রাম্পের শুল্ক ঘোষণার পর বৃহস্পতিবার মার্কিন ডলার সূচক ১.৬ শতাংশ কমে ১০২.০৩ এ পৌঁছেছে, যা অক্টোবরের শুরুর পর থেকে সর্বনিম্ন।

অন্যদিকে ইউরো সূচক ১.৫ শতাংশ বেড়ে গেছে, যা গত ছয় মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। এছাড়া অস্ট্রেলিয়ান ডলার ০.৫৬ শতাংশ এবং নিউজিল্যান্ড ডলার ০.৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। জাপানের ইয়েন ১.৭ শতাংশ বেড়ে গেলেও সুইস ফ্রাঙ্ক ০.৮৬৫৫ হয়ে পাঁচ মাসের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী স্তরে অবস্থান করছে।

ক্যাপিটাল ডটকমের সিনিয়র বাজার বিশ্লেষক ড্যানিয়েলা সাবিন হ্যাথন উল্লেখ করেন, বর্তমান অর্থনৈতিক প্রভাব ১৯৩০-এর দশকের স্কুট-হাওলি শুল্কের চেয়েও ভয়াবহ হতে পারে। ১৯৩০ সালে স্কুট-হাওলি শুল্ক আইন প্রণয়নের ফলে যুক্তরাষ্ট্রের আমদানি কর বৃদ্ধি পেয়েছিল এবং বিশ্বব্যাপী প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছিল, যা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বিপর্যয় সৃষ্টি করে এবং মহামন্দাকে আরও খারাপ করে তুলেছিল।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.