আজ: বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫ইং, ৩রা বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১৭ই শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

০৯ এপ্রিল ২০২৫, বুধবার |

kidarkar

তিন দিন পর ইতিবাচক সূচক, লেনদেনও ছাড়াল ৫০০ কোটি

নিজস্ব প্রতিবেদক : দাম বাড়ার ক্ষেত্রে দাপট দেখিয়ে দেশের শেয়ারবাজারে আবার অধিকাংশ মিউচুয়াল ফান্ডের দরপতন হয়েছে। অধিকাংশ মিউচুয়াল ফান্ডের দাম কমার পাশাপাশি সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবস বুধবার (৯ এপ্রিল) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দামও কমেছে। এরপরও বেড়েছে প্রধান মূল্যসূচক। একই সঙ্গে লেনদেন বেড়ে আবার ৫০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের মতো অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে। ফলে এ বাজারটিতে সবকটি মূল্যসূচকের পতন হয়েছে। তবে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ।

এর আগের ঈদের পর প্রথম কর্যদিবস রোববার শেয়ারবাজারে ঢালাও দরপতন হলেও প্রায় সবকটি মিউচুয়াল ফান্ডের দাম বাড়ে। এতে বড় পতনের হাত থেকে রক্ষা পায় শেয়ারবাজার। তবে একদিন পরেই সোমবার অধিকাংশ মিউচুয়াল ফান্ডের দরপতন হয়। যার প্রভাবে সার্বিক শেয়ারবাজারেও পতনের পাল্লা ভারী হয়। অবশ্য পরের কার্যদিবস মঙ্গলবার আবার অধিকাংশ মিউচুয়াল ফান্ডের দাম বাড়ে।

এ পরিস্থিতিতে বুধবার প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনে শুরু হয় বেশিরভাগ মিউচুয়াল ফান্ডের দাম বাড়ার মাধ্যমে। একই সঙ্গে তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার দামও লেনদেনের শুরুতে বাড়ে। ফলে লেনদেনের শুরুতে সূচকের ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মেলে। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ায় এক পর্যায়ে ডিএসইর প্রধান সূচক ৩৫ পয়েন্ট বেড়ে যায়। লেনদেনের প্রথম আড়াই ঘণ্টা অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের দাম বাড়ার ধারা অব্যাহত থাকে।

কিন্তু সাড়ে ১২টার পর থেকে বাজার চিত্র বদলে যায়। দাম বাড়ার তালিকা থেকে একের পর মিউচুয়াল ফান্ড দাম কমার তালিকায় চলে আসে। যার প্রভাব পড়ে অন্য খাতেও। লেনদেনের শেষ পর্যন্ত এই ধারা অব্যাহত থাকে। ফলে দাম বাড়ার তুলনায় দাম কমার তালিকা বড় হয়েই দিনের লেনদেন শেষ হয়।

দিনের লেনদেন শেষে মাত্র ৪টি মিউচুয়াল ফান্ডের দাম বাড়ার তালিকায় স্থান হয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২৪টির। আর ৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। মিউচুয়াল ফান্ডের পাশাপাশি তালিকাভুক্ত ভালো, মন্দ ও মাঝারি মানের সব খাতের বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমেছে।

ভালো কোম্পানি বা ১০ শতাংশ অথবা তার বেশি লভ্যাংশ দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৮৯টির শেয়ার দাম বেড়েছে এবং ১০১টির দাম কমেছে। আর ২৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। মাঝারি মানের বা ১০ শতাংশের কম লভ্যাংশ দেয়া ৩০টি কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ার বিপরীতে ৪৩টির দাম কমেছে এবং ১০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

অপরদিকে বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ না দেওয়ার কারণে পঁচা ‘জেড’ গ্রুপে স্থান হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ২৫টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৪৯টির এবং ২১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এতে সব খাত মিলে ডিএসইতে ১৪৪টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লেখাতে পেরেছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৯৩টির। আর ৫৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

সার্বিকভাবে দাম কামার তালিকায় বেশি প্রতিষ্ঠান থাকার পরও ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ১০ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ১৯৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক আগের দিনের তুলনায় ২ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ১৬৯ পয়েন্টে উঠে এসেছে। তবে বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়েগঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ২ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৯২১ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

প্রধান মূল্যসূচক বাড়ার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৫২৭ কোটি ১৮ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৪৮৩ কোটি ৬১ লাখ টাকা। সে হিসাবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন বেড়েছে ৪৩ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। এর মাধ্যমে ২৬ ফেব্রুয়ারির পর বা ২৫ কার্যদিবসের মধ্যে ডিএসইতে সব থেকে বেশি লেনদেন হলো।

এ লেনদেনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে সানলাইফ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার। টাকার অঙ্কে কোম্পানিটির ২৭ কোটি ৮১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২০ কোটি ৪৬ লাখ টাকার। ১৬ কোটি ৮১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে বেক্সিমকো ফার্মা।

এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- বিচ হ্যাচারি, এসিআই লিমিটেড, শাইনপুকুর সিরামিক, ইস্টার্ন লুব্রিকেন্ট, অগ্নি সিস্টেম, নাভানা ফার্মা এবং ইফাত অটোস।

অন্য শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ৩ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২১৯ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৮৫টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১০৩টির এবং ৩১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৯ কোটি ৮২ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৬ কোটি ৫১ লাখ টাকা।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.