আজ: বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫ইং, ১১ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২৫শে শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

১৩ এপ্রিল ২০২৫, রবিবার |

kidarkar

নানা মত-ধর্ম-রীতিনীতির মধ্যেও এ দেশে সবাই এক পরিবার: প্রধান উপদেষ্টা

শেয়ারবাজার ডেস্ক : প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আমি বরাবরই বলে এসেছি, নানা মত-ধর্ম-রীতিনীতির মধ্যেও আমরা সবাই এক পরিবারের সদস্য। এ দেশের হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান, পাহাড় ও সমতলের বিভিন্ন সম্প্রদায় ও জনগোষ্ঠী—সবমিলিয়ে এ দেশের মানুষের বিচিত্র ভাষা-সংস্কৃতি-ঐতিহ্য। আগামীকাল পহেলা বৈশাখ, আমাদের এই সম্প্রীতির অন্যতম প্রতীক। প্রত্যেকে নিজ নিজ উপায়ে, নিজেদের রীতি অনুযায়ী আগামীকালকে উদ্‌যাপন করবেন। সার্বজনীন এ উৎসবে অংশ নেবেন। আজকে যেখানে আমি দাঁড়িয়ে আছি, এই আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহার বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অন্যতম নিদর্শন। প্রতিষ্ঠার পর থেকে এটি বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীসহ বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে।

রোববার (১৩ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টায় ঢাকার মেরুল বাড্ডায় আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহারে সম্প্রীতি ভবন-এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি। আনুষ্ঠানিক বক্তব্যের আগে তিনি তিনি ভবনটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এরপর তিনি সেখানে অবস্থিত প্রার্থনা হল পরিদর্শন করেন। এ সময় প্রধান উপদেষ্টা বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। বাংলাদেশ বুদ্ধিস্ট ফেডারেশন ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।

প্রধান উপদেষ্টা তাঁর বক্তব্যে বলেন, বাংলা নববর্ষের প্রাক্কালে আমরা আজ ঢাকা আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহারে ‘সম্প্রীতি ভবন’ এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করতে যাচ্ছি। এমন একটি সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ অনুষ্ঠানে আমাকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য বাংলাদেশ বুদ্ধিস্ট ফেডারেশন এবং আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহারের কর্মকর্তাদের প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ। একইসঙ্গে সবাইকে বাংলা নববর্ষের অগ্রিম শুভেচ্ছা। শুভ নববর্ষ।

অতি প্রাচীন সময় থেকেই এ অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিল এখানকার বৌদ্ধ বিহারগুলো। এগুলো আমাদের ঐতিহ্য ও সভ্যতার নিদর্শন। পৃথিবীর দূরদূরান্ত থেকে ভিক্ষু ও ছাত্ররা এ বিহারগুলোতে আসতেন। মহামানব বুদ্ধের শান্তি ও সম্প্রীতির বাণী বিশ্বে ছড়িয়ে দিতেন। শুধু ধর্মীয় আচার ও শিক্ষা নয়, সমাজে জনকল্যাণকর কর্মসূচিরও কেন্দ্র ছিল এ দেশের বৌদ্ধ বিহারগুলো।

তিনি আরও বলেন, মহামানব গৌতম বুদ্ধ বিশ্বমানবতার কল্যাণে সম্প্রীতি ও সাম্যের বাণী প্রচার করেন। বৌদ্ধধর্ম জীবজগতের সকল প্রাণীর মঙ্গল কামনা করে। মহামানব বুদ্ধ বলেছেন, শান্তি, সুখ থেকে আমরা কাউকে বঞ্চিত করতে পারি না; এমনকি ক্ষুদ্র জীবও।এ দেশের বৌদ্ধ পণ্ডিত অতীশ দীপঙ্কর বিশ্ববরেণ্য একজন মহাপণ্ডিত। মহামানব বুদ্ধের বাণী তিনি বহন করে নিয়েছিলেন সেই মহাচীনের তিব্বতে। চীনে এখনো তাঁকে সর্বোচ্চ মর্যাদায় শ্রদ্ধা জানানো হয়। বৌদ্ধ ধর্মের নিদর্শন, স্থাপনা, ঐতিহ্য ও পণ্ডিতগণ মানব সভ্যতার ইতিহাসে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

সম্প্রীতি ভবনের বিষয়ে তিনি বলেন, গৌতম বুদ্ধের অহিংসা ও সাম্যের বাণীর প্রতি শ্রদ্ধা রেখে বাংলাদেশের বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ধর্মীয়, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ এবং কারিগরি শিক্ষাসহ বিভিন্ন জনকল্যাণকর কর্মসূচি পালন করে আসছে এ বৌদ্ধ বিহার। আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহারের ‘সম্প্রীতি ভবন’ বাংলাদেশের সম্প্রীতি ও মানবতার ঐতিহ্যকে ধারণ করে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে গৌরবময় ভূমিকা রাখবে এই আমার প্রত্যাশা।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.