ব্যবসায়ীদের প্রস্তাব মেনে তেলের দাম বাড়ালো সরকার

শেয়ারবাজার ডেস্ক : ভোজ্যতেলের বাজারে নতুন করে মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত কার্যকর হলো আজ থেকে। ব্যবসায়ীদের প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বোতলজাত সয়াবিন ও পাম তেলের দাম বাড়ানোর অনুমোদন দিয়েছে। এর ফলে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ১৪ টাকা এবং পাম তেলের দাম ১২ টাকা বেড়েছে।
নতুন দাম অনুযায়ী, এখন থেকে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের খুচরা মূল্য হবে ১৮৯ টাকা, যা পূর্বে ছিল ১৭৫ টাকা। পাঁচ লিটারের বোতলের দাম ৭০ টাকা বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে ৯২২ টাকা। একইভাবে, খোলা সয়াবিন ও পাম তেলের দাম লিটারে ১২ টাকা বেড়ে এখন ১৬৯ টাকা হয়েছে, যা আগে ছিল ১৫৭ টাকা।
মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাব আসে বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন থেকে। ১৩ এপ্রিল তারা এক বিজ্ঞপ্তিতে দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেয় এবং জানায়, ওইদিন থেকেই নতুন দাম কার্যকর হবে। পরদিন বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এ প্রস্তাব অনুমোদন করে।
চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের আগে ৬ ও ৮ এপ্রিল ব্যবসায়ীদের সঙ্গে পৃথক দুটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, তবে সেসময় কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। এরপর ১৪ এপ্রিল বাণিজ্য সচিবের কক্ষে ভোজ্যতেল উৎপাদক প্রতিষ্ঠান—টিকে, মেঘনা ও সিটি গ্রুপের প্রতিনিধি, ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান ও কারখানা মালিক সমিতির সভাপতিকে নিয়ে তৃতীয় দফা বৈঠক হয়। সেখানে ব্যবসায়ীদের প্রস্তাবিত দাম কিছুটা হ্রাস করে তা অনুমোদন দেয় মন্ত্রণালয়।
বৈঠক শেষে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, “চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে কেউ একতরফাভাবে দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিতে পারে না। এটা বেআইনি। এখন সরকার নতুন দাম অনুমোদন করেছে, যা আজ থেকে কার্যকর।”
এর আগে গত ২৭ মার্চ মিল মালিকরা বোতলজাত সয়াবিনের দাম ১৮ টাকা এবং খোলা তেলের দাম ১৩ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব দেন। ওই প্রস্তাব ১ এপ্রিল থেকে কার্যকর করতে চাইলেও সরকারের অনুমোদন না থাকায় তা আইনসিদ্ধ ছিল না। এবার অনুমোদিত দামের হার আগের প্রস্তাব থেকে কিছুটা কম।
মূল্যবৃদ্ধির কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীরা আমদানি পর্যায়ে শুল্ক ছাড়ের সময়সীমা শেষ হওয়া এবং আন্তর্জাতিক বাজারে দামের ঊর্ধ্বগতিকে দায়ী করছেন। উল্লেখ্য, গত রমজানের আগে সরকার ভোজ্যতেল আমদানিতে শুল্ক ও কর ছাড় দিয়েছিল, যার মেয়াদ শেষ হয়েছে ৩১ মার্চ। এরপর বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন এনবিআর-কে ৩০ জুন পর্যন্ত সেই ছাড় বাড়ানোর সুপারিশ করলেও, এখনো সাড়া মেলেনি।
প্রসঙ্গত, সর্বশেষ গত ৯ ডিসেম্বর সয়াবিন তেলের দাম বাড়িয়ে ১৭৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। চার মাসের ব্যবধানে আবারও দাম বাড়ানো হলো।